Tuesday, September 9, 2025

সতীঘাটায় শীতের আগমনে গাছিরা খেজুর গাছ কাটায় ব্যস্ত

Date:

Share post:

মোঃ ওয়াজেদ আলী,স্টাফ রিপোর্টারঃ

যশোরের সতীঘাটা কামালপুর গ্রামের খেজুর গাছ কাটতে গাছিরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। ১২ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে খেজুর গাছ কাটার এই দৃশ্য দেখা মেলে।

এই বিষয় গাছি আনার হোসেন বলেন, আমাদের দেশে বছরের একটি মৌসুমে অর্থাৎ শীতকালে খেজুর গাছ কাটতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে গাছিরা।কারণ,এসময় খেজুর কাছ ছাটাই করে বা পরিষ্কার করে ভাড় টাঙিয়ে খেজুরের রস সংগ্রহ করে। রস থেকে আবার রসের পিঠা, রসের ক্ষীর, খেজুরের গুড় ও পাটালি বানানো হয়। এটি গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খাবার।

খেজুর গাছ সাধারণত ১০ থেকে ৩০ ফুট লম্বা হয়। মাথায় ঝাঁকড়া বা চারদিকে ছড়ানো চুলের মতো পাতা ও সারা শরীরে ক্ষতচিহ্ন নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে খেজুর গাছ।

প্রথমে খেজুর গাছের পাতা পরিষ্কার করতে হয়, অনেকটা বাবড়ি চুল ছাঁটার মতো। এরপর গাছের গায়ে লম্বা হয়ে যাওয়া কাঁটাগুলো পরিষ্কার করা। তারপর ‘চাঁচ দেওয়া’। খিল লাগানো এবং ভাড় টাঙ্গানো পর্যন্ত গাছিকে তদারকি করতে হয়।

বছরে একবার খেজুর গাছকে ক্ষতচিহ্ন পরিষ্কার করে দেওয়া হয়।তাও আবার রস সংগ্রহের জন্যে। এ সকল কাজ করে গাছিরা। আর তার জন্যে লাগে ধারালো দা যন্ত্র ও দড়ি রাখার টোং।

বেশিরভাগ গ্রামে রাস্তার দু’ধারে ও জমির আইলে খেজুর গাছ বেশি উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। আবার শতক থেকে বিঘা বিঘা জমিতে লাগান খেজুর গাছ।তবে সবচেয়ে বেশি খেজুর গাছ রয়েছে যশোর জেলাতে।

সারা বাংলাদেশে খেজুরের রসের জন্যে বিখ্যাত এই জেলাটি। বলা হয়, যশোরের যশ, খেজুরের রস। শীতের রিক্ততা বাড়ছে অর্থাৎ শীতকাল শুরু হয়েছে।এখনি সময় হয়েছে গাছিদের গাছ থেকে খেজুরের রস সংগ্রহ করার।

একটি খেজুর গাছে রস আনতে একজন গাছিকে কমপক্ষে চারবার গাছে উঠতে হয়। ভোর সকালে, ফজরের আযান দেওয়ার আগেই গাছিরা চলে আসে রসের ভাড় পাড়তে। কনকনি শীতে রস ভাড় থেকে রস আনার পরে তারা মনে একটা প্রশান্তি খুজে পায়। বাড়িতে আনার সাথে সাথেই এলাকার মানুষের কাছেই রস বিক্রি হয়ে যায়। গাছিরা নিজের পরিবারে খাওয়ার জন্যে ও গুড় করার জন্যেও রেখে দেয় রস। আবার রস সংগ্রহের একদিন আগেই অনেকে অর্ডার দিয়ে রাখে।

গ্রামাঞ্চলে শীত আসে এক ভিন্ন আমেজে।ভোর রাতে উঠে অনেকে কৃষি কাজে যাওয়ার জন্যে আবার কেউবা রস সংগ্রহের কাজে। মা-বোন-চাচিরা ওঠে ঘর গোছানোর কাজে।প্রায় শীতের রাতে ও সকালে একটি মহল্লার সবাই একসাথে বসে আগুন করে তাপ নিতে থাকে। খেজুর গাছের রস থেকে গুড় বানানোর সময় শিশু থেকে শুরু করে বালক-বালিকারা গুড় খাবার জন্য হুড়োহুড়ি সৃষ্টি করে। যেন এক অপরূপ গ্রামের দৃশ্য যা এখন শুধুই স্মৃতি। উনুনের পাশে বসে রস খাওয়া, গুড় বানানে দেখা এটা যশোরের এক ঐতিহ্য।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

সম্পর্কিত নিবন্ধ

গোদাগাড়ীতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা

মোঃ মাসুদ আলম, ব্যুরো চীফ রাজশাহী: ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ সোমবার গোদাগাড়ী উপজেলার রিশিকুল ইউনিয়নের অন্তর্গত নোন্দাপুর মহালেন নামক এলাকায়...

নড়াইলে ৫২৪ মণ্ডপে দুর্গাপূজার মু’র্তি  তৈরিতে ব্যস্ত শিল্পিরা

সাজ্জাদ তুহিন নড়াইল প্রতিনিধি : নড়াইলে সনাতনীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা সামনে রেখে মুর্তি তৈরিতে ব্যস্ত সময়...

রামগড়ে সুবিধা ব’ঞ্চিত শিশুদের শিক্ষা সামগ্রী বিতরন

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি: খাগড়াছড়ি রামগড়ে পার্বত্য জেলা শিশু উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সুবিধা বঞ্চিত  শিশুদের শিক্ষা উপকরণ ও দরিদ্র অভিভাবকদের আয়...

বাগেরহাটে ৪টি সংসদীয় আসন পু”নর্বহালের দা”বিতে সকাল সন্ধ্যা হরতাল চলছে

আশিক, বাগেরহাট(মোংলা) প্রতিনিধি:  হরতালের অংশ হিসেবে নেতাকর্মীরা সকাল সাড়ে আটটার দিকে জেলা নির্বাচন অফিসের প্রধান ফটকে তালা মেরে দেয়।...