Monday, September 15, 2025

কালিগঞ্জে প্রতিবন্ধীর আত্মসাৎকৃত টাকা ফেরতের দাবি পরিবারের

Date:

Share post:

হুমায়ুন কবির,কালীগঞ্জ(ঝিনাইদহ)প্রতিনিধি:

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার রায়গ্রাম ইউনিয়নের ভাতঘরা দয়াপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অসহায় দুই প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর জন্য বরাদ্দকৃত টাকার মধ্যে আত্মসাতকৃত ৪২ হাজার টাকা ফেরত দেওয়ার দাবি জানিয়েছে তাদের পরিবার। পারফরম্যান্স বেইজ গ্রাউন্ডস ফর সেকেন্ডারি ইনস্টিটিউশন( পিবিজিএসআই)স্কিমের আওতাই মোট বরাদ্দের ১০ শতাংশ টাকা প্রতিবন্ধীদের জন্য ধরা হয়। বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক আফরোজাহান শেলী তার বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী চাঁদনী খাতুন ও নবম শ্রেণীর প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী রাহাত হোসেনকে ৪ হাজার করে মোট ৮ হাজার টাকা দেন। একই সাথে স্কুলের প্যাডে তাদের নামের পাশে ২৫ হাজার টাকা লিখে রাজস্ব ডাকটিকিটের উপর স্বাক্ষর করিয়ে নেন। ভুক্তভোগীদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী জানা যায়,প্রধান শিক্ষককে এ কাজে সহযোগিতা করেন অত্র বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মতিয়ার রহমান।এ ঘটনা জানার পর থেকে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট ভোক্তভোগী দুই প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর পরিবার আত্মসাতকৃত সমুদয় অর্থ ফেরত পাওয়ার জোর দাবি তুলেছেন।উপজেলার ভাতঘরা মাঝপাড়া গ্রামের কৃষি দিনমজুর ফারুক হোসেন ও ময়না খাতুন দম্পতির বড় ছেলে প্রতিবন্ধী রাহাত হোসেন।

জন্ম থেকে বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী সে। দুই শতক ভিটার জমি আর তার উপর নির্মিত দোচালা মাটি ও টিনের তৈরি দুটি ঘর ছাড়া আর কিছুই নেই প্রতিবন্ধী এই পরিবারের। কিছুদিন আগে রাহাতের কিডনিতে জটিল রোগ ধরা পড়লে লাখ টাকা ধার দেনা করে করা হয় অপারেশন। অভাব অনটনের এই সংসারে তবুও প্রতিবন্ধী সন্তানকে স্কুলে পাঠায় তার বাবা-মা। অপরদিকে, একই পাড়ার রাশেদ আলী ও লাকি বেগম দম্পতির দুই মেয়ের মধ্যে বড় হল চাঁদনী খাতুন। অভাব অনটনের সংসার চালাতে ব্যর্থ হওয়ায় চাঁদনীর বাবা-মাকে গার্মেন্টসে কাজের সুবাদে থাকতে হয় ঢাকায়।সঙ্গত কারণেই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী কিশোরী চাঁদনী খাতুনের দেখভালের দায়িত্ব পড়ে দাদা আব্দুল মালেকের উপর। চাঁদনী রাহাতের সাথে একই বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণীতে পড়ে। জন্ম থেকেই তার দুটি চোখেই সমস্যা। রোদে বের হলে দুই চোখ দিয়ে অঝোরে ঝরে অশ্রু। পরিবার থেকে নিয়মিত ডাক্তার দেখানো হচ্ছে চাঁদনীর। এজন্য অনেক অর্থেরও প্রয়োজন। সরকার থেকে প্রতিবন্ধীর জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের সামান্য অংশ দিয়ে বারবার বিদ্যালয় থেকে শিক্ষকরা খোঁজ নিচ্ছেন টাকা দেওয়ার ব্যাপারে কেউ কোন খোঁজ-খবর নিতে আসছে কিনা। বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা চাঁদনী খাতুনকে শিখিয়ে দিয়েছেন, কেউ খোঁজ করলে “চাঁদনী বাড়িতে নেই, সে আত্মীয় বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছে” বলার জন্য। সরজমিনে ভাতঘরা গ্রামের প্রতিবন্ধী রাহাত ও চাঁদনীর বাড়িতে তার পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা যায়, অনেক কষ্টে প্রতিবন্ধী সন্তানদের নিয়ে তাদের দিন যাপন করতে হয়। সরকার থেকে তাদের সন্তানদের জন্য দেওয়া অর্থ তাদের হাতে সঠিকভাবে না পৌঁছানোর ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আগে জানতাম চেয়ারম্যান মেম্বাররা মেরে খাই, এখন দেখছি স্যারেরাও মেরে খাই। আমরা আত্মসাতকৃত সব অর্থ ফেরত চাই। একই সাথে টাকা আত্মসাতের সাথে সাথে জড়িত শিক্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও জানাই।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

সম্পর্কিত নিবন্ধ

জামায়াত এনসিপি হচ্ছে আওয়ামী লীগের বি ও সি টিম আমজাদ হোসেন মামুন

 নুর-বীন আব্দুর রহমান রাহাত,  ঢাকা: ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদলের সহ-দপ্তর সম্পাদক আমজাদ হোসেন মামুন বলেছেন, জামায়াত ও এনসিপি আসলে...

আজ মগরাহাট পশ্চিমের উস্তি কে সি এম উচ্চ বিদ্যালয়ে মহিলা তৃনমূল কংগ্রেসের কর্মী সভা অনুষ্ঠিত

কলকাতা থেকে নিউজ দাতা মনোয়ার ইমাম: আজ সকালে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার উস্তি কে সি পি উচ্চ বিদ্যালয়ে একটি...

মনিরামপুর ভূমি অফিসে দু”র্নীতির স্বর্গরাজ্য – নৈশ প্রহরীও ‘স্যার’

মনিরামপুর প্রতিনিধি: যশোরের মনিরামপুর ভূমি অফিস দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে—এমন অভিযোগ উঠেছে এলাকাবাসীর মধ্যে। অফিসের নৈশ প্রহরী আসাদও সেখানে...

নড়াইলে তরুণ উদ্যোক্তা প্রযুক্তির আলো তুলে দিতে চান তরুণ প্রজন্মের কাছে

সাজ্জাদ তুহিন,নড়াইল প্রতিনিধিঃ আমাকে সৃষ্টিকর্তা যে সামান্য জ্ঞান ও দক্ষতা দিয়েছেন,তা আমি সাথে নিয়ে যেতে পারব না। কিন্তু রেখে...