Wednesday, July 16, 2025

ঠাকুরগাঁওয়ে পানির অভাবে পাট নষ্ট হওয়ার আশংকা পাট নিয়ে ব্যস্ত কৃষকেরা 

Date:

Share post:

মোঃ রাজু, রংপুর বিভাগীয় প্রতিনিধি:

ঠাকুরগাঁও জেলায় সর্বত্রই এখন পাট কাটা ও জাগ দেওয়ার দৃশ্য চোখে পরে। তবে বর্ষার ভরপুর মৌসুম হওয়ায় প্রয়োজনমত বৃষ্টির পানি না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় কৃষকেরা। প্রাকৃতিক নিয়ম অনুযায়ী বর্ষার এ সময়টায় ছোট ছোট খাল-বিল, পুকুর, নদী-নালায় পানি থাকে ভরপুর। কিন্তু এ বছর পানি খুবই কম হচ্ছে। এতে কাঁচা পাট নিয়ে দুশ্চিন্তায় পরেছেন পাট চাষিরা। ঠাকুরগাঁও
সদর উপজেলার জামালপুর, রহিমানপুর, আউলিয়াপুর, আখানগর, গড়েয়া, রুহিয়া, চিলারং সহ বিভিন্ন ইউনিয়নের অধিকাংশ পাট চাষি প্রয়োজনীয় পানির অভাবে ঠিকমত পাট জাঁক দিতে পারছেন না। আবার অনেকে ছোট খাটো খালবিল ও পুকুরে পানি ঢুকিয়ে পাট জাঁক দেওয়ার চেষ্টা করলেও পানি ২-১ দিনের বেশি থাকছে না, শুকিয়ে যাচ্ছে। একই অবস্থা সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ও জেলার প্রায় সর্বত্রই। এ অবস্থাতে কিছু পাট নষ্ট হওয়ার দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নের পাহারভাঙ্গা গ্রামের কৃষক রুস্তম আলী বলেন, প্রতি বছরের ন্যয় এ বছরও পাট চাষ করেছি। পাট জমি থেকে কেটে রাস্তার ধারে স্তুপ করে রেখেছি। পাওয়ার ট্রলিতে করে সেগুলো জাগ দিতে বাড়ির পাশের একটি ডোবায় নিয়ে যাচ্ছি। তবে প্রখর রোদে ডোবাগুলোতে সামান্য পানি থাকলেও জাগ দেওয়ার মত না, সে কারনে একটি দুশ্চিন্তায় রয়েছি।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সালন্দর ইউনিয়নের কৃষক মজিবর রহমান বলেন, গম কাটার সেই জমিতে পাটের আবাদ করেছি। কাঁচা পাট প্রক্রিয়ার জন্য প্রধান উৎস হচ্ছে পানি। সাধারণত খালের পানিতে অথবা পুকুরের পানিতে পাট ডুবিয়ে রাখতে হয় ১২-১৫ দিন বা তার থেকে কয়েকদিন বেশি। কিন্তু এ বছর বৃষ্টির পানি প্রয়োজনমত না হওয়ায় কিছুটা সমস্যায় পরেছি।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নারগুন ইউনিয়নের পোকাতি গ্রামের পাটচাষী মো: মনোয়ার হোসেন বলেন, পাট চাষ করতে অনেক শ্রমিক খরচ হয়েছে। প্রয়োজনীয় পানির অভাবে পাট নষ্ট হচ্ছে এতে লোকশানের আশংকা দেখা দিয়েছে। প্রয়োজনমত বর্ষার পানি না পেলে গভীর নলকূপগুলো কয়েকদিনের জন্য ফ্রি করে দেওয়া হলে আমাদের মত কৃষকদের উপকার হতো। ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ঠাকুরগাঁও জেলায় এ বছর পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে। কিন্তু উৎপাদন হয়েছে ৭ হাজার ৯শ হেক্টর জমিতে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৫ হাজার ৯৮০ মেট্রিক টন। যা গত বছরে ছিল ৭২৫ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছিল। এতে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৬ হাজার ২৮০ হেক্টর জমি। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৬১ হাজার ১৫ মেট্রিক টন। ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো: সিরাজুল ইসলাম বলেন, পাট চাষের জন্য ঠাকুরগাঁও একটি আদর্শ ঠাকুরগাঁও জেলা। এ বছর ঠাকুরগাঁও জেলায় পাটের আবাদ বেড়েছে। উৎপাদনও ভাল হয়েছে। তবে কিছু উচু এলাকায় পানি কমে যাওয়ায় পাট চাষিরা কিছুটা সমস্যায় পরছেন। আশা করি বৃষ্টি হলে চাষিদের পাট পঁচানোর কাজটি সহজ হলে তাদের সমস্যার সমাধান হবে। এছাড়াও কৃষকেরা তাদের বাড়ির আশপাশের ছোট ডোবা, খাল-বিলে বৃষ্টি বা অন্যান্য উপায়ে পানি সংরক্ষণ করে পাট জাগ দিলে উপকৃত হবে। এ বছরও চাষীরা পাটের ভাল দাম পাবেন বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

সম্পর্কিত নিবন্ধ

তিস্তা ভাঙন এলাকা পরিদর্শনে পরিবেশ উপদেষ্ট

মোঃ আবু শাহান সেলিম মিয়া, রংপুর।। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান দুই...

যশোরে অ-গ্নিকা’ণ্ডে ক্ষ’তিগ্রস্ত পরিবারকে সেনাবাহিনীর সহায়তা

স্বীকৃতি বিশ্বাস, যশোরঃ গত ২২ মে ২০২৫ যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলার ডহরমশিয়াহাটি এলাকায় সংঘর্ষের জেরে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিবর্গ কর্তৃক ১৪টি...

নড়াইলে মদিনা ফুড বেকারিতে ভো’ক্তা অধিকারের অ’ভিযানে জ-রিমানা

সাজ্জাদ তুহিন নড়াইল প্রতিনিধি : নড়াইলে পৌরসভার কুড়িগ্রামে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি করায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন...

সড়ক দু-র্ঘটনা’য় গু’রুতর আ’হত শ্রীপুরের আনোয়ারুল ইসলাম হাসপাতালে লাইফ সা’পোর্টে

মোঃ এমদাদ, মাগুরা প্রতিনিধি: মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার তখলপুর গ্রামের কৃতি সন্তান, হাট দারিয়াপুর সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১৯৭৮ ব্যাচের...