
এমদাদুল হক, মনিরামপুর উপজেলা প্রতিনিধি:
যশোরের মনিরামপুর উপজেলার ঢাকুরিয়া ইউনিয়নের প্রতাপকাটি গ্রামে আবারও আলোচনায় এলেন চিহ্নিত চোর ও মাদকাসক্ত মোজাহিদ (২২)। পান চুরির অভিযোগে হাতেনাতে ধরা পড়ার পরেও, পুলিশে না দিয়ে শুধুমাত্র ২,০০০ টাকা জরিমানা করে তাকে ছেড়ে দেওয়ায় তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়েছে এলাকাবাসীর মধ্যে।
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রতাপকাটি গ্রামের কৃষক নির্মল কুমারের পান বরজে চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েন মোজাহিদ। পান চুরি করে বাজারে বিক্রি করতে গেলে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন। খবর পেয়ে ঢাকুরিয়া বাজার বণিক সমিতির সভাপতি মোঃ আব্দুল হান্নান ঘটনাস্থলে গিয়ে মোজাহিদকে পানসহ সমিতির অফিসে নিয়ে যান।
তবে সেখানেই শুরু হয় বিতর্ক। মোজাহিদের বিরুদ্ধে একাধিক চুরির অভিযোগ থাকলেও, পুলিশে না দিয়ে তার বাবাকে ডেকে এনে মাত্র ২,০০০ টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাজারজুড়ে এবং আশপাশের এলাকায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন—“এভাবে একজন পেশাদার চোরকে ছেড়ে দেওয়া কি অপরাধকে প্রশ্রয় দেওয়া নয়?”
স্থানীয়দের অভিযোগ, মোজাহিদের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক চুরির অভিযোগ রয়েছে। কখনও সোনার চেইন, কখনও পানি তোলার মোটর বা চুই গাছ চুরি করেছে। এমনকি বোয়ালিয়া উত্তরপাড়া থেকে গরু ও ভবানীপুর এলাকায় দরিদ্র মানুষের ভ্যান চুরির সঙ্গেও তার সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে।
তবে এখানেই শেষ নয়—মোজাহিদ একজন চিহ্নিত মাদকাসক্ত। কিছুদিন আগেই সে মাদকসহ পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিল এবং তাকে মনিরামপুর থানা পুলিশের এএসআই শহীদুল ইসলাম আদালতে সোপর্দ করেন। কিন্তু আইনের ফাঁক গলে জামিনে বের হয়ে আবারও অপরাধে জড়িয়ে পড়ে সে।
এলাকাবাসীর দাবি, মোজাহিদ একা নন—তার সঙ্গে একটি সংঘবদ্ধ চোরচক্র সক্রিয় রয়েছে। এই চক্রের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকুরিয়ার উকিল গাজীর ছেলে জিহাদ, বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী রুস্তম আলীর ছেলে মনজিল হোসেন এবং ভোমরদাহ গ্রামের মুবিন হোসেন। তারা পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন এলাকা থেকে রাতের অন্ধকারে চুরি করে থাকে।
সচেতন নাগরিকরা বলছেন, “একজন চিহ্নিত চোর ও মাদকসেবীকে সামান্য জরিমানা করে ছেড়ে দিলে সমাজে আইনের শাসনের বার্তা কোথায়?”
তাদের দাবি, চোরচক্রের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় অপরাধীরা আরও সাহস পাবে, সমাজে বাড়বে চুরি ও অব্যবস্থা।
সবার প্রত্যাশা—প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা যেন বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখেন এবং দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেন।