Saturday, July 26, 2025

অপু দাশের পাশে দাঁড়ালেন শিক্ষক  ইউএনও ভুমি অফিসার এমপির সহযোগিতা কাম্য

Date:

Share post:

তহিদুল ইসলাম, মণিরামপুর উপজেলা প্রতিনিধিঃ
যশোরের মনিরামপুরের অপু দাস শতবাধা—বিপত্তিকে পেরিয়ে জয় করেছে সাফল্য। তিনি চলতি ২০২৩—২০২৪ শিক্ষা—বর্ষে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় ৭৫ নম্বর পেয়ে ফরিদপুর  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। অদম্য ইচ্ছাশক্তি কঠোর অধ্যবসায়ের কাছে হার মেনেছে দ্বারিদ্রতা। শতবাধা বিপত্তিকে পেরিয়ে ছিনিয়ে এনেছেন সাফল্য।
অপু দাস উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা খানপুর গ্রামের ঋষি পল্লীর অসিৎ দাস ও সাধনা দাসের ছেলে। দু্ই ভাইয়ের মধ্যে অপু বড়। অপু দাস ছোট বেলা থেকেই খুব মেধাবী। পড়া—লেখার প্রতি প্রচন্ড আগ্রহ  তার। ছেলের আগ্রহ দেখে পিতা—মাতা কষ্ট ক্লেশ করে দুই ছেলেকে লেখাপড়া শিখাচ্ছেন। অপুর পিতা অসিত দাস ছোট বেলা থেকেই জুতা সেলাই— ও কালি করার কাজ করে থাকেন। তিনি বর্তমানে মনিরামপুর বাজারের রাজগঞ্জ মোড়ে রাস্তার পাশে চটের উপর বসে জুতা সেলাই ও কালি করার কাজ করছেন।  জমি জমা বলতে নিজের পৈতৃক ভিটেটুকুও নেই তাদের। সহায় সম্বলহীন অপুর পিতা  অসিৎ দাস কাজের খোঁজে এক আত্মীয়ের মাধ্যমে প্রায় ৪০ বছর আগে খুলনার ডুমুরিয়া থেকে মনিরামপুরে এসেছিলেন। কাজ করতে করতে ওই গ্রামের সাধনা দাসকে বিয়ে করে এখানেই থেকে যান অসিৎ দাস। শ্বাশুড়ীর দেওয়া তিন শতক জমির উপর ঘর বেঁধে বসবাস করছেন অপুরা। অপুর বড় ভাই তিতাস দাসও খুব মেধাবী । তিনি মনিরামপুর বাজারের একটি ইলেকট্রনিক্সের দোকানে কর্মচারীর কাজ করেন এবং একি সাথে তিনি কেশবপুর সরকারী কলেজে রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিষয়ে অনার্স তৃতীয় বর্ষে  পড়া—লেখা করছেন।
অপু দাস ছোট বেলা থেকেই কৃতিত্বেও স্বাক্ষর রেখেছেন সবখানে। স্থানীয় খানপুর ঋষি পল্লীর ব্রাক সেন্টার থেকে ৫ম শ্রেনি পাশ করে মনিরামপুর সরকারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন।সেখান থেকে ২০২০সালে এসএসসি ও  মনিরামপুর সরকারী কলেজ থেকে ২০২২ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে  জিপিএ—৫.০০ পেয়ে  উত্তীর্ন হন।এরপর চলতি ২০২৩—২০২৪ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৭৫ নম্বর পেয়ে ফরিদপুর  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পান।
অপু দাস বলেন,আমার জীবনের বড় আশা ছিল আমি একজন চিকিৎসক হবো ।দুঃখী ও অসহায় মানুষের পাশে দাড়াবো।সেই লক্ষ্য নিয়ে আমি চেষ্টা করে গেছি। হয়তো ভর্তির সুযোগ পেয়েছি কিন্তু সামনে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। জানি না আমি কিভাবে মোকাবেলা করবো। আমার অসহায় পিতা—মাতা কিভাবে কি করবেন সেটি আমাকে ভাবিয়ে তুলছে। পিতা—মাতা ভাই শিক্ষক,বন্ধু—বান্ধবসহ সকলের কাছে ঋনী।আমি সকলের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমার পিতা—মাতা খুব কষ্ট করে থাকেন আমি তাদের মুখে হাসি ফোটাতে চাই।  .মা সাধনা রানী বলেন,আমি অন্য দশ জনের মত আমার ছেলেকে ভালো কাপড় চোপড়,বই—খাতা কিনে দিতে পারিনি। আমাদেও কোন জমি—জমা নেই ।ওর বাবা রাস্তায় বসে জুতা সেলাই কালির কাজ করেন।আমার অপু আজ ডাক্তার হবে এই কথা শুনে ভালো লাগছে কিন্তু ওকে যে কিভাবে আমরা পড়াবো তাই ভাবছি। অপুর পিতা অসিৎ দাস বলেন,আমি লেখা পড়া জানিনে,জীবনের সাথে যুদ্ধ করে বড় হয়েছি।ক্ষেত খুলা নেই,জুতার কাজ কেওর সংসার চালাই।ওরা অনেক কষ্ট কেও লেখাপড়া করছে বাবা হয়ে বলতে লজ্জা পাচ্ছি।
শুনিছি অপুরি পড়াতি পারলিসরকারী  হাসপাতালের অনেক বড় ডাক্তার হবে।কিন্তু অিামি কিভাবে পড়াবানে। প্রতিবেশি মিলন দাস বলেন,অপু পড়ালেখায় খুব ভালো। পড়া লেখো ছাড়া ও অন্য কিছু বোঝে না ।থার ভালেঅ ফলাফলে আমরা এলাকা বাসী খুব খুশী ।আমদের পাড়ায় একজন বড় ডাক্তার হবে। প্রতিবেশী গংঙগা রাণী দাস বলেন,অপু খুব শান্ত স্বভাবের। পড়া লেখার জন্যিই ওর মা—বাবা খুব কষ্ট করে । ওর মা টায়ার টিউব—কাটার কাজ করে।ওর বাবা বাজারে জুতা সেলাই কালির কাজ করে ।ওরা খুব অভাবী। অপুর শিক্ষক অধ্যাপক বাবুল আকতার বলেন,কঠোর অধ্যবসায় ও ও ইচ্ছা শক্তি দিয়ে যে সব কিছু অর্জন করা যায় তার উজ্বজল দৃষ্টান্ত হলো অপু দাস। দ্বারিদ্রতা হার মেনেছে তার ইচ্ছা শক্তির কাছে।আমি তার সর্বাঙ্গীন সাফল্য ও মঙ্গল কামনা করি। আমি তার সামনে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য বিত্তবানদের দৃষ্টি আকর্ষন করছি। সোশ্যাল মিডিয়ায় তার সাফল্য অর্জনের চিত্র প্রভাষক, ও সাংবাদিক বাবুল আক্তার আপলোড করার পরেই আলোচনায় আসে এই গরীব অসহায় পরিবারের জিবনী।অপু দাস এর সাফল্য অর্জনের খবর সুনে খোঁজখবর নেন।
মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার  জাকির হোসেন,মণিরামপুর সহকারী কমিশনার (ভুমি) আলী হাসান, মণিরামপুর থানা ইনচার্জ এবিএম মেহেদী মাসুদ।এবিষয়ে অপু দাসের শিক্ষক  প্রভাষক বাবুল আক্তার, ও অপু দাসের বাবা, যশোর (০৫)  আসনের মানবিক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব এসএম ইয়াকুব আলীর সহযোগিতা কামনা করেছেন।
অপু দাসের ভর্তি খরচ,মণিরামপুর থানা ইনচার্জ এবিএম মেহেদী মাসুদ দিতে চেয়েছেন। কিন্তু অপু দাসের ডাক্তারী পড়াশুনার প্রথম ধাপেই একটি কংকাল প্রয়োজন।যশোর (০৫) মণিরামপুর আসনের সংসদ সদস্য মোবাইল ফোনে গণমাধ্যমের দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানায়,আমি অপু দাসের সাফল্য অর্জনের বিষয়ে জানতে পেরেছি,অপু দাস আমাদের মুখ উজ্জ্বল করেছে,সে গরীব ঘরের সন্তান হয়েও এতো বড়ো সাফল্য অর্জন করেছে।আমি তার পাসে আছি এবং থাকবো।সার্ব সহযোগিতা করা হবে অপু দাস কে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

সম্পর্কিত নিবন্ধ

ডায়মন্ড হারবার জেলা পুলিশের উদ্যেগে র’ক্তদান কর্মসূচি মগরাহাট থানাতে

কলকাতা থেকে নিউজ দাতা মনোয়ার ইমাম: আজ বৈকালে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার মগরাহাট থানার উদ্যোগে একটি রক্তদান কর্মসূচি পালন...

যশোরে রামনগর ইউনিয়ন পরিষদে স্ব’ল্পমূল্যে টিসিবির পণ্য বিতরণ

ওয়াজেদ আলী,স্টাফ রিপোর্টার: যশোর সদর উপজেলার রামনগর ইউনিয়ন পরিষদে স্বল্পমূল্যের কার্ডধারীদের মাঝে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এর পণ্যসামগ্রী...

টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন কলকাতার শহরের বহু এলাকা

কলকাতা থেকে নিউজ দাতা মনোয়ার ইমাম: গতকাল দিল্লীর মৌসম ভবন থেকে আগাম সতর্কতা জারি হিসেবে বলা হয়েছিল যে আগামী...

ট্রেনিং বিমান দু’র্ঘটনায় নি’হতদের স্ম’রণে শ্রীনগর উপজেলা প্রেসক্লাবের দোয়া মাহফিল

শরিফুল খান প্লাবন: শ্রীনগর উপজেলা প্রেসক্লাবের উদ্যোগে সম্প্রতি রাজধানীর উত্তরা দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ট্রেনিং ফাইটার বিমান বিধ্বস্ত...