স্বীকৃতি বিশ্বাস, যশোরঃ
বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক কমরেড ইকবাল কবির জাহিদ বলেন,
গতকাল প্রধান উপদেষ্টার জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষনে নির্বাচনের ট্রেন চালুর কথা বললেও সুস্পষ্ট রূপরেখা নেই। বরং বক্তব্য বিভ্রান্তিকর সংস্কারের নামে কোন দীর্ঘসূত্রিতা জনগণ মেনে নেবে না।
ক্ষমতার ১০০ দিন পার হলেও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়ন, জুলাই- আগস্টের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার, ব্যাংক লুটন করে টাকা পাচারকারীদের গ্রেপ্তার ও টাকা উদ্ধারে আসাব্যাঞ্জক সফলতা দেখাতে পারেনি। এমন কি, আহতদের চিকিৎসা নিয়েও রয়েছে প্রচন্ড ক্ষোভ। ফলে সরকারের ভূমিকায় পারজিত ও ষড়যন্ত্রের শক্তিকে পথ করে দিচ্ছে।
আজ সোমবার (১৮ ই নভেম্বর) বিকাল ৪ টায় পার্টির জেলা সম্পাদক কমরেড তসলিম উর রহমানের সভাপতিত্বে যশোরের মুন্সি মেহেরউল্লা ময়দানে বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ যশোর জেলা কমিটির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত জনসভায় বক্তৃতা কালে ইকবাল কবির জাহিদ আরও বলেন,ক্ষমতাসীন হবার জন্য আওয়ামীলীগের মত বিএনপি জামায়ত ইসলামী ও ভারতের সমর্থন নিতে ব্যাকুল।দেশে ধর্মের নামে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের তৎপরতার দাপট, সামাজিক শান্তি বিনষ্ট ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপতৎপরতা মোকাবেলায় গণতান্ত্রিক শক্তি ও জনগণের জন্য অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।ছাত্র-গণ অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা শহীদ ও আহতদের শ্রেণী অবস্থান থেকে বোঝা যায়। সেই শ্রেণী স্বার্থের প্রশ্ন সরকারের বিবেচনায় নেই।
সরকার সে পথে হাঁটছে না। এমতো জটিল পরিস্থিতিতে জনগণের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে কমিউনিস্ট বাম গনতান্ত্রিক শক্তি ব্যক্তি ও জনগণকে আন্দোলনের সমবেত হওয়ার ছাড়া বিকল্প নেই ।
পার্টির কেন্দ্রীয় সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য কমরেড অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার বলেন, ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন হটাবার জন্য আমাদের পার্টি বামজোট লাগাতার সংগ্রাম করেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনও একই স্রোতে মিলিত হয়ে ফ্যসিষ্ট সরকারের পতনে সক্ষম হয়েছে। এবারের বন্যায় ব্যাপক ফসল হানির ফলে খাদ্য সংকটের আশংকা দেখা দিয়েছে।কৃষি উৎপাদনকে প্রধান গুরুত্ব দিয়ে কৃষিতে ভর্তুকি বৃদ্ধি,সার,বিজ, সেচের মূল্য কমানো, কৃষি ঋণের সুদ মওকুব সার্টিফিকেট মামলা প্রত্যাহর ও ফসলের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে হবে। এনজিও জর্জরিত দরিদ্র গরিব মানুষের বিরুদ্ধে খেলাপি মামলা তার করতে হবে। তিনি শ্রমিক কৃষক মেহনতি মানুষের প্রতি অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা, বাম গণতান্ত্রিক জোট যশোরের সমন্বয়ক কমরেড জিল্লুর রহমান ভিটু, শ্রমিক নেতা নাজিমউদ্দীন, ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির নেতা গাজী আব্দুল হামিদ, কৃষক নেতা মিজানুর রহমান, নারী নেত্রী বিথীকা বিশ্বাস, যুব নেতা আহাদ আলী মুন্না, ছাত্র নেতা সাইহাম বিশ্বাস অর্ক প্রমুখ। সমগ্র জনসভা পরিচালনা করেন জেলা নেতা কমরেড কামাল হাসান পলাশ।
জনসভা থেকে " দ্রব্য মূল্য কমানো, রেশনিং চালু করা, ভবদহের জলবদ্ধতা নিরসন,ভূমি অফিস রেজিস্ট্রি অফিসের দূর্নীতি বন্ধ, বিদ্যুৎ এর দাম কমানো, ডিজিটাল মিটার বাতিল, মিটার ভাড়া, ডিমান্ড চার্জ, মিনিমাম চার্জ বাতিল, পল্লী বিদ্যুৎ এর নির্যাতন বন্ধ, ভৈরব কপোতাক্ষ সহ সকল নদী সংস্কার, দখল মুক্ত করা, রেল সংগ্রাম কমিটির দাবিতে জেলাময় মাসব্যাপী প্রচার ও বিক্ষোভ মাসের কর্মসূচি ঘোষণা করেন পার্টির জেলা সম্পাদক জনসভার সভাপতি কমরেড তসলিম উর রহমান।