হুমায়ুন কবির, কালীগঞ্জ, ঝিনাইদহ :
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে সরকারি মাহাতাব উদ্দিন ডিগ্রী কলেজের দক্ষিণ সীমানা ঘেষে তুষের কাঠ(ধানের তুষ দিয়ে তৈরি একপ্রকার জ্বালানি) তৈরির কারখানার কালো ধোঁয়ায় চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে লেখাপড়ার পরিবেশ।একই সাথে কারখানাটির ধোঁয়ায় আশপাশের পরিবেশ ব্যাপকভাবে দূষিত হচ্ছে।
এ কারখানাটির পাশেই রয়েছে কাঁচা বাজার, উপজেলা পরিষদ, পোস্ট অফিস, মসজিদ, কিন্ডারগার্টেন স্কুল ও সরকারি কলেজ। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই আবাসিক এলাকায় এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে দীর্ঘদিন ধরে এই কারখানাটি চালু রেখেছেন নান্টু সাহা নামের স্থানীয় একজন ব্যবসায়ী । সরকারি নিয়ম নীতিকে তোয়াক্কা না করে এক প্রকার প্রভাব খাটিয়ে তিনি এ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন দীর্ঘদিন ধরে ।
প্রতিনিয়ত কারখানাটি সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে। এ সময় কারখানার উপর থাকা ছাওনির কয়েকটি টিন খোলা অবস্থায় রেখে বের করা হয় ধোঁয়া। তাছাড়া কারখানার চুল্লির সাথে থাকা চোঙ দিয়েও প্রতিনিয়ত বের হয় ধোঁয়া।ওই ধোঁয়া সাথে সাথে ছড়িয়ে পড়ে কলেজ ক্যাম্পাস ও তার আশেপাশের এলাকায়। ফলে কলেজের শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থী এবং এলাকাবাসী শ্বাসকষ্টসহ নানা রকম শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। কলেজ ক্যাম্পাসের দক্ষিণ পাশে দুইটি ভবনের পেছনে কারখানাটি অবস্থিত হওয়ায় সেখান থেকে নির্গত কালো ধোঁয়ায় শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত চরম বিপাকে পড়েন।
এ ব্যাপারটি মৌখিকভাবে কারখানা মালিককে একাধিকবার অবগত করা হলেও কোনো লাভ হয়নি বলে জানিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। নাজমুল হাসান, তৌফিক জামান, টুম্পা অধিকারী, আবুল হাসান নামের উক্ত কলেজের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা হলে তারা এই প্রতিবেদককে জানান, তুষ কাঠ কারখানার কালো ধোঁয়ায় আমরা রীতিমতো অতিষ্ঠ। শ্রেণিকক্ষে এমনকি ক্যাম্পাসেও ঠিকমতো দাঁড়ানো যায় না। ধোঁয়ায় চোখ জ্বলে এবং কাশি হয়। কলেজ ক্যাম্পাসের পাশে এই ধরনের কারখানা না রাখার জন্য আমরা কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানাচ্ছি। তুষ কাঠ কারখানার স্বত্বাধিকারী নান্টু সাহার সাথে কথা হলে তিনি জানান,৪০ বছর ধরে কারখানাটি চলছে। আগের মত এখানে আর কাজ হয় না। সকাল ৯ টার পরে আর চালানো হয় না। নতুন শ্রমিক এসেছে, এইজন্যে একটু বেশি সময় ধরে কাজ চলছে।আপনি বললেন, বন্ধ করে থুচ্চি। তাহলে তো আর সমস্যা নেয়! সরকারি মাহতাব উদ্দিন ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ চিন্ময় বাড়ৈ বলেন, বিধিবহির্ভূত কোনো কাজের দ্বারা লেখাপড়ার পরিবেশ যদি বিঘ্নিত হয় তাহলে অবশ্যই তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ঝিনাইদহ জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মুনতাসির রহমান বলেন, কালীগঞ্জে কোনো তুষ কাঠ তৈরির কারখানার পরিবেশ অধিদপ্তরের লাইসেন্স প্রদান করা হয়নি। সুতরাং অবৈধ ওই কারখানার বিরুদ্ধে দ্রুত প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।