Wednesday, September 17, 2025

কালীগঞ্জে সমন্বয় সভার নামে ভুরি ভোজের আয়োজন শিক্ষা কর্মকর্তার

Date:

Share post:

হুমায়ুন কবির,কালীগঞ্জ(ঝিনাইদহ)প্রতিনিধি:

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আইনকে উপেক্ষা করে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো ফারুক আহমেদ মাসিক সমন্বয় সভা বা মিটিং এর নামের ভুরিভোজের নিজস্ব ফরমায়েশ জারি করেছেন। কালিগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ প্রায় এক বছর পূর্বে এই উপজেলায় যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই উপজেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দাখিল মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক ও সুপারেনটেনডেন্টদের নিয়ে প্রতি মাসে দিনব্যাপী শিক্ষার মান উন্নয়নের নাম করে ভুরিভোজের আয়োজন করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে । এ ভুরিভোজে প্রায় শতাধিক শিক্ষক, আমন্ত্রিত অতিথি ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানিয়ে থাকেন তিনি।এই অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের তহবিল থেকে নাস্তা ও দুপুরের খাবারসহ আনুষঙ্গিক খরচ বাবদ ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা ব্যয় হয়। শিক্ষা কর্মকর্তার নিজস্ব এই অনুষ্ঠানটি পালনে অনিচ্ছা সত্ত্বেও মোটা অংকের অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। ইতিমধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নের জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধান ও বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকদের একাধিকবার প্রশিক্ষণও দিয়েছেন। ফলে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নিজস্ব তৈরি করা এই মাসিক শিক্ষা সমন্বয় সভায় দুই একজন শিক্ষক ও জনপ্রতিনিধিগণ সাধারণ আলোচনা করে একসাথে দুপুরের খাবার খেয়ে সমন্বয় সভা শেষ করেন। ফারুক আহমেদ নিজের পছন্দমত এক এক মাসে এক এক বিদ্যালয়ে এই সমন্বয় মিটিং এর আয়োজন করছেন। যা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কোন উপকারে আসছে না। ফলে জোরপূর্বক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের উপর চাপিয়ে দেওয়া সমন্বয় সভার জন্য মোটা অঙ্কের অর্থ ব্যয় করতে অপারগতা প্রকাশ করলেও তা মুখ ফুটে বলতে পারছেন না অনেকে । উপজেলার গ্রাম অঞ্চলের বিদ্যালয়গুলো এই মিটিং এর ব্যয় নির্বাহ করতে হিমশিম খাচ্ছে।তারপরও শিক্ষা কর্মকর্তার ভয়ে প্রধান শিক্ষকরা মাসিক সমন্বয় মিটিং করতে বাধ্য হচ্ছেন। শিক্ষা বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ বলছেন, এ ধরনের মাসিক সমন্বয় সভা বা মিটিংয়ের কোন আইনগত বিধান নেই।শিক্ষার মান, শিক্ষকদের স্কুলে যাওয়া আসার সময়, নিয়মমতো স্কুল মনিটরিংসহ শিক্ষা সংশ্লিষ্ট অনেক বিষয়গুলোকে তিনি উপেক্ষা করে সমন্বয় সভার উপর জোর দেন।একাধিক সূত্র মতে জানা যায়,উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা এই কর্মকর্তা সময়মতো এবং নিয়মিত অফিসও করেন না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রধান শিক্ষক খুব দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, এটা আমাদের শিক্ষা বিভাগের কোন জরুরী কিছু না। শিক্ষা কর্মকর্তার নিজের খামখেয়ালিপনা ও কর্তৃত্ব জাহিরের বহিঃপ্রকাশ মাত্র। তিনি সমন্বয় মিটিং এর খাবারের তালিকা নিজের হাতে তৈরি করে প্রধান শিক্ষকদের হাতে ধরিয়ে দেন। অথচ তিনি একবারও চিন্তা করেন না সমন্বয় মিটিং এ মোটা অংকের যে অর্থ ব্যয় হবে তা কোথা থেকে আসবে । আমরা এ ধরনের মিটিং করতে আগ্রহী যদি শিক্ষা কর্মকর্তা এর ব্যয়ভার বহন করেন। কালিগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফারুক আহমদ বলেন,আমাদের নির্দেশনা আছে মাসে একটি করে মিটিং করার।কিন্তু সেই মিটিংয়ে কোন অর্থ বরাদ্দ না থাকায় আমরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মিটিং করছি। মিটিং তো আর আমি আমার স্বার্থে করছি না। এ ব্যাপারে যে যাই বলুক আমি কারো কথা শুনবো না।এই কর্মকর্তা শিক্ষা বিভাগের কোন পরিপত্রে মাসিক সমন্বয় সভার কোন নির্দেশনা দেখাতে পারেননি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

সম্পর্কিত নিবন্ধ

স্বস্তির বৃষ্টিতে সতেজ বোরো আমন ধানের চারা কৃষকের মুখে হাসি

মোঃ ওয়াজেদ আলী, স্টাফ রিপোর্টার: দীর্ঘদিন বৃষ্টির অভাবে দুশ্চিন্তায় থাকা যশোরের আমন ও বোরো ধান চাষিদের মুখে এখন স্বস্তির...

যানজট নি’রস’নে রাস্তা মেরামত প্রশস্তকরণ দ”খল মু’ক্তির কার্যক্রম চলছে

মোঃ নুর-বীন আব্দুর রহমান রাহাত, কামরাঙ্গীরচর, ঢাকা: ৫৭ নং ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এইচ সাইফুল ইসলাম বলেছেন, হাজী মোঃ...

মোহাম্মদপুরে মোবাইল ও টাকা চু”রির অ”ভিযো’গে যুবককে পি/টি/য়ে হ”ত্যা

মোঃ এমদাদ মাগুরা প্রতিনিধি: মাগুরার মহম্মদপুরে মোবাইল ফোন ও টাকা চুরির অভিযোগে ইসরাফিল (৪০) নামে এক যুবককে গণপিটুনি দিয়ে...

পূজা উদযাপন ফ্রন্টের মণিরামপুর আহ্বায়ক কমিটি ঘোষনা

মণিরামপুর প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্টের মণিরামপুর উপজেলার জন্য জেলার মূল কমিটি না থাকায় ৫১ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক...