Saturday, August 16, 2025

যশোরে দা-ছুরি বানাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কর্মকাররা

Date:

Share post:

মোঃ সাকিব হোসেন,স্টাফ রিপোটার:

পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে যশোরের মণিরামপুর রাজগঞ্জে কর্মকারদের বেড়েছে ব্যস্ততা। অধিকাংশ দোকানের ভেতর থেকে ভেসে আসা হাতুড়ি দিয়ে লোহা পেটানোর টুং টাং শব্দে পুরো এলাকা মুখরিত হয়ে উঠেছে। রোজার ঈদের এক মাস পর থেকেই কামারিরা কোরবানির জন্য প্রস্তুতি শুরু করেন। আগে ১২ ঘণ্টা কাজ করলেও কোরবানির সময় ঘনিয়ে আসায় এখন টানা ১৪-১৫ ঘণ্টা কাজ করতে হচ্ছে তাদের। মাঝে শুধু খাওয়ার সময় পাওয়া যাচ্ছেন তারা। ক্রেতাদের চাহিদানুসারে সরবারহ স্বাভাবিক রাখতেই তাদের এ অক্লান্ত পরিশ্রম।

কামারপট্টিতে প্রতিটি দোকানে সাজিয়ে রাখা হয়েছে কোরবানির পশু জবাই ও গোশত কাটার বিভিন্ন আকারের দা, বটি, ছুরি, চাপাতি, কুড়াল। অনেকে আবার দোকানের সামনে বসে এসব সরঞ্জাম ধারালো করতে শান দেওয়ার কাজ করছেন। দোকানের পাশ দিয়ে কেউ গেলেই ডাক দিয়ে জিজ্ঞেস করছেন, কী লাগবে ? টুকটাক যেসব ক্রেতা আসছেন তাদেরকে চাহিদা অনুযায়ী সরঞ্জাম দেখাচ্ছেন, দামাদামি করছেন। সবমিলিয়ে বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন এখানকার কামার ও বিক্রেতারা। সোমবার ২৭শে জুন সরেজমিনে উপজেলার রাজগঞ্জ বাজারে কামারপট্রিতে দেখা যায়, কারিগররা উত্তপ্ত লোহাকে পিটিয়ে নির্দিষ্ট রূপ ‍দিচ্ছেন। নির্দিষ্ট সময় পর ঠান্ডা করে ধারালো করছেন।

প্রয়োজনীয় উপকরণের অভাব, আর্থিক সংকটসহ নানা কারণে হারিয়ে যেতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী এই শিল্প। পাশাপাশি কয়লা আর কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় লাভের পরিমাণ কমেছে বলেও জানায় এই উপজেলার কামাররা। সারা বছর কমবেশি লোহার কাজ করলেও ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে বৃদ্ধি পায় কামারদের কর্মব্যস্ততা। ভোর থেকে শুরু করে গভীররাত অবধি চলছে তাদের রকমারি কর্মযজ্ঞ।

ক্রেতারা বলেন “আর মাত্র কয়েক দিন পরেই ঈদ। গরু ও ছাগল জবাই দিতে এবং মাংস কাটতে দা,বটি, চাকু ও ছুরির প্রয়োজন। এজন্য বাজারে দা, বটি ও ছুরি কিনতে এসেছি । তবে গতবছরের চেয়ে এবার দাম খানিকটা বেশি।”লোহার তৈরী জিনিপত্র পাইকারী বিক্রেতারা বলেন, “সারাবছরই তারা দা, বটি, চাকু, ছুরি বিক্রি করি। তবে কোরবানির মৌসুমেই এসব সরঞ্জামের কেনা-বেচার ধুম পড়ে। এবারও ভালো বিক্রি হচ্ছে। তবে কয়লা ও লোহার দাম বেড়ে যাওয়ায় কামারদের কাছ থেকে বেশি দামে এসব জিনিসপত্র কিনতে হচ্ছে। যার ফলে কিছুটা বেশি দামে আমাদের বিক্রি করতে হচ্ছে।

মণিরামপুর রাজগঞ্জের কর্মকার সঞ্জয় কুমার জানান বাপ-চাচার ঐতিহ্য সূত্রে অনেক বছর ধরে এই কাজ করে আসছি। বছরের অন্য দিনগুলোতে তেমন কাজ থাকে না। কিন্তু কোরবানির ঈদ এলে কাজের চাপ বেড়ে যায় প্রতিবছর। নিউজবিডিজার্নালিষ্ট ২৪কে জানায়, দা আকৃতি ও লোহাভেদে ২০০- ৫০০ টাকা, ছুরি ১০০-৪০০ টাকা, চাকু প্রতিটি সর্বোচ্চ ৫০-৫০০ টাকা, হাড় কোপানোর চাপাতি প্রতিটি ৫০০-৮০০ টাকা এবং পুরানো দা, বটি, ছুড়ি শান দিতে বা লবণ-পানি দিতে ৫০-১৫০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

সম্পর্কিত নিবন্ধ

খালেদা জিয়ার জন্মবার্ষিকীতে মণিরামপুরে নেতা কর্মীদের ঢ’ল ‎

এস এম তাজাম্মুল,মণিরামপুরঃ পূর্ব নির্ধারিত সূচির আলোকে ২০২৫ইং সালের ক্যালেন্ডারের পাতায় ১৫ই আগষ্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপার্সন...

শ্রীপুরে বালি ফে’লে জমি দ’খলের অ’ভিযোগ

মোঃ এমদাদ মাগুরা প্রতিনিধি: মাগুরা শ্রীপুর সদর ইউনিয়নের শ্রীপুর পশ্চিম পাড়ার মডেল মসজিদ সংলগ্ন সালাম সহ ৪-৫ জন লোকজনের...

মণিরামপুরে ৭ ইউনিয়ন প্রশাসকের সেবায় স্বচ্ছতার আশ্বাস ঘুরে-ফিরে চাই নির্বাচন

এস এম তাজাম্মুল,মণিরামপুরঃ দেশের অন্যতম বৃহত্তর উপজেলা যশোরের মণিরামপুরের ১৭ ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রমে সরকারি সেবা অব্যাহত রাখতে মধ্যবর্তী...

কুয়াদায় বেগম খালেদা জিয়ার ৮০তম জন্মবার্ষিকীতে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল

মোঃ ওয়াজেদ আলী, স্টাফ রিপোর্টার: যশোরের কুয়াদায় বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ৮০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে...