যশোরের কেশবপুরে নেটজ বাংলাদেশ ও বিএমজেড এর সহায়তায় মানব কল্যাণ পরিষদ (এমকেপি) কর্তৃক পরিচালিত ‘নারী অধিকার ও অংশগ্রহণমূলক সুশাসন শক্তিশালী করণে প্রান্তিক জনগোষ্ঠির নারী ও কিশোরীদের মানবাধিকার উন্নয়নে কমিটির ২৫ সদস্যের সিএসও'র সাথে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার ৪ নভেম্বর সকাল ১০ টায় কেশবপুর পৌর বাড়ি মালিক সমিতির কার্যালয়ে সাংবাদিক মোঃ হারুনার রশীদ বুলবুল এর সভাপতিত্বে ও হোপ প্রকল্প সমন্বয়কারী খালিদ হাসান এর সঞ্চালনায় রিই'ব এর আয়োজনে নেটজ বাংলাদেশ ও বিএমজেড এর সহায়তায় ওই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত বক্তাগণ নারী,কিশোরি ও প্রান্তিক মানুষদের মানিবাধকার বিষয়ক আলোচনা করেন।
উক্ত সভায় রিইব ও প্রকল্প পরিচিতি হোপ প্রকল্পের মানবাধিকার সুরক্ষা দলের কার্যাবলী তুলে ধরে বক্তব্য দেন হোপ প্রকল্প সমন্বয়কারী খালিদ হাসান।
সামগ্রিক উদ্দেশ্য বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বিশেষ করে নারী ও কন্যা শিশু এবং সংখ্যালঘু ও আদিবাসীরা সবচেয়ে বেশি মানবাধিকার বঞ্চিত হয়। তাদের সামাজিক অংশগ্রহন কম থাকায় তারা নির্যাতন ও সহিংসতার শিকার হয়। এর প্রেক্ষিতে প্রকল্প কার্যক্রমের অংশ হিসেবে কর্ম এলাকা গুলোতে গ্রাম, ইউনিয়ন, উপজেলা, এবং জেলা পর্যায়ে মানবাধিকার সুরক্ষা দল গঠন করা হয়েছে।
যার প্রতিটা দলে বিভিন্ন ক্যাটাগরির মানবাধিকার কর্মির সংখ্যা হবে ২৫ জন। পাশাপাশি কর্ম এলাকার কিছু মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাছাই করে প্রতিটা স্কুল থেকে ২৫ জন শিক্ষার্থীদের নিয়ে ফোরাম গঠন করা হবে। শিক্ষার্থী ফোরামগুলো গঠনতান্ত্রিক নীতিমালায় কাজ করবে এবং মানবাধিকার, জেন্ডার সমতা, পারিবারিক ও সামাজিক দ্বন্দ্ব নিরসনকল্পে সচেতনতা বৃদ্ধি সহ সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহন এবং পরিবর্তনশীল সমাজিক অবকাঠামো প্রতিষ্ঠায় চেঞ্জ এজেন্ট হিসেবে কাজ করবে।
শিক্ষার্থী ফোরামের মধ্য থেকে সংস্কৃতিতে পারদর্শী শিক্ষার্থীদের নিয়ে থিয়েটার গ্রুপ গঠন করা হবে এবং তাদের সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড এবং নাট্যদল গঠনে দক্ষ ও সক্ষম করে গড়ে তোলা হবে। থিয়েটার গ্রুপ বিভিন্ন সমসাময়িক বিষয়ের উপর জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে স্ক্রিপ তৈরি করে পথনাটক প্রদর্শনীর মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধিতে অবদান রাখবে।
এছাড়া শিক্ষার্থী ফোরামের মধ্য থেকে ছাত্রীদের নিয়ে সেল্ফ ডিফেন্স গ্রুপ গঠন করা হবে যাদের আত্মরক্ষার বিভিন্ন কৌশলের উপর ক্যারাটে প্রশিক্ষন দেয়া হবে।
শিক্ষক ও স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটিকেও কার্যক্রমের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত করা হবে যাতে মানবাধিকার রক্ষায় তারাও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং প্রতিষ্ঠানের বাইরে কাজ করতে পারে। কর্ম এলাকায় লক্ষ্যিত জনগোষ্ঠীর প্রতি মানবাধিকার লঙ্ঘিতকর কোন ঘটনা ঘটলে প্রকল্পের পক্ষ থেকে নির্যাতনের স্বীকার ব্যাক্তিকে র্যাপিড সাপোর্ট নিশ্চিত করা হবে।
এছাড়াও মানবাধিকার সুরক্ষায় নিবেদিতদের তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ বিষয়ক ধারনা দেয়া হবে যাতে তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে এডভোকেসিতে অবদান রাখতে পারে। সর্বোপরি কর্ম এলাকার গ্রাম, ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে উল্লেখিত কার্যক্রম বাস্তবায়িত হলে রাষ্ট্রে নাগরিক অধিকার-দায়িত্ববোধ বৃদ্ধি পাবে যা বৈষম্যহীন, সুশৃঙ্খল একটি ন্যায্য ও সমৃদ্ধ সাম্য সমাজ প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে সভায় সাংবাদিক, সমাজসেবক, শিক্ষক, আইনজীবী, দলিত প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। এসময় ২৫ সদস্য সিএসও কমিটির সকলে উপস্থিত ছিলেন।
উক্ত সভায় বক্তব্য দেন বিশিষ্ট উন্নয়ন কর্মী সৈয়দ আকমল হোসেন, সাংবাদিক প্রদীপ কুমার মোদক মানিক, ইমরান হোসেন, আবু সালেহ মাসউদ হাসান, এস আর সাঈদ। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন সুফিয়া পারভিন শিখা, শাহনাজ পারভিন, বাসন্তি দাস, মুক্তি দাস, উজ্জ্বল দাস, সুজন দাসসহ প্রমুখ।