নিজস্ব প্রতিবেদক:
অনুসন্ধানী প্রতিবেদন – পর্ব ২
প্রথম পর্বে আমরা তুলে ধরেছিলাম ফোর পি (4P) নামের ভুয়া কোম্পানির প্রতারণার প্রাথমিক চিত্র। কিন্তু যত গভীরে অনুসন্ধান করা হয়েছে, ততই চমকে উঠেছি তাদের ভয়াবহ অনিয়ম ও দুর্নীতি দেখে।
এই ভুয়া কোম্পানির মূলহোতা চন্দন কুমার পাল, যিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এক গ্রাম্য বাউল ছিলেন। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে গান গাওয়া থেকে শুরু করে ধাপে ধাপে তিনি ঢাকায় আসেন ও ধানমন্ডিতে একটি ফার্মেসি ব্যবসা চালু করেন। সেখান থেকেই গড়ে তোলেন ভুয়া রিপোর্টিং কোম্পানি "ফোর পি (4P)"।
এই কোম্পানির নামে দেশে-বিদেশে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে, আর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণ মানুষ। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে প্রশাসনের নজর এড়িয়ে প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে এই কোম্পানি।
অবৈধ সম্পদের পাহাড়
প্রতারণার মাধ্যমে অর্জিত অবৈধ অর্থ দিয়ে চন্দন কুমার পাল ঢাকায় বিলাসবহুল বাড়ি, আলিশান ফ্ল্যাট ও কোটি টাকার গাড়ি কিনেছেন। এছাড়াও তার নামে-বেনামে বিপুল সম্পত্তির তথ্য পাওয়া গেছে, যার মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কয়েক একর জমি রয়েছে।
চাকরি প্রত্যাশীদের ফাঁদ
ফোর পি (4P) কোম্পানিতে কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয় না, নেই নির্দিষ্ট বেতন, টিএ-ডিএ সুবিধা। তবুও কিভাবে এখানে চাকরি হয়? অনুসন্ধানে জানা যায়, এক প্রতারক চক্র চাকরি প্রত্যাশী বেকার যুবকদের কাছ থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) সংগ্রহ করে।
এই চক্রের নেতৃত্বে রয়েছে মোহাম্মদ ইউসুফ, যিনি দেশজুড়ে চাকরি প্রত্যাশীদের কাছ থেকে NID সংগ্রহ করেন। তদন্তে উঠে এসেছে, এসব জাতীয় পরিচয়পত্র শুধু সংরক্ষণই করা হয় না, বরং বিভিন্ন উপায়ে পাচার করা হয়, এমনকি দেশের বাইরেও!
এই অবৈধ কর্মকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী চন্দন কুমার পাল। তার সহযোগী হিসেবে কাজ করে কোম্পানির হিসাবরক্ষক অভিজিৎ ও একজন নারী কর্মকর্তা, যিনি মাঠকর্মীদের ব্যবহৃত অ্যাপ নিয়ন্ত্রণ করেন।
পরবর্তী পর্বে:
পরবর্তী প্রতিবেদনে আমরা জানাবো, কীভাবে এই ভুয়া কোম্পানির মাধ্যমে বাংলাদেশের নাগরিকদের তথ্য পাচার করা হচ্ছে এবং এর পেছনের চক্রান্তকারীদের নাম প্রকাশ করবো।
(চলবে...)