তুহিনুর রহমান, স্টাফ রিপোর্টার, হবিগঞ্জ :
হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার জনতার বাজারে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে অবৈধ পশুর হাট পরিচালনার অভিযোগ উঠেছে। সরকারি অনুমোদন ছাড়াই প্রতি শনিবার এ হাট বসিয়ে বাজার পরিচালনা কমিটি রশিদ ব্যবহারের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে শনিবার (২২ মার্চ) বিকেলে চার সাংবাদিক দুর্বৃত্তদের হামলার শিকার হন।
হামলার শিকার সাংবাদিকরা হলেন—দৈনিক কালবেলা ও গাজী টিভির হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি নূর উদ্দিন, এশিয়ান টেলিভিশনের হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি সুরুজ আলী, মাই টিভির হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি নিরঞ্জন গোস্বামী শুভ এবং দীপ্ত টেলিভিশনের হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি আখলাছ আহমদ প্রিয়। হামলাকারীরা তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে মারধর করে এবং ক্যামেরা ও ট্রাইপড ভাঙচুর করে। স্থানীয়দের অভিযোগ, গজনাইপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি ও জনতার বাজার পরিচালনা কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কাউসার আহমেদের নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয়েছে।
অবৈধভাবে পশুর হাট পরিচালনা বন্ধে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড. মো. ফরিদুর রহমান চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি এক বিজ্ঞপ্তিতে জনতার বাজার পশুর হাট অপসারণের নির্দেশ দেন। বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট উল্লেখ ছিল, সরকারি অনুমতি ছাড়া কেউ হাট পরিচালনা করলে বা সহযোগিতা করলে তা হাট-বাজার আইন ২০২৩ ও মহাসড়ক আইন ২০২১ অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ বলে গণ্য হবে। তবে প্রশাসনের নির্দেশনা উপেক্ষা করেই চলতি ফেব্রুয়ারি থেকে প্রতি শনিবার এ হাট বসানো হচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মচারীর সহযোগিতায় রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এ হাট পরিচালনা করছেন, যার ফলে সরকার রাজস্ব হারালেও কিছু স্বার্থান্বেষী মহল লাভবান হচ্ছে।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে হাট বসানোর কারণে প্রতিবারই ভয়াবহ যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। এতে সাধারণ পথচারী ও যানবাহনের চালকরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। দীর্ঘ সময় যান চলাচল ব্যাহত হওয়ায় ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দারাও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
জেলা প্রশাসকের নির্দেশনার পরও উপজেলা প্রশাসন কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে তার অফিস সহকারীরা সঠিক তথ্য দিচ্ছেন না, ফলে তিনি কোনো কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারছেন না। এ অবস্থায় স্থানীয়রা দ্রুত প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ দাবি করেছেন। তাদের আশঙ্কা, যদি এখনই কঠোর ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে হামলা, অনিয়ম ও দুর্নীতি আরও বাড়তে পারে।
