Saturday, July 12, 2025

কালীগঞ্জে দারুস শেফা ক্লিনিকে ভূল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যু 

Date:

Share post:

হুমায়ুন কবির,কালীগঞ্জ(ঝিনাইদহ)প্রতিনিধি:

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে দারুস-শেফা প্রাইভেট হাসপাতালে ভূল চিকিৎসায় লাভলী বেগম (২৬) নামে এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার দিবাগত রাতে তার মৃত্যু হয়।

লাভলী খাতুন জেলার হরিণাকু-ু উপজেলার তৈলটুপী গ্রামের এনামুল কবিরের স্ত্রী। এই দম্পতির সাফি নামে ৭ বছরের এক ছেলে সন্তান রয়েছে। স্বামীর চাকরির কারণে তারা কালীগঞ্জ শহরে থাকতেন। স্বজনরা জানায়, ২য় সন্তানের জন্ম দিতে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে শহরের দারুস-শেফা প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার শরীরে

অস্ত্রপ্রচার করেন চিকিৎসক রেক্সোনা পারভীন ইলোরা। অস্ত্রপ্রচারের মাধ্যমে লাভলী বেগম কন্যা সন্তানের জন্ম দিলেও তার শরীর থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হতে থাকে। ভূল অস্ত্রাপচারে চিকিৎসক রেক্সোনা পারভীন প্রসূতির জরায়ু কেটে ফেলেন। এরপরে রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় বিকাল ৪ টার দিকে পুনরায় লাভলী বেগমকে নেওয়া হয় অপারেশন থিয়েটারে। প্রায় ৩ ঘন্টা ধরে চলা দ্বিতীয়

অস্ত্রাপচারের কথা বলে অপারেশন থিয়েটারেই রাখা হয় লাভলী খাতুনকে। স্বজনরা এ সময় রোগীর অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে অপারেশন

থিয়েটারের ভেতর থেকে বারবার জানানো হয় রোগী ভালো আছে। সেলাই শেষ করেই তাকে বেডে দেওয়া হবে। দীর্ঘ সময় পার হলেও রোগীকে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের না করাই স্বজনদের মনে সন্দেহ জাগে। এরপর একজন অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশ করে দেখেন রোগী অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে। এ সময় চিকিৎসক রেক্সোনা পারভীন ইলোরা প্রসূতিকে যশোরে রেফার্ড করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৩ টার দিকে তার মৃত্যু হয়। লাভলী খাতুনের স্বামী এনামুল কবির জানান, দারুস-শেফা প্রাইভেট হাসপাতালের চিকিৎসক রেক্সোনা পারভীন ইলোরার ভূল চিকিৎসায় তার স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। রেক্সোনা পারভীন অপ্রয়োজনে তার স্ত্রীর জরায়ু কেটে ফেলেছেন। জরায়ু কেন কাটা হলো এমন প্রশ্নের কোন সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি। রোগীর শরীরের রক্তক্ষরণ দেখে চিকিৎসক রেক্সোনা নিজেই ঘাবড়ে যান। তখন চিকিৎসক বলেন, আমি সাথে লোক দিচ্ছি আপনারা দ্রুত যশোর নিয়ে যান। অপচিকিৎসায় আমার স্ত্রীর মৃত্যুর জন্য জড়িতদের বিচার চাই। এ ব্যাপারে জানতে দারুস-শেফা প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসক রেক্সোনা

পারভীন ইলোরার মোবাইলে ফোন দিলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। কালীগঞ্জ উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আলমগীর হোসেন বলেন, দারুস-শেফা প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিকসেন্টারের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীরা বিভিন্ন সময় অভিযোগ করলেও পরবর্তীতে প্রাইভেট হাসপাতালটির মালিক পক্ষের সাথে সমঝোতা করাই শেষ পর্যন্ত হাসপাতালটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি। এই ঘটনা শুনলাম, অবশ্যই এ ব্যাপারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

সম্পর্কিত নিবন্ধ

দুর্নীতিবাজ মাহবুবের খুটির জোর কোথায় ? বহিষ্কারের পরেও স্বপদে বহাল

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়াধীন ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপরেটর মাহাবুবুর রহমান।...

নির্বাচনের সব প্রস্তুতি ডিসেম্বরের মধ্যে নেওয়ার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

অনলাইন ডেস্কঃ ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের জন্য ডিসেম্বরের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন...

নানার বাড়ি

নানার বাড়ি মুহাঃ মোশাররফ হোসেন যশোর জেলার থানা মনিরামপুর ঝাঁপা গ্রামে বাড়ি আমার , চালুয়াহাটি ইইউনিয়নে নানা বাড়ি মন চাইতো যেতে বারেবার! বুঝবার যখন...

রৌমারীতে নদী ভাঙ্গনের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে চাল বিতরণ           

রৌমারী(কুড়িগ্রাম)প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের রৌমারীতে নদী ভাঙ্গনের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে চাল বিতরণ করা হয়। মঙ্গলবার দুপুর ১২ টার দিকে রৌমারী উপজেলা প্রশাসন...