শাহিদুর রহমান, দিরাই উপজেলা প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জ—২আসনটিতে দিরাই শাল্লা উপজেলা নিয়ে গঠিত। ৬৮২ বর্গ কিলোমিটার নিয়ে সুনামগঞ্জ—২ আসনের মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৮৪ হাজার ৬৭২ জন। ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিজয়ী হবার পর থেকে একক আধিপত্যে এই আসনটিতে আওয়ামী লীগের। দলটির প্রয়াত নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এ আসনে সাত বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরজন্য ভোটের রাজনীতিতে এই আসনটি ‘সুরঞ্জিতের আসন’ হিসেবে পরিচিত। তার মৃত্যুর পর ৩০ মার্চ ২০১৭ অনুষ্ঠিত উপ—নির্বাচনে এবং এরপর ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হবার পর থেকে তাঁর স্ত্রী ড. জয়া সেন গুপ্তা এই আসটিতে সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ প্রয়াত সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মৃত্যুর পর থেকে আওয়ামী লীগের কোন্দল, দ্বিধা—দ্বন্দ্বে বিভক্ত হয়ে পড়ে আসনের নেতাকর্মীরা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী বিভিন্ন নেতা কর্মীদের আলাদা আলাদা ভাবে গণসংযোগ করতে দেখা যায়।
এই ধারাবাহিকতায় আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুনামগঞ্জ—২ আসনে (দিরাই—শাল্লা) ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ১১ জন দলীয় মনোনয়নের প্রত্যাশায় ফরম সংগ্রহ করে জমা দিয়েছেন। আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনে কে হচ্ছেন নৌকার মাঝি তা জানতে নেতাকর্মী ও ভোটারদের আগ্রহের কোন কমতি নেই। আসনটি থেকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমা দিয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ড. জয়া সেনগুপ্তা, শাল্লা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মাহমুদ (আল আমিন চৌধুরী), জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ সভাপতি, শাল্লা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট অবনী মোহন দাস, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সদস্য ব্যারিস্টার অনুকূল তালুকদার ডাল্টন, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য প্রদ্যুৎ কুমার তালুকদার, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুবীর নন্দী দাস, অতিরিক্ত সচিব সাবেক জেলা প্রশাসক মো. মিজানুর রহমান, যুক্তরাজ্য শ্রমিক লীগের সভাপতি ড. সামছুল হক চৌধুরী, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামসুল ইসলাম, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ডেপুটি ডিরেক্টর তানভীর তুলি এবং অ্যাডভোকেট রিপা সিনহা।
মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ব্যারিস্টার অনুকূল তালুকদার ডাল্টন বলেন, আমরা বিশ্বাস করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা দিরাই—শাল্লা আসনে একজন উচ্চ শিক্ষিত, সৎ, কর্মঠ, ক্লিন ইমেজ ও পরিচ্ছন্ন প্রার্থীকে মনোনয়ন দেবেন— যিনি দিরাই—শাল্লার মানুষের আশা—আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করতে পারবেন।
মনোনয়ন প্রত্যাশী শাল্লা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মাহমুদ (আল আমিন চৌধুরী) বলেন, আমি সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের শিষ্য ছিলাম, আমরা দুইবার কাকীমাকে নির্বাচিত করেছি। পরবর্তীতে উনার অসুস্থার জন্য এলাকায় যোগাযোগের ঘাটতি পড়ে। এজন্য জনগণ আমাকে চায়, তাদের দাবিতেই আমি প্রার্থী হয়েছি। আমি কাকীমার অনুমতি নিয়েই প্রার্থী হয়েছি। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত যে উন্নয়নের ধারা শুরু করে গিয়েছিলেন, সেটা শেষ করার লক্ষ্যে আমি প্রার্থী হয়েছি। আমি উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেছি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আমার অগাধ বিশ্বাস রয়েছে।
এ বিষয়ে কিছু বলতে চাননি ড. জয়া সেনগুপ্তা। তিনি বললেন তফসিল ঘোষণা হয়েছে— এখন আর কিছু বলতে চাই না। মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও যারা বোর্ডে আছেন তাদের উপর সবকিছু নির্ভর করছে।