Thursday, November 6, 2025

কালিয়া বারইপাড়া সেতুর নির্মাণ কাজ মুখ থুবড়ে পড়েছে 

Date:

Share post:

সাজ্জাদ তুহিন নড়াইল প্রতিনিধি:

নড়াইল কালিয়া উপজেলার বারইপাড়া নবগঙ্গা নদীর ওপর নির্মাণাধীন  বারইপাড়া সেতু নির্মাণের কাজের নেই কোন অগ্রগতি। আড়াই বছরে সেতুটি নির্মাণের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও বারবার মেয়াদ বাড়িয়ে ছয় বছরেও শেষ হয়নি ব্রিজের নির্মাণ কাজ। এখানেই শেষ নয়, সেতুর নকশায় ত্রুটি থাকায় নির্মাণ ব্যয়ও বেড়েছে দ্বিগুণ। এতে ক্ষুব্ধ জনসাধারণ। তবে সড়ক ও জনপথ বিভাগ বলছে, অতিদ্রুতই সেতু নির্মাণের বাকি কাজ শেষ হবে।

জানা গেছে, নড়াইল জেলা শহর থেকে কালিয়া উপজেলা শহর ও ৮টি ইউনিয়নকে পৃথক করে রেখেছে নবগঙ্গা নদী। ফলে যোগাযোগে ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হয় কালিয়া উপজেলাবাসীকে। সেই ভোগান্তি কমাতে উপজেলার বারইপাড়া খেয়াঘাটে ২০১৭ সালে একটি সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।

নড়াইল-কালিয়া সড়কের ২১তম কিলোমিটারে নবগঙ্গা নদীর ওপর  ৬৫১.৮৩ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ১০.২৫ মিটার প্রস্থের বারইপাড়া সেতু নির্মাণের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৬৫ কোটি টাকা। সেতু নির্মাণের কাজ পেয়েছিলেন যশোরের ঠিকাদার মো. মইনুদ্দীন বাসী ও মো. জামিল ইকবাল। কার্যাদেশ অনুযায়ী ২০১৯ সালের জুন মাসে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তখন নির্দিষ্ট সময় শেষে কাজের অগ্রগতি ছিল মাত্র ২৩ শতাংশ।

পরবর্তীতে আরও তিন বার সময় বৃদ্ধি করা হলেও কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। শেষ সময়ে অর্থাৎ ৪র্থ বার মেয়াদ বৃদ্ধির সময় বাঁধে নকশা জটিলতা। সেতুর ছাদের কিছু অংশ নির্মাণ কাজ শেষে দেখা যায় সেতুর নিচ দিয়ে নৌ-যান চলাচল করতে পারছে না। পরে নকশা পরিবর্তন করে উঁচু করে সেতু নির্মাণের জন্য নতুন নকশা অনুমোদন দেওয়া হয়।

এতে ব্যয় বাড়ে প্রায় ৬০ কোটি টাকা। কয়েক দফায় সময় ও অর্থ বেড়ে এখন ব্যয় একশ ৩৫ কোটি ৯২ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। সেতুটি নির্মাণ হলে নড়াইল জেলা শহরের সঙ্গে সরাসরি সড়কপথে যুক্ত হবে কালিয়া উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন। ফলে তাদের ভোগান্তি কমবে। তবে সেতু নির্মাণের ধীরগতিতে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। দ্রুত কাজ শেষ করার আহ্বান তাদের।

কালিয়া উপজেলার পার-কাঞ্চনপুর গ্রামের বাসিন্দা এস কে কামাল বলেন খেয়া পারের জন্য আমাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। অনেক সময় রাত্রে নৌকা পাওয়া যায় না। আমাদের ভোগান্তির যেনো শেষ নেই। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের একটাই আবেদন, দ্রুত সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ করার ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

উপজেলার নোয়াগ্রাম এলাকার কলেজছাত্রী বৃষ্টি ফাতেমা বলেন, বিভিন্ন অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন এ ঘাট দিয়ে পার হয়। অনেক সময় খেয়া পাওয়া যায়, অনেক সময় যায় না। ঘাটগুলো ভালো না, ব্রিজটা হতে যেয়েও হচ্ছে না। স্কুল কলেজে যেতে সমস্যা হয়। কোনো রোগী অসুস্থ হলে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া সম্ভব হয় না। আগুন লাগলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আসতে পারে না। ফেরি পার হয়ে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আসতে আসতে আগুনে সব পুড়ে শেষ হয়ে যায়। আমরা খুব দুরাবস্থায় আছি। ব্রিজটা যাতে দ্রুত হয় সেজন্য কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

এ বিষয়ে নড়াইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.নজরুল ইসলাম বলেন নকশা পরিবর্তনের কারণে আলাদা টেন্ডার করা হয়েছে। টেন্ডারটি লাইভে আছে। আমাদের কাজ চলমান রয়েছে। আশা করি, ২০২৫ সালের ৩০ জুনের মধ্যে সমস্ত কাজ সম্পন্ন করতে পারব।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

সম্পর্কিত নিবন্ধ

মণিরামপুরে অবৈ’ধযানে কে’ড়ে নি’লো ২টি তা’জা প্রা”ন এলাকায় শো”কের ছা”য়া

এস এম তাজাম্মুল,মণিরামপুরঃ মনিরামপুরের খেদাপাড়া ইউনিয়নের চাঁদপুর এলাকার রনজিত দাস যিনি পেশায় একজন কলেজ শিক্ষক ও তার স্ত্রী...

নড়াইলে সদরে ৭ লক্ষ টাকার ন”কল বীজ ধংশ ব্যবসায়ীকে  জ”রিমানা

সাজ্জাদ তুহিন নড়াইল প্রতিনিধি : নড়াইল সদর উপজেলায় বিপুল পরিমাণ ভেজাল বীজ জব্দ ও ধংশ করা হয়েছে। এ ঘটনায়...

যশোরে মির্জা ফখরুল ইসলামের আগমনে মণিরামপুরে শুভেচ্ছা মিছিল-ও লিফলেট বিতরণ

এম ওয়াজেদ আলী, স্টাফ রিপোর্টার: ৬ই নভেম্বর, যশোর টাউনহল ময়দানে, সাবেক মন্ত্রী, ও বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রয়াত...

বগুড়া সদর উপজেলার নিশিন্দারা ইউনিয়ন বিএনপির আয়োজনে আনন্দ মিছিল

রিপন বগুড়া প্রতিনিধি ঃ আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৬ সদর আসনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান মনোনীত হওয়ায় মঙ্গলবার...