Monday, September 8, 2025

কালীগঞ্জ সাব-রেজিষ্ট্রার অফিসে অতিরিক্ত ফি আদায় ক্ষুদ্ধ জমির ক্রেতা বিক্রেতারা

Date:

Share post:

হুমায়ুন কবির,কালীগঞ্জ(ঝিনাইদহ)প্রতিনিধি:

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা সাব-রেজিষ্ট্রার অফিসে সরকার নির্ধারিত ফি’র চেয়ে অতিরিক্ত ফি আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন জমির ক্রেতা-বিক্রেতারা।

সরকার নির্ধারিত ফি পৌরসভার জমি শতকরা ১০ এবং পৌরসভার বাইরে শতকরা ৮ টাকা। কিন্তু একটি চক্র কৌশলে সরকার নির্ধাতি ফি ছাড়াও দলিল প্রতি ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জমির ক্রেতা-বিক্রেতারা। তারা বলছেন, সরকার নির্ধারিত ফি সাব-রেজিষ্ট্রার অফিসে টাঙ্গিয়ে দেওয়া উচিৎ।

জমির মালিকরা সরকারের ফি কত না জানায় সুযোগ নিচ্ছে ওই চক্রের সদস্যরা। নিয়মানুযায়ি সরকারী পে-অর্ডার ছাড়াও অতিরিক্ত অর্থের জন্য কোন রশিদ দেওয়া হয় না।

সরেজমিনে ৩০ অক্টোবর উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার অফিসে যেয়ে দেখা যায়, সেখানে মহরার পদে চাকরি করেন আব্দুল হান্নান। আব্দুল হান্নান সেবা গ্রহীতা এবং দলিল লেখকদের নিকট থেকে বাধ্যতামূলক দলিল প্রতি ১৫০০ টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বিনারশিদে অতিরিক্ত ফি আদায় করছেন। যার ভিডিও প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।

দীর্ঘদিন ধরে কালীগঞ্জ উপজেলায় নিয়মিত সাব রেজিস্টার নেই। ফলে এ উপজেলার রেজিষ্ট্রির কাজ করতে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার সাব রেজিষ্টাার কাউসার আলী সপ্তাহে দুইদিন অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন।

ফলে তার আসা যাওয়া খরচ, আপ্যায়ন, খুশি করা এবং অফিস খরচ বাবদ আব্দুল হান্নান এসব টাকা আদায় করছেন বলে জানা গেছে। ২৯  ও ৩০ অক্টোবর কালীগঞ্জ উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রার অফিসে প্রায় দুইশতাধিক দলিল রেজিষ্ট্রি হয়।

এ দুইদিনে রেজিষ্ট্রি হওয়া দলিল প্রতি ১৫০০ থেকে ২০০০ করে টাকা আদায় করেছেন আব্দুল হান্নান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক দলিল লেখক জানান, আব্দুল হান্নান শুধু রেজিষ্ট্রির জন্য নয়, দলিলের সিরিয়াল বাবদও ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা করে আদায় করে থাকেন। যারা টাকা দেন তাদের জমি রেজিস্টী সবার আগে হয়।দিন শেষে রাতে অফিসের দরজা বন্ধ করে এব টাকা তিনি ভাগবটোয়ারা করেন।

কালীগঞ্জ রেজিষ্ট্রি অফিসের মহরার আব্দুল হান্নান জানান, সরকারি ফির অতিরিক্ত কোন টাকা আদায় করা হচ্ছে না। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যা, কেউ আপনাকে ভুল তথ্য দিয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন।

সাব রেজিষ্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) কাওসার আলী বলেন, আমি কোনো টাকা পয়সা নেই না। আমার নাম ব্যবহার করে কেউ টাকা নিলে প্রমাণ পেলে আমি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। আর রশিদ ব্যতীত অতিরিক্ত ফি আদায়ের কোন সুযোগ নেই। ভুক্তভোগী কেউ থাকলে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করতে বলেন আমি দেখব।

ঝিনাইদহ জেলা রেজিস্টার সাব্বির হোসেন জানান, বিনা রশিদে অফিসে বসে টাকা আদায়ের কোন নিয়ম নেই। কেউ যদি অনৈতিকভাবে কোন টাকা লেনদেন করে থাকেন, তথ্য প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেদারুল ইসলাম জানান, জমি রেজিষ্ট্রিতে অতিরিক্ত ফি আদায় করলে আমাকে তার তথ্য প্রমাণ দেন। অবশ্যই আমি বিষয়টি দেখব।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

সম্পর্কিত নিবন্ধ

মণিরামপুরে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী উদযাপন

মণিরামপুর প্রতিনিধিঃ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে মণিরামপুর মহিলা ডিগ্রী কলেজ সহ উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পবিত্র ঈদ ই...

টাকার অভাবে অ”পারেশন করাতে পারছেন না কুয়াদার অসিম রায় বাবার আ”কুতি সা”হায্য করুন

মোঃ ওয়াজেদ আলী, স্টাফ রিপোর্টার: যশোরের মণিরামপুর উপজেলার কুয়াদা ভোজগাতী ইউনিয়নের জামজামি গ্রামের সুনীল রায়ের একমাত্র ছেলে অসিম রায়...

মণিরামপুরে কৃতি শিক্ষার্থীদের আলোছায়া’র সংবর্ধনা প্রদান

এস এম তাজাম্মুল,মণিরামপুরঃ এসএসসি/দাখিল ও সমমানের পরিক্ষায় জিপিএ ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের নিয়ে আলোকিত ভবিষ্যৎ গড়তে সহায়ক বিভিন্ন দিকনির্দেশনা মূলক...

শ্রীপুরের দারিয়াপুর ইউনিয়নে ভিডাব্লিউবি কার্ড বিতরণ উদ্বোধন

মোঃ এমদাদ মাগুরা প্রতিনিধি: গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ভিডব্লিউবি (ভার্নারাবুল উইমেন বেনিফিশিয়ারি) কর্মসূচি ২০২৫-২০২৬ জন্য উপকারভোগীদের মাঝে কার্ড বিতরণ...