Monday, July 28, 2025

মুক্তিযুদ্ধে প্রথম শহীদ চারু বালা করের নবনির্মিত স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদন

Date:

Share post:

স্বীকৃতি বিশ্বাস, যশোরঃ

স্বাধীনতা যুদ্ধে ১৯৭১ সালের ৩রা মার্চ যশোরের প্রথম শহীদ যশোরের গৃহবধূ চারুবালা কর।আজ মহান মুক্তিযুদ্ধে যশোরের প্রথম শহীদ চারুবালা কর-এর ৫৪তম মৃত্যুবার্ষিকী।

শহীদ চারুবালার মৃত্যু দিবস উপলক্ষে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি যশোর জেলা শাখা, জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও নীলগঞ্জ মহাশশ্মান কর্তৃপক্ষের আজ ৩রা মার্চ ( রবিবার)সকাল ১০টায় নীলগঞ্জ মহাশ্মশানে শহীদ চারু বালা করের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নব নির্মিত সমাধিতে পুস্পস্তবক অর্পনের মাধ্যমে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানান হয়।

শ্রদ্ধাঞ্জলি জানান একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি যশোর জেলা শাখা ও জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের নেতৃবৃন্দ।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আফজাল হোসেন দোদুল, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটি যশোর জেলা শাখার সভাপতি হারুন অর রশীদ, সাধারণ সম্পাদক সাজেদ রহমান বকুল, জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার আলম খান দুলু, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মনোতোষ বসু, প্রেসক্লাব যশোরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান মিলন, দৈনিক স্পন্দনের নির্বাহী সম্পাদক মাহবুব আলম লাভলু, সাংবাদিক ও সংস্কৃতিকর্মী প্রণব দাস, শরিফুল ইসলাম, মোয়াজ্জেম হোসেন মঞ্জু, অদিত প্রমুখ।

উল্লেখ্য ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে সারা দেশের মত স্বাধীনতার স্বাদ নিতে উত্তাল ছিল যশোরের জনতা। ২ রা মার্চ ঢাকায় প্রথম স্বাধীন বাংলার জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পর ৩রা মার্চ সকালেই মুক্তিকামী জনতা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে মিছিল বের করে যশোর শহরে। হাজারো মানুষের এই মিছিল শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিলটি রেলরোডে পৌঁছালে খাদ্য গুদামের সামনে পাক বাহিনীর অবস্থান দেখে বিক্ষুব্ধ জনতা সার্কিট হাউজ অভিমুখে রওনা হয়। সার্কিট হাউজেও পাক আর্মিদের দেখে সেখানে আক্রমনের প্রস্তুতি নেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। তখন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক শহীদ মশিউর রহমান সবাইকে শান্ত করে ঈদগাহ ময়দানে অবস্থান নেন। মধ্য দুপুরের দিকে খবর আসে পাক বাহিনী টেলিফোন ভবন দখল নিতে যাচ্ছে। তখন সাথে সাথে সংগ্রামী জনতা তা প্রতিহত করতে অগ্রসর হয়। বিক্ষোভকারী দল টেলিফোন ভবনের সামনে পৌঁছালে ভবনের ছাদ থেকে পাক বাহিনী আতর্কিতভাবে গুলি চালায়। গুলিতে টেলিফোন ভবনের পাশেই স্বামীর সাথে বসবাস করা নিঃসন্তান চারুবালা কর নিহত হন। নিহত চারুবালার লাশ নিয়ে রাখা হয় যশোর সদর হাসপাতাল মর্গে এবং লাশ হস্তান্তরে বাঁধ সাধে পাক আর্মি। তখন মশিউর রহমান পাক আর্মিদের সাথে বিতর্কে জড়িয়ে বলেন, আমার মায়ের লাশ আমি নিয়ে যাব। জনতার বিক্ষোভের মুখে পাক বাহিনী লাশ হস্তান্তর করতেবাধ্য হয়।

কমপক্ষে ২৫ হাজার মুক্তিকামী মানুষ চারুবালার মৃতদেহ নিয়ে নীলগঞ্জ শ্মশানে শেষকৃত্য করেন। দূর্ভাগ্যজনক সত্য যে,যশোরের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের প্রথম শহীদ চারুবালা কর আজও অজানা এক ইতিহাস। পালন করা হয়না তার মৃত্যু দিবস। তবে চারুবালার মৃত্যু ছিল যশোরের স্বাধীনতাকামী মানুষের কাছে এক অনুপ্রেরণা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

সম্পর্কিত নিবন্ধ

মালদ্বীপের ৬০তম স্বাধীনতা দিবসে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ভারতের প্রধানমন্ত্রী

ভারত থেকে নিউজ দাতা মনোয়ার ইমাম: আজ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুজ্জুই এর আমন্ত্রণে, সেদেশের মাটিতে...

ভোলায় সেনাসদস্য আনোয়ারের বিরুদ্ধে কোর্ট মার্শালের আদেশ

আরিফা হক,গাজীপুর প্রতিনিধি : হত্যা চেষ্টা ও ছিনতাই মামলার প্রধান আসামি সেনাবাহিনীর সদস্য আনোয়ার হোসেন (সৈনিক নং ১২৩৮৩৬৭) এর...

শ্রীপুর সদর ইউনিয়ন বিএনপির কাউন্সিল নির্বাচন অনুষ্ঠিত 

মোঃ এমদাদ,মাগুরা প্রতিনিধিঃ মাগুরার শ্রীপুর সদর ইউনিয়ন বিএনপির কাউন্সিল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে । শনিবার শ্রীপুর সরকারি ডিগ্রী কলেজে অনুষ্ঠিত-সকাল দশটা...

নড়াইলে এক সহানুভূতির হাত বদলে দিচ্ছে শত তরুণের ভবিষ্যৎ

সাজ্জাদ তুহিন,নড়াইল প্রতিনিধিঃ জীবনের সংগ্রাম ও হতাশার অভিজ্ঞতা থেকেই সৌরভ বিশ্বাস উপলব্ধি করেছেন, মানুষের জীবনে সময়মতো একটি সহানুভূতির হাত...