সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে মেয়েকে ইভটিজিং এর প্রতিবাদ করায় মানবজমিন পত্রিকার স্থানীয় প্রতিনিধি সাংবাদিক বাবু মির্জাকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এলাকা জুড়ে নিন্দার ঝড় বইছে। এ ব্যাপারে দায়ের করা মামলায় কিশোর গ্যাংয়ের ৩ জন সহ ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
আটককৃতরা হলো ব্রাহ্মণ গ্রামের মৃত ইসমাইল ভূঁইয়ার ছেলে ইভটিজার আজিজল হক হৃদয় (২০), গোপিনাথপুরের রফিকুল ইসলাম ভুঁইয়ার ছেলে কিশোর গ্যাং লিডার রোকন ভুঁইয়া (২৫), খোকশাবাড়ি গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে আশরাফুল ইসলাম (২৭), রফিকুল ইসলাম ভুঁইয়ার বড় ছেলে রাশেদ উদ্দিন ভুঁইয়া (৪২)। আটককৃতরা আত্বীয় হওয়ায় বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে থানা আওয়ামীলীগের কয়েক জন প্রভাবশালী নেতা নানা রকম ষড়যন্ত্র ও বাদী এবং তার ভাতিজা একুশে টেলিভিশনের সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি স্বপন মির্জাকে হত্যার হুমকি, ভয়ভীতি দেখাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
পুলিশ ও নির্যাতীতরা জানান, দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার চৌহালী প্রতিনিধি বাবু মির্জার মেয়ে এনায়েতপুর আইসিএল স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্রী (১৫) কে বখাটে হৃদয় উত্যাক্ত করতো। তার স্বজনেরা বার বার নিষেধ করলেও মানেনি। মঙ্গলবার বিকেলে স্কুল শেষে ক্লাস থেকে বের হলে বখাটে হৃদয় সহ ৬ জন মিলে আধা ঘন্টা আটকে রাখে। মেয়েটির হাত ধরে শ্রীলতাহানীর চেষ্টা করে। খবর পেয়ে তার চাচা লিটন মির্জা আসলে ছেড়ে দেয়। এরপর বাবা বাবু মির্জা এসে মেয়েকে কেন উত্তপ্ত করা হচ্ছে প্রশ্ন করলে ইভটিজার হৃদয় তাকে তেড়ে আসে। সে তখন এলাকার কিশোরগ্যাং লিডার রোকন ১৫/২০ জন সহযোগী নিয়ে তার উপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে সাংবাদিক বাবু মির্জা তার বোনের বাড়িতে দৌড়ে পালালে সেখানেও তারা মারধর করে।
এ ঘটনায় অভিযোগ করা হলে সন্ধ্যার পর ঘটনাস্থল হতে পুলিশ এসে ওই ৪ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এরপর তাদের ছাড়িয়ে নিতে থানা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা প্রভাব বিস্তার নানা তদবির শুরু করে। এ ঘটনায় সাংবাদিক বাবু মির্জা ৭ জন নামীয় ও অজ্ঞাত আরো ১০/১৫ জনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করে। পুলিশ ও বাদীকে তদবির করে মামলার আপস করতে না পারায় থানা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি রাশেদুল ইসলাম সিরাজ, যুগ্ন সম্পাদক আমিনুল ইসলাম লালবাবু আটক আওয়ামীলীগ নেতা কলেজ শিক্ষক রাশেদ উদ্দিনের পক্ষে মিছিল করে। এ নিয়েও এলাকাজুড়ে নিন্দার ঝড় বইছে।
বাবু মির্জা অভিযোগ করে বলেন, একুশে টেলিভিশনের সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি আমার ভাতিজা সাংবাদিক স্বপন মির্জা আমার মেয়ের উত্যাক্তের প্রতিবাদ করায় তাকে জড়িয়েও এই আওয়ামী লীগ নেতারা মিথ্যা বানোয়াট অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমাদেরকে দেয়া হচ্ছে হত্যার হুমকি। মেয়ের উত্যাক্তের প্রতিবাদ করতে গিয়ে আমরা এখন নিরাপত্তায় হীনতায় ভুগছি। আমি দ্রুত বাকি আসামী ও তাদের গডফ্যাদার আওয়ামী লীগ নেতা রাশিদুল ইসলাম সিরাজ ও সন্ত্রাসী লালবাবুকে আটকের দাবি জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে ওসি আব্দুর রাজ্জাক জানান, এ ঘটনায় চারজনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদেরও আটকের অভিযান চলছে।