কুড়িগ্রামের রৌমারীতে পুলিশের হাত থেকে হাতকড়া পরা অবস্থায় পালিয়ে গেছে এক ধর্ষণ মামলার আসামি। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টার দিকে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের ধনারচর চরের গ্রাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশের অভিযান চালিয়ে হাতকড়া উদ্ধার করা হলেও এখনো গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি আসামিকে।
পালিয়ে যাওয়া আসামির নাম শাহনেওয়াজ আবির রাজু (৩০)। সে যাদুরচর ইউনিয়নের কাশিয়াবাড়ি গ্রামের আলী আজগরের ছেলে। তার বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধী এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও মাদক ব্যবসা এবং দেশীয় অস্ত্র প্রদর্শন করে স্থানীয়দের ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি প্রতিবন্ধী ওই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে রাজুর বিরুদ্ধে। ঘটনার পর গ্রামবাসীর তোপের মুখে সে তার পরিবারসহ নিজ গ্রাম ছেড়ে যাদুরচরের ধনারচর এলাকায় তার খালা, সাবেক মহিলা ইউপি সদস্য শিরিনা আক্তারের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশের কাছে অভিযোগ দেওয়া হলে সোমবার রাতে এসআই আউয়াল হোসেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল ওই বাড়িতে অভিযান চালায়। পুলিশের অভিযানে রাজুকে আটক করা হয় এবং তার কাছ থেকে কয়েক পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এরপর তাকে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় রাজু, তার মা আবেদা আক্তার রাজিয়া (৪৮) ও খালাতো বোন রুনা আক্তার (২৩) পুলিশের ওপর হামলা চালায়।
হামলার সময় এসআই আউয়ালের হাতে কামড় দেয় এবং তার অণ্ডকোষে আঘাত করা হয়। এই সুযোগে হাতকড়া পরা অবস্থায় পালিয়ে যায় রাজু। পরে খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত এসআই আউয়ালকে উদ্ধার করে এবং হামলার অভিযোগে রাজুর মা ও খালাতো বোনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। অভিযানের সময় ওই বাড়ি থেকে মাদক ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
রৌমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মোঃ নবিউল ইসলাম জানান, আহত পুলিশ সদস্য বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং তার অবস্থা গুরুতর নয়।
রৌমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) লুৎফর রহমান জানান, পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে ধর্ষণ মামলার আসামি হাতকড়া পরা অবস্থায় পালিয়ে গেছে। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে হাতকড়া উদ্ধার করলেও এখনো আসামিকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে তাকে ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে এবং স্থানীয়রা দ্রুত আসামিকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন।