পাইকগাছা, খুলনা প্রতিনিধি:
পাইকগাছায় দুর্নীতির খবর প্রকাশ ও আদালতে মামলা করার জেরে আইনজীবী ও সাংবাদিকদের ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছেন উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ ইফতেখারুল ইসলাম শামীম।
অভিযোগ রয়েছে, উপজেলার প্রতাপকাটি গ্রামের শেখ নজরুল ইসলাম ও তার ভাইদের কাছ থেকে প্রতাপকাটি ও হাউলি মৌজার ভি.পি জমি ইজারা নবায়নের নামে উপজেলা ভূমি অফিসের সার্টিফিকেট সহকারী অমর্ত্য বিশ্বাস, সার্ভেয়ার কওছার আলী, নাজির কাম ক্যাশিয়ার জিহাদ উল্লাহ, কপিলমুনি ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা কামাল হোসেনসহ এসিল্যান্ড মোঃ ইফতেখারুল ইসলাম শামীমের কাছে বিভিন্ন কিস্তিতে ৪ লক্ষ ২০ হাজার টাকা ঘুষ দেওয়া হয়। কিন্তু উক্ত টাকা নেওয়ার পরও অভিযোগকারী নজরুল ইসলামকে ইজারা না দিয়ে প্রতিপক্ষের নামে অবৈধভাবে ইজারা প্রদান করা হয়।
নজরুল ইসলামের দাবি, ঘুষ লেনদেনের বিষয়ে তার কাছে মোবাইল কথোপকথন ও বিকাশের মাধ্যমে আর্থিক লেনদেনের প্রমাণ রয়েছে। কিন্তু অভিযোগের পরও টাকা ফেরত না পাওয়ায় তিনি প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন এবং সংবাদমাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশ করেন।
পরবর্তীতে, ১২ জানুয়ারি ২০২৫ তিনি পাইকগাছা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন (মামলা নম্বর: ৩৬/২৫)। আদালত মামলাটি গ্রহণ করলেও তা বিশেষ জজ আদালতে বিচারযোগ্য উল্লেখ করে ফেরত দেন।
এদিকে, মামলার আইনজীবী ও সাংবাদিক মানবাধিকার কর্মী এ্যাডভোকেট এফ.এম.এ রাজ্জাক উক্ত দুর্নীতির খবর প্রকাশ করায় এসিল্যান্ড ও তার সহযোগীরা ক্ষুব্ধ হন। অভিযোগ রয়েছে, তারা সরকারি জমি উদ্ধারের নামে উক্ত আইনজীবী ও সাংবাদিককে উচ্ছেদ করার ষড়যন্ত্র করছেন এবং বিভিন্ন মাধ্যমে তাদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন।
এছাড়া, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় খুলনার ১৩ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে ছাত্র নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে, যেখানে এসিল্যান্ড ইফতেখারুল ইসলাম শামীমের নামও রয়েছে। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পর্যালোচনা করছে বলে জানা গেছে।
অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে তিনি নিজেকে ক্ষমতাধর ব্যক্তি হিসেবে জাহির করতেন। যদিও বিগত সরকারের সময়ে বিতর্কিত ভূমিকার জন্য অনেক কর্মকর্তার শাস্তি, বদলি, ও বাধ্যতামূলক অবসর হলেও মোঃ ইফতেখারুল ইসলাম শামীম বহাল তবিয়তে রয়েছেন।
সচেতন মহল ও এলাকাবাসী তার অপসারণ ও দুর্নীতির সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।