সিরাজগঞ্জে অফিস ফাঁকি দেওয়া সিএইসসিপির বিরুদ্ধে ৩সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন 

লেখক: Rakib hossain
প্রকাশ: 7 months ago

মোঃ লুৎফর রহমান লিটন:
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলাধীন কাওয়াকোলা ইউনিয়নে কাওয়াকোলা কমিউনিটি শুক্রবার ও সরকারি ছুটি ব্যতিত সপ্তাহে ৬দিন খোলা রেখে নিয়মিত স্বাস্থ্যসেবা প্রদান না করে মাসের পর মাস অফিস ফাঁকি দেওয়া সিএইসসিপির বিরুদ্ধে সিভিল সার্জন বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিলের পর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ৩সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিরাজগঞ্জ সদর স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা: জাহিদুল ইসলাম।
কাওয়াকোলা কমিউনিটি শুক্রবার ও সরকারি ছুটি ব্যতিত সপ্তাহে ৬দিন খোলা রেখে নিয়মিত স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করতে ও মাসের পর মাস অফিস ফাঁকি দেওয়া সিএইসসিপির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করতে (১৬ এপ্রিল ২০২৪) তারিখে সিরাজগঞ্জ সিভিল সার্জন বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন কাওয়াকোলাবাসী। অভিযোগ দেওয়ার পরও (২০এপ্রিল ২০২২৪ইং), শনিবারে কাওয়াকোলা কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়ে দেখা, শারিতা মিল্লাত নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে একটি কক্ষে অবস্থিত কাওয়াকোলা কমিউনিটি ক্লিনিক তালাবদ্ধ। সকাল ১০.৪১ মিনিটে দুরদুরান্ত থেকে আগত স্বাস্থ্যসেবা নিতে গর্ভবর্তী, শিশু ও মানুষদের ফিরে যেতে দেখা গেছে।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, বর্তমান সরকার গ্রামের নিম্নআয়ের সাধারণ মানুষের সেবা নিশ্চিত করতে গ্রামীণ চিকিৎসাসেবা কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করেছে। ইতোমধ্যে গ্রামীণ চিকিৎসাসেবাকে অনেকটা এগিয়ে নিয়ে গেছে। ক্লিনিকগুলো থেকে রোগীদের মধ্যে প্রায় ২৭ প্রকার ওষুধও বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। প্রত্যন্ত চরাঞ্চলের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কাওয়াকোলা ৩টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মান করেছে সরকার। জনবলও নিয়োগ দিয়েছে। কিন্তু কমিউনিটি ক্লিনিকে দায়িত্বপ্রাপ্তরা থাকেন শহরে। শহরে থাকার কারনে ৩টি ক্লিনিকে সপ্তাহের প্রতি সোমবার ক্লিনিক খোলা রেখে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সেবা দিয়ে চলে আসে স্বাস্থ্যকর্মীরা। এতে প্রত্যন্ত চরাঞ্চলে অবস্থিত কাওয়াকোলা ইউনিয়নের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে সরকারি স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে।
কমিউনিটি ক্লিনিক সরকারি ছুটির দিন ব্যতিত সপ্তাহে ছয়দিন খোলা রাখার বিধান থাকলেও নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করছেন না কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) বেনজামিন আরিফ উল শাকিল।
কাওয়াকোলা কমিউনিটি ক্লিনিকের দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী সিএইসসিপি আরিফ উল বেনজামিন শাকিল মাসের পর মাস কাওয়াকোলা কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ রেখে নিয়মিতভাবে বেতন ভাতা উত্তোলন করে আসছে। তবে ক্লিনিকে রোগী দেখা খাতাপত্র সহ সকল কাগজপত্র শহরের বাসায় রেখে সপ্তাহে ৬দিন খাতায় ভুয়া রোগী লিখে রাখেন। ভুয়া রোগীর নামের পার্শ্বে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ লিখে রাখেন। ভুয়া রোগির নামের পার্শ্বে ওষুধগুলো আত্মসাত করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
২০২০ সালে কাওয়াকোলা কমিউনিটি ক্লিনিক নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার পুর্বে সপ্তাহে ১দিন (সোমবার) ক্লিনিক খোলা থাকত। বর্তমানে শারিতা মিল্লাত নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে স্থানান্তরিত হলেও এখান থেকে প্রতি মাসে ১দিন ক্লিনিক খোলা থাকে। এতে করে দুর্গম চরাঞ্চলে স্বাস্থ্য সেবা পাচ্ছে না গ্ৰামীণ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর হতদরিদ্র অসহায়রা।
ভুক্তভোগীরা ব্যক্তিগতভাবে সিএইসসিপি  বেনজামিন আরিফ উল শাকিল মোবাইল করলে, তিনি বলেন, আমাকে আমার কর্মকর্তা সদর হাসপাতালে রেখে দিয়েছেন। কাওয়াকোলা কমিউনিটি ক্লিনিক খোলা রাখতে চাইলে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা এর অনুমতি নিয়ে পুনরায় চালু করতে হবে।
সিরাজগঞ্জ সদর স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা: জাহিদুল ইসলাম বলেন, অভিযোগের আলোকে মাসের পর মাস অফিস ফাঁকি দেওয়া সিএইসসিপি আরিফ উল বেনজামিন শাকিল এর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করতে ৩সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থ্য গ্রহন করা হবে।
সিরাজগঞ্জ ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. আ.ফ.ম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, কাওয়াকোলা কমিউনিটি ক্লিনিকের বিষয়ে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মাধ্যমে সিরাজগঞ্জ সদর স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা গ্রহন করতে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
error: Content is protected !!