
স্টাফ রিপোর্টার:
এমপিওভুক্ত বেসরকারি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও টেকনিক্যাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা আবারও জাতীয়করণের দাবিতে রাজপথে নেমেছেন। তাদের চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে চলছে “টোটাল শাটডাউন” এবং “মার্চ টু যমুনা” কর্মসূচি।
শিক্ষকরা বলছেন, শিক্ষা যদি পাঁচটি মৌলিক অধিকারের একটি হয়, তাহলে শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি পূরণ করাও সরকারের দায়িত্ব। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে, বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় শিক্ষকরা উপেক্ষিত। শিক্ষকদের জীবনযাত্রার মান এতটাই নিম্ন যে, তারা পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন।
একজন কলেজ শিক্ষকের বেতন মাত্র ২২,০০০ টাকা, আর মাধ্যমিক শিক্ষকের বেতন ১২,৫০০ টাকা। বাড়ি ভাড়া ১,০০০ টাকা এবং চিকিৎসা ভাতা মাত্র ৫০০ টাকা, যা দীর্ঘদিন ধরে অপরিবর্তিত। উৎসব ভাতা মূল বেতনের মাত্র ২৫%, যা সর্বোচ্চ ৩,০০০ থেকে ৫,০০০ টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ। এই সীমিত আয় দিয়ে একজন শিক্ষক তার পরিবারের ন্যূনতম চাহিদাও মেটাতে পারছেন না। ফলে অনেক শিক্ষকই টিউশনি বা অন্য কোনো উপার্জনের পথ খুঁজতে বাধ্য হচ্ছেন।
শিক্ষকদের অভিযোগ, তাদের ন্যায্য দাবিগুলো বহু বছর ধরে উপেক্ষিত হয়ে আসছে। ২০০১ সালে বিএনপি সরকারের সময় ২৫% উৎসব ভাতা চালু করা হলেও, তা ধাপে ধাপে ১০০% করার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হয়নি। অতীতেও বাড়ি ভাড়া, মেডিকেল ভাতা ও উৎসব ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন হয়েছে, কিন্তু শিক্ষকদের দাবি দমন করা হয়েছে লাঠিপেটা ও মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে।
শিক্ষক নেতারা বলছেন, শিক্ষা যদি জাতির মেরুদণ্ড হয়, তাহলে সেই মেরুদণ্ড শক্তিশালী করতে হবে। শিক্ষকদের বেতন-ভাতা না বাড়ালে এই পেশায় মেধাবীরা আসতে চাইবেন না। এতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আরও বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
শিক্ষকদের দাবি, অবিলম্বে শতভাগ উৎসব ভাতা বাস্তবায়ন, বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা বৃদ্ধি এবং শিক্ষাব্যবস্থার জাতীয়করণ নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় তারা রাজপথ ছাড়বেন না।
প্রভাষক আব্দুল্লাহ আল মামুন
সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক
বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি, যশোর জেলা শাখা