Tuesday, October 14, 2025

সতীঘাটায় শীতের আগমনে গাছিরা খেজুর গাছ কাটায় ব্যস্ত

Date:

Share post:

মোঃ ওয়াজেদ আলী,স্টাফ রিপোর্টারঃ

যশোরের সতীঘাটা কামালপুর গ্রামের খেজুর গাছ কাটতে গাছিরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। ১২ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে খেজুর গাছ কাটার এই দৃশ্য দেখা মেলে।

এই বিষয় গাছি আনার হোসেন বলেন, আমাদের দেশে বছরের একটি মৌসুমে অর্থাৎ শীতকালে খেজুর গাছ কাটতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে গাছিরা।কারণ,এসময় খেজুর কাছ ছাটাই করে বা পরিষ্কার করে ভাড় টাঙিয়ে খেজুরের রস সংগ্রহ করে। রস থেকে আবার রসের পিঠা, রসের ক্ষীর, খেজুরের গুড় ও পাটালি বানানো হয়। এটি গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খাবার।

খেজুর গাছ সাধারণত ১০ থেকে ৩০ ফুট লম্বা হয়। মাথায় ঝাঁকড়া বা চারদিকে ছড়ানো চুলের মতো পাতা ও সারা শরীরে ক্ষতচিহ্ন নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে খেজুর গাছ।

প্রথমে খেজুর গাছের পাতা পরিষ্কার করতে হয়, অনেকটা বাবড়ি চুল ছাঁটার মতো। এরপর গাছের গায়ে লম্বা হয়ে যাওয়া কাঁটাগুলো পরিষ্কার করা। তারপর ‘চাঁচ দেওয়া’। খিল লাগানো এবং ভাড় টাঙ্গানো পর্যন্ত গাছিকে তদারকি করতে হয়।

বছরে একবার খেজুর গাছকে ক্ষতচিহ্ন পরিষ্কার করে দেওয়া হয়।তাও আবার রস সংগ্রহের জন্যে। এ সকল কাজ করে গাছিরা। আর তার জন্যে লাগে ধারালো দা যন্ত্র ও দড়ি রাখার টোং।

বেশিরভাগ গ্রামে রাস্তার দু’ধারে ও জমির আইলে খেজুর গাছ বেশি উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। আবার শতক থেকে বিঘা বিঘা জমিতে লাগান খেজুর গাছ।তবে সবচেয়ে বেশি খেজুর গাছ রয়েছে যশোর জেলাতে।

সারা বাংলাদেশে খেজুরের রসের জন্যে বিখ্যাত এই জেলাটি। বলা হয়, যশোরের যশ, খেজুরের রস। শীতের রিক্ততা বাড়ছে অর্থাৎ শীতকাল শুরু হয়েছে।এখনি সময় হয়েছে গাছিদের গাছ থেকে খেজুরের রস সংগ্রহ করার।

একটি খেজুর গাছে রস আনতে একজন গাছিকে কমপক্ষে চারবার গাছে উঠতে হয়। ভোর সকালে, ফজরের আযান দেওয়ার আগেই গাছিরা চলে আসে রসের ভাড় পাড়তে। কনকনি শীতে রস ভাড় থেকে রস আনার পরে তারা মনে একটা প্রশান্তি খুজে পায়। বাড়িতে আনার সাথে সাথেই এলাকার মানুষের কাছেই রস বিক্রি হয়ে যায়। গাছিরা নিজের পরিবারে খাওয়ার জন্যে ও গুড় করার জন্যেও রেখে দেয় রস। আবার রস সংগ্রহের একদিন আগেই অনেকে অর্ডার দিয়ে রাখে।

গ্রামাঞ্চলে শীত আসে এক ভিন্ন আমেজে।ভোর রাতে উঠে অনেকে কৃষি কাজে যাওয়ার জন্যে আবার কেউবা রস সংগ্রহের কাজে। মা-বোন-চাচিরা ওঠে ঘর গোছানোর কাজে।প্রায় শীতের রাতে ও সকালে একটি মহল্লার সবাই একসাথে বসে আগুন করে তাপ নিতে থাকে। খেজুর গাছের রস থেকে গুড় বানানোর সময় শিশু থেকে শুরু করে বালক-বালিকারা গুড় খাবার জন্য হুড়োহুড়ি সৃষ্টি করে। যেন এক অপরূপ গ্রামের দৃশ্য যা এখন শুধুই স্মৃতি। উনুনের পাশে বসে রস খাওয়া, গুড় বানানে দেখা এটা যশোরের এক ঐতিহ্য।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

সম্পর্কিত নিবন্ধ

রৌমারীতে স্কুল পড়–য়া দু’ছাত্রকে মি”থ্যা চু”রি মা/ম/লা দিয়ে ফাঁ/সা/নোর প্র/তিবাদে মানব”বন্ধন ও বি”ক্ষোভ মি’ছিল

লিটন সরকার রৌমারী (কুড়িগ্রাম): কুড়িগ্রামের রৌমারীতে স্কুল পড়–য়া দু’ছাত্রকে চুরি মামলা দিয়ে ফাঁসানোর প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল পালন...

গোদাগাড়ী বাসীর অঙ্গিকার পানির ন্যায্য অধিকার হযরত আলী

মোঃ মাসুদ আলম, ব্যুরো চীফ রাজশাহী: পানি নিয়ে বৈষম্য গোদাগাড়ীর মাটিতে মেনে নেওয়া হবে না। গোদাগাড়ী স্বার্থ সংরক্ষণ পরিষদের...

বগুড়ার নিশিন্দারা ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে ৩টি ওয়ার্ডের সেন্টার কমিটি গঠন

রিপন বগুড়া প্রতিনিধির ঃ আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে বগুড়া সদরের নিশিন্দারা ইউনিয়ন বিএনপির ১,২,৩ নং ওয়ার্ড সেন্টার...

মোংলায়  এক যুবককে কাঠের লা”ঠি দিয়ে পি”টিয়ে জ”খ’ম হ*ত্যা

আশিক বিশ্বাস মোংলা প্রতিনিধি: সোমবার ভোরে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলে মোংলা ইপিজেড গার্মেন্টসে যাচ্ছিলেন মহিদুল শেখ। সকাল সোয়া ৭টার...