
নিম গাছ
মুহাঃ মোশাররফ হোসেন
নিম গাছ ( বৈজ্ঞানিক নাম: Azadirachta indica) এইটা একটি ঔষধি গাছ, যার ডাল, পাতা, শিকড়, কাঠ সবই মানুষের দৈনন্দিন জীবনে বহুবিধ কাজে ব্যাহার হয়ে থাকে।
নিম গাছ একটি বহুবর্ষজীবী ও চিরহরিৎ বৃক্ষ।
আকৃতিতে ৪০ থেকে ৫০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। এর কাঠের ব্যাস ২০ থেকে ৩০ ইঞ্চি হতে পারে। ডালের চারদিকে ১০ থেকে ১২ ইঞ্চি যৌগিক পত্র জন্মে। পাতাগুলো কাস্তের মত বাকানো থাকে এবং পাতার কিনারায় কিছু খাঁজযুক্ত অংশ থাকে। এর পাতাগুলো ২,৫০ইঞ্চি থেকে ৪ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়।
নিম গাছে এক ধরনের ফল হয়। আঙুরের মতো দেখতে এই ফলের একটিই বীজ থাকে। জুন-জুলাইতে ফল পাকে এবং কাঁচাফল তেতো স্বাদের হয়। তবে ফলগুলো পেকে হলুদ হওয়ার পর মিষ্টি হয়। ভারত এবং বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্রই নিম গাছ জন্মে। প্রাপ্ত বয়স্ক হতে সময় লাগে প্রায় ১০ বছর। নিম গাছ সাধারণত উষ্ণ আবহাওয়া প্রধান অঞ্চলে ভালো হয়। মাটির পিএইচ ৬.২ থেকে ৮.৫ এবং বৃষ্টিপাত ১৮-৪৬ ইঞ্চি ও ১২০ ডিগ্রী ফারেনহাইট তাপমাত্রা নিম গাছের জন্য উপযোগী। নিমের পাতা থেকে বর্তমানে প্রসাধনীও তৈরি হচ্ছে। কৃমিনাশক এবং এলার্জিনাশক হিসেবে নিমের রস এবং পাতা খুবই কার্যকরী। নিমের কাঠ খুবই শক্ত হয়। এই কাঠে কখনো ঘুণ ধরে না। পোকা বাসা বাঁধে না। উইপোকা খেতে পারে না। এই কারণে নিম কাঠের আসবাবপত্রও বর্তমানে তৈরি করা হচ্ছে। এছাড়া প্রাচীনকাল থেকেই বাদ্যযন্ত্র বানানোর জন্য এর কাঠ ব্যবহার করা হচ্ছে। এর উৎপাদন ও প্রসারকে উৎসাহ এবং অন্যায়ভাবে নিম গাছ ধ্বংস করাকে নিরুৎসাহিত করছে। নিমের এই গুণাগুণের কথা বিবেচনা করেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একে ‘একুশ শতকের বৃক্ষ’ বলে ঘোষণা করেছে।
নিম গাছও আল্লাহর প্রদত্ত নিয়ামতগুলোর মধ্যে একটা গাছ।