
লুৎফর রহমান লিটন, সিরাজগঞ্জ :
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অধীনে নির্মাণাধীন একটি ব্রিজের কাজ মাঝপথে বন্ধ রেখে ঠিকাদার উধাও হয়ে গেছেন। এতে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুম শুরু হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
তথ্য বোর্ড অনুসারে, ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে কাটাগাড়ি জিসি রাস্তায় ৩৩২ মিটার চেইনেজ ও ২০ মিটার দীর্ঘ আরসিসি গার্ডার ব্রিজের নির্মাণ কাজ শুরু হয়, যা ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এতদিনেও শুধুমাত্র স্পাইলিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কাটাগাড়ি সড়ক দিয়ে প্রতিদিন অসংখ্য হালকা ও ভারী যানবাহন চলাচল করে। কিন্তু ব্রিজের সংযোগ সড়ক সরু ও অসমান হওয়ায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে। ইতোমধ্যে সেখানে একাধিক গাড়ি উল্টে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ড্রাইব্রেশন রাস্তার দুই পাশ বেশ উঁচু ও মাঝখানে নিচু হওয়ায় যাতায়াত অত্যন্ত কষ্টকর হয়ে উঠেছে। অটোভ্যানের ব্রেক ঠিকমতো ধরে না, উঁচুতে ওঠার সময় যাত্রীদের নামিয়ে খালি গাড়ি টেনে তুলতে হয়।
উত্তর ওয়াপদা বাঁধের কৃষক বেল্লাল খান বলেন, ব্রিজটির নির্মাণকাজ বন্ধ থাকায় পানি প্রবাহের পথ আটকে গেছে। এর উজানে বিস্তীর্ণ আবাদি জমি রয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাত হলে জমিগুলো পানিতে তলিয়ে যাবে, যার ফলে ফসলের মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
তাড়াশ মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. জাফর ইকবাল জানান, ব্রিজের সংযোগ সড়ক দিয়ে বহু শিক্ষার্থী প্রতিদিন যাতায়াত করে। এর আশপাশে একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যার মধ্যে কলেজ, উচ্চ বিদ্যালয়, বালিকা বিদ্যালয়, মহিলা মাদ্রাসা ও হাফেজিয়া মাদ্রাসা উল্লেখযোগ্য। আগামী ৬ এপ্রিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে আরও দুর্ভোগ পোহাতে হবে।
জানা গেছে, নওগাঁর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ইথেন এন্টারপ্রাইজ প্রাইভেট লিমিটেড এন্ড ডন এন্টারপ্রাইজ (জেভি) ব্রিজ নির্মাণের কাজ পেয়েছিল। পরে বাগাতিপাড়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. অহিদুল ইসলাম গকুল কাজটি কিনে নেন এবং সর্বশেষ থার্ড পার্টি হিসেবে মো. ওয়াহিদুল ইসলাম কাজ শুরু করেন। ঠিকাদার মো. ওয়াহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, বিল পেতে দেরি হওয়ার কারণে কাজ শেষ করতে পারছেন না।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মো. ফজলুল হক বলেন, ঠিকাদারকে দ্রুত কাজ সম্পন্ন করার জন্য পর পর দুইটি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত নির্মাণ কাজ শুরু হয়নি, যা স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। এলাকাবাসী দ্রুত ব্রিজের নির্মাণ কাজ শেষ করার দাবি জানিয়েছে, যাতে তাদের দুর্ভোগ লাঘব হয় এবং নিরাপদে চলাচল করা সম্ভব হয়।