Sunday, July 27, 2025

কেশবপুর উপজেলা কালো মুখো হনুমানের গ্রাম নামে পরিচিত

Date:

Share post:

ইমরান হোসেন,কেশবপুর(যশোর)প্রতিনিধি:

যশোরের কেশবপুর উপজেলায় প্রায় চার’শ কালোমুখো বিরল প্রজাতির হনুমানের বসবাস রয়েছে। ধারণা করা হয় কয়েক’শ বছর ধরে কেশবপুরের ১০-১৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে চলছে বিরল প্রজাতির হনুমানগুলোর বিচরণ,

মুলত এ কারণেই কেশবপুর উপজেলা হনুমানের গ্রাম বলেই পরিচিত।

বিরল প্রজাতির কালোমুখো হনুমানের জন্ম প্রায় চার’শ বছর আগে। বছরের পর বছর নানা ঘাত- প্রতিঘাত সহ্য করে অল্পসংখ্যক হনুমান পৃথিবীতে টিকে আছে। বর্তমানে কেবল বাংলাদেশের কেশবপুর ও ভারতের নদীয়া জেলায় কালোমুখ হনুমানের বসবাস করতে ও এদের আচরণ এবং বুদ্ধিমত্তায় উন্নত এই প্রজাতিটি দেখতে পাওয়া যায়।

মানুষের মত কথা বলতে না পারলেও এ কালো মুখো হনুমানদের অনুভূতি শক্তি প্রায় মানুষের কাছাকাছিই। তাই কেশবপুরের মানুষের সঙ্গে রয়েছে এদের গভীর সখ্যভাব।

বর্তমান সময়ে কিছু সংখ্যক কালো হনুমান কেশবপুর উপজেলা পরিষদ, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বিভিন্ন এলাকায় দেখতে পাওয়া যায়।

এরা মানুষের কাছ থেকে বাদাম, কলা, রুটি ইত্যাদি নিয়ে খায়। মানুষকে বিভিন্নভাবে বিনোদনও দেয়। আবার কখনো কখনো মানুষের দ্বারা উত্যক্ত হয়ে হিংস্র হয়ে ওঠে।

উল্লেখ্য গত ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ সালে নির্যাতনের শিকার হয় একটি শিশু হনুমান যার বিচারের দাবিতে একদল কালোমুখো হনুমান কেশবপুর থানার ভিতর প্রবেশের গেটে অবস্থান করে। এমন আশ্চর্য ঘটনার কথা শুনে অফিসার ইনচার্জ মোঃ জসিমউদ্দিন বিষয়টি দেখতে আসে, তখন একটি মা হনুমান আহত শিশু হনুমানকে কোলে নিয়ে জানান তাদের নির্যাতনের কথা।

পরবর্তীতে অফিসার ইনচার্জ বিচার ও খাবারের ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দিলে থানা থেকে বের হয়ে যায়।

প্রায় দুই যুগ আগেও পাঁচ হাজারের বেশি হনুমান দাপিয়ে বেড়াতো কেশবপুর জুড়ে। কিন্তু এখন মাত্র চারশত হনুমান জীবিত আছে। আবার বেশ কিছু হনুমান তাদের বসবাসের পরিবেশের রূপান্তরের কারণে দেশান্তরী হচ্ছে। পার্শ্ববতী মনিরামপুর, অভয়নগর উপজেলায় অনেক হনুমান খাদ্যের অভাবে চলে গেছে। এছাড়া বৃক্ষের অভাব ও পরিবেশগত কারণে হনুমানগুলো খাবার এবং আশ্রয়ের অভাবে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। সরকার থেকে হনুমানের জন্য খাবারের বরাদ্দ থাকলেও সঠিকভাবে খাদ্য পায় না হনুমানগুলো, যার ফলে বিভিন্ন এলাকাতে হনুমান গুলো অবস্থান করে এবং মানুষের ঘরবাড়ি গাছপালার উপরে হামলা চালায়। হনুমানের প্রিয় খাবার পেঁপে, আম, কলা, সফেদা, মূলা, বেগুন, পাউরুটি, শাকসবজি, কচিপাতা, বিস্কুট, বাদাম ইত্যাদি এদের প্রিয় খাবার।

কেশবপুর উপজেলার সচেতন নাগরিক ও সুধী সমাজ দাবি জানান বিরল প্রজাতির এ কালো মুখো হনুমানের চাহিদা অনুযায়ী খাবার ও চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করলে ভবিষ্যতের প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং তাদের বংশবিস্তার হবে এ ব্যাপারে কেশবপুর উপজেলা প্রশাসনের যথাযথ হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

যশোর জেলা থেকে কেশবপুর উপজেলা সদরের দূরত্ব প্রায় ৩৩ কিলোমিটার। স্থানীয় যেকোনো পরিবহণ অথবা বাসে চড়ে যশোর থেকে কেশবপুর হনুমান গ্রামে আসতে পারবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

সম্পর্কিত নিবন্ধ

মালদ্বীপের ৬০তম স্বাধীনতা দিবসে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ভারতের প্রধানমন্ত্রী

ভারত থেকে নিউজ দাতা মনোয়ার ইমাম: আজ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুজ্জুই এর আমন্ত্রণে, সেদেশের মাটিতে...

ভোলায় সেনাসদস্য আনোয়ারের বিরুদ্ধে কোর্ট মার্শালের আদেশ

আরিফা হক,গাজীপুর প্রতিনিধি : হত্যা চেষ্টা ও ছিনতাই মামলার প্রধান আসামি সেনাবাহিনীর সদস্য আনোয়ার হোসেন (সৈনিক নং ১২৩৮৩৬৭) এর...

শ্রীপুর সদর ইউনিয়ন বিএনপির কাউন্সিল নির্বাচন অনুষ্ঠিত 

মোঃ এমদাদ,মাগুরা প্রতিনিধিঃ মাগুরার শ্রীপুর সদর ইউনিয়ন বিএনপির কাউন্সিল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে । শনিবার শ্রীপুর সরকারি ডিগ্রী কলেজে অনুষ্ঠিত-সকাল দশটা...

নড়াইলে এক সহানুভূতির হাত বদলে দিচ্ছে শত তরুণের ভবিষ্যৎ

সাজ্জাদ তুহিন,নড়াইল প্রতিনিধিঃ জীবনের সংগ্রাম ও হতাশার অভিজ্ঞতা থেকেই সৌরভ বিশ্বাস উপলব্ধি করেছেন, মানুষের জীবনে সময়মতো একটি সহানুভূতির হাত...