সরকারি কলেজ থেকে বেসরকারি কলেজে ট্রান্সফার অনিশ্চিত  ৯৬ শিক্ষার্থীর এইচএসসি পরীক্ষা

লেখক: Rakib hossain
প্রকাশ: 5 months ago

জাবির আহম্মেদ জিহাদ:
আগামী ৩০ জুন  থেকে সারা  দেশব্যাপী শুরু হতে যাচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি), দাখিল এবং সমমানের পরীক্ষা।
শিক্ষার্থীরা যখন পড়ালেখার সাগরে ডুব দিয়েছে, সারাদিন ভাবছে পরীক্ষায় কখন কি প্রশ্ন আসবে! বারবার পড়াগুলো রিভিশন দিচ্ছে।ঠিক তখনই পরীক্ষার্থীরা  প্রবেশপত্র না পেয়ে  অনিশ্চয়তায় পড়েছেন এক্সাম দিতে পারবেন কিনা!
জামালপুর সদর উপজেলার   বেলটিয়ায় শাহাবুদ্দিন মেমোরিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৯৬ জন শিক্ষার্থীর এখন পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন হয়নি।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) কলেজে গিয়ে পরীক্ষার্থীরা জানতে পারে শাহাবুদ্দিন মেমোরিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের, কলেজ পর্যায়ে সরকারের কোনো অনুমোদন নেই। ফলে তাদের রেজিস্টেশন ও ফরম পুরন হয়নি।
এ ঘটনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে বিরাজ করছে চরম ক্ষোভ ও হতাশা ।
অভিভাবকদের অভিযোগ, তাদের সন্তানরা দীর্ঘদিন ধরে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করেছে। তারা নিয়মিত, বেতন ফিও পরিশোধ করেছে। পরীক্ষার ফরম পূরণ ও রেজিস্টেশন বাবদ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেয়া হয়েছে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। অথচ তাদের ফরম পুরন ও রেজিস্টেশন হয়নি।
তাদের অভিযোগ কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্বহীনতা ও অবহেলার কারণে ৯৬ জন এইচএসসি পরীক্ষার্থীর জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ।  এমন পরিস্থিতিতে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে চরম ক্ষোভ ও দুশ্চিন্তা বিরাজ করছে।
মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ এবং জিহাদ ইসলাম নামক শিক্ষার্থী জানান,  গত ২৩ জুন থেকে আমাদের আগের কলেজ, সরকারি ইসলামপুর কলেজে প্রবেশপত্র বিতরণ করা হয়েছে। আমরা আমাদের নিজ প্রতিষ্ঠানে  গিয়ে জানতে পারি আমাদের প্রবেশপত্র এখনো আসেনি।
২৭ জুন কলেজে গিয়ে পরীক্ষার্থীরা জানতে পারে শাহাবুদ্দিন মেমোরিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের কলেজ পর্যায়ে সরকারের কোনো অনুমোদন নেই । ফলে তাদের রেজিস্টেশন ও ফরম পুরন হয়নি।
শাহাবুদ্দিন মেমোরিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের কথিত উপাধ্যক্ষ হুমায়ুন কবীর জানান, এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ ভালো জানেন। এখানেও রয়েছে শুভঙ্করের ফাঁকি। কারণ স্কুল অ্যান্ড কলেজের কোনো উপাধ্যক্ষের পদ নেই।
শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানা যায়, শাহাবুদ্দিন কলেজের অধিকাংশ ছাত্রছাত্রী সরকারি ইসলামপুর কলেজ থেকে ট্রান্সফার নিয়ে এ কলেজে এসেছে!
কেন বা কি কারনে চলে এসেছে এ বিষয়ে সরকারি ইসলামপুর কলেজের অধ্যাপক মিসেস সাবরিনা বলেন, মূলত টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করলে শিক্ষার্থীদের আমরা পরবর্তী সালে পরীক্ষা দেয়ার জন্য আহবান করি! কিন্তু যতটুক জেনেছি টেস্ট পরীক্ষা শুরুর আগেই এসব ছাত্রছাত্রীরা টিসি নিয়ে অন্য কলেজ থেকে চলে গেছে।
এ বিষয়ে সরকারি ইসলামপুর কলেজের অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীরা বলেন, সরকারি ইসলামপুর কলেজের বোর্ড পরীক্ষার কেন্দ্র পড়ে, ইসলামপুর এম এ সামাদ পারভেজ মহিলা ডিগ্রী কলেজে।  প্রতিবছর এ কলেজের কেন্দ্র খুবই হার্ড হয়। পরীক্ষা তুলনামূলক কঠিন। আর শাহাবুদ্দিন কলেজের পরীক্ষা গুঠাইল হাই স্কুলে হয়। যতটুকু জানি ওই কলেজে শুধু নকল চলে মোবাইল দিয়েও লেখালেখি করা যায়। এর জন্য হয়তোবা সরকারি কলেজ ছেড়ে প্রাইভেট কলেজে টেনান্সাফ নিয়েছে এসব ছাত্রছাত্রীরা।
জামালপুরের সরকারি ইসলামপুর কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিন আহমেদ (অব.) বলেন, ডিগ্রি কলেজ ছাড়া কোন স্কুল এন্ড কলেজের উপাধ্যক্ষের কোন পদ নেই।
এ ঘটনায় পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন শাহাবুদ্দিন মেমোরিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ রেজাউল ইসলাম সেলিম। তিনি বলেন, যেসব শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছে। তাদের সাথে শাহাবুদ্দিন মেমোরিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের কোনো সম্পর্ক নেই ।
তবে টেলিফোনে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে।
এ ঘটনায় অধ্যক্ষ রেজাউল ইসলাম সেলিমকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়েছেন কলেজ গভর্নিং বডি।
error: Content is protected !!