লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় ভূমিদস্যু আহমেদুল হক বসুনিয়া মামিদুল ওরফে লিটনের নেতৃত্বে স্কুল শিক্ষার্থীর ওপর সন্ত্রাসী হামলা ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের নবীনগর ৫নং ওয়ার্ডে দীর্ঘদিনের ভোগদখলীয় জমি রক্ষার চেষ্টায় স্কুল শিক্ষার্থীসহ তিনজন আহত হন। আহতদের মধ্যে নিশি আক্তার নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি ও স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। এ ঘটনায় ভূক্তভোগীর পরিবার পাটগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পাটগ্রামের জংগ্রাম মৌজায় ১৩.৬৭ শতক জমির মধ্যে ২.৬৭ শতক দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখল করে আসছিলেন নবীনগর ৫নং ওয়ার্ডের আলিম আল জাকির বসুনিয়া। সম্প্রতি ওই জমির ওপর দৃষ্টি পড়ে একই ইউনিয়নের জমগ্রাম ১নং ওয়ার্ডের ভূমিদস্যু আহমেদুল হক বসুনিয়া ও তার সহযোগীদের। তারা জমিটি দখল করতে নানা রকম ভয়ভীতি ও অত্যাচার চালিয়ে আসছিল।
সোমবার বিকেলে আলিম আল জাকির বসুনিয়া তার জমিতে হালচাষ করতে গেলে আহমেদুল হক বসুনিয়া লিটন হাতে লাঠি, লোহার রড ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে তার দলবলসহ সেখানে হাজির হয়। তারা হালচাষে বাধা দিলে আলিম আল জাকির বসুনিয়া এর কারণ জানতে চাইলে বিবাদী আব্দুল গফ্ফার হোসেনের নির্দেশে মাসুদ নামে এক ব্যক্তি লোহার রড দিয়ে বর্গাদার আহম্মেদ হোসেনের মাথায় আঘাত করে গুরুতর জখম করে। একইভাবে একরামুল হক নামে এক ব্যক্তি লোহার রড দিয়ে নিশি আক্তারের মাথায় আঘাত করে তাকে মারাত্মক আহত করে।
হামলার একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা নিশি আক্তারের জামাকাপড় টেনে হিঁচড়ে শ্লীলতাহানি ঘটায়। এছাড়া তারা মোজাম্মেল হক বসুনিয়ার কাছ থেকে দুটি মোবাইল ফোন (মূল্য প্রায় ২৭ হাজার টাকা) ও মাসুদ বসুনিয়ার পকেট থেকে ব্যবসার নগদ ৪০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়।
পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। তবে নিশি আক্তার ও আহম্মেদ হোসেনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।
অভিযুক্ত আহমেদুল হক বসুনিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয়দের দাবি, তিনি আলিম আল জাকির বসুনিয়াকে ফাঁসানোর জন্য নিজের বাড়িতে নিজেই আগুন দিয়েছেন।
এ বিষয়ে পাটগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ আশরাফুজ্জামান সরকার জানান, বাউরা এলাকায় জমি-সংক্রান্ত বিষয়ে একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।