স্বীকৃতি বিশ্বাস, যশোরঃ
তেভাগা আন্দোলনের মহান নেতা, মুক্তিযুদ্ধের বিপ্লবী সংগঠক, উপমহাদেশের কমিউনিস্ট আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ এবং আজীবন বিপ্লবী কমরেড অমল সেনের ২২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত তিনদিনব্যাপী স্মরণ মেলার শেষ দিনটি ছিল বিশেষ আলোচনায় মুখর।
১৮ জানুয়ারি বিকেল ৪টায় সরলা সিং মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় "মুক্তিযুদ্ধে বামপন্থীদের ভূমিকা" শীর্ষক এক আলোচনা সভা। সভাপতিত্ব করেন অমল সেন স্মৃতিরক্ষা কমিটির সভাপতি কমরেড ইকবাল কবির জাহিদ। আলোচনায় অংশ নেন:
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)-এর সাধারণ সম্পাদক কমরেড বজলুর রশিদ ফিরোজ
বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা কমরেড অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার
বিশিষ্ট লেখক ও রাজনীতিবিদ বাবু রণজিৎ চট্টোপাধ্যায়
বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ যশোর জেলা কমিটির সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় নেতা কমরেড তসলিম উর রহমান
সহযোগী অধ্যাপক বাবু রমেশ চন্দ্র অধিকারী
অমল সেন স্মৃতিরক্ষা কমিটির সদস্য সচিব বিপুল বিশ্বাস প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধে বামপন্থীদের অবদান ছিল অতুলনীয়। বিশেষ করে কমরেড অমল সেন তার জীবনের সাহসিকতা এবং নেতৃত্বের মাধ্যমে প্রকৃষ্ট উদাহরণ হয়ে রয়েছেন। ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ পূর্ব পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টি (এমএল)-এর কমরেডরা যশোর কারাগার ভেঙে কমরেড অমল সেনসহ অন্যান্য বিপ্লবী নেতাদের মুক্ত করেন।
বৃহত্তর যশোর অঞ্চলে পাকিস্তানি বাহিনী ও রাজাকারদের বিরুদ্ধে তারা যে বীরত্বপূর্ণ প্রতিরোধ গড়ে তোলেন, তা আজও অনুপ্রেরণার স্মারক। কিন্তু এসব অবদানকে উপেক্ষা করে, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে এককভাবে দখল করার চেষ্টা চলছে। বক্তারা অভিযোগ করেন, "আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে নিজেদের জন্য একক করতে চেয়েছে, যেমন এখন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনকে হাইজ্যাক করতে চাচ্ছে একটি মহল।
আলোচনায় বক্তারা দাবি করেন, মুক্তিযুদ্ধে বামপন্থীদের এই ভূমিকার যথাযথ স্বীকৃতি দিতে হবে এবং ইতিহাস বিকৃতির চেষ্টা রোধ করতে হবে। অমল সেনের আদর্শে প্রেরণা নিয়ে শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠায় নতুন প্রজন্মকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়।