ডেক্স রিপোর্টার, রুবেল হোসেন:
কথায় আছে ‘কারো পৌষ মাস, কারো সর্বনাশ’। শীতকাল ধনীদের কাছে অনেক সুখকর সময় মনে হলেও দুস্থ অসহায় মানুষের কাছে সর্বনাশই।
কারণ, শীতকাল এলেই ধনী বা মধ্যবিত্তরা মধ্যে বাহারি ডিজাইন ও নানা রঙের শীতের পোশাক কেনার ধুম পড়ে যায়। আর যাদের সামান্য একটি শীতের পোশাক কেনার সামর্থ্য নেই, তাদের কাছে শীতকাল মানেই সর্বনাশ।
বরাবরের মতো এবারও এসব অসহায় ও দুস্থ মানুষের পাশে শীতবস্ত্র পৌঁছে দিয়েছে জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন।
এরই অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সকালে ১১.৩০ মিনিটে মাগুরায় শতাধিক কম্বল বিতরণ করা হয়।
জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে সুবিধাবঞ্চিত পথশিশু ও অসহায় দুস্থ মানুষের হাতে কম্বল বিতরণ করেন মাগুরা জোনের জোনাল ম্যানেজার মোঃ মিজানুর রহমান এবং এরিয়া ম্যানেজার মোঃ হুমায়ুন কবির। এবং মাগুরা সদর শাখার শাখা ব্যবস্থাপক মোঃ মুকুল মিয়া, এবং পারনান্দুয়ালি শাখার শাখা ব্যবস্থাপক মোঃ বিল্লাল হোসেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জনাব মোঃ রোকুনুজ্জামান। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসন (শিক্ষা ও আইসিটি) , মাগুরা।
আরো উপস্থিত ছিলেন, জনাব আমিনুল ইসলাম। সরকারি কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, মাগুরা।
মাগুরায় বস্তি ও এর আশপাশের দুস্থ মানুষ জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশনের কম্বল পেয়ে নিজেদের অনুভুতি প্রকাশ করেন এভাবেই, ‘এই শীতে একমাত্র সম্বল আপনাদের কম্বল’।
৮০ বছরের বৃদ্ধ ফুলজান বলেন, ‘আমি ভিক্ষা করি। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন গলিতে গলিতে মানুষের কাছ থেকে যা পায় তাই নিয়ে চাল, ডাল কিনে কোনোমতে চলে’। ছেলে সে বিয়ে করার পর আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। এখন থাকি মাগুরা বস্তিতে। এই যে শীত যাচ্ছে কেউ একটা কাপড় দেয়নি। আজ এই কম্বলই এবারের শীতের একমাত্র সম্বল’।
তার মতোই জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশনের দেওয়া কম্বল গায়ে জড়িয়ে বিলকিস (৭০) বলেন, ‘ভিক্ষা করি না সম্মানের ভয়ে। তাই পত্রিকা বিক্রি করি, খুব ভোরবেলায় ভাইনা মোড় থেকে ২০০ পত্রিকা নিয়ে আসি। রাস্তায় রাস্তায় বিক্রি করি। তা দিয়ে যে টাকা আয় হয় ভাইনার মোড় বস্তিতে থাকি। এই বস্তিতে একরুমের জন্য ৩ হাজার টাকা ভাড়া দিতে হয়। কি করমু? সময় মতো ভাড়া না দিলে বস্তির সর্দার নানান কথা বলে, এমনকি বের করে দিতে চায়। তাই পত্রিকা বেচেই বাকি জীবন কাটিয়ে দিতে চাই’।
তাদের মতোই জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশনের কম্বল পেয়ে নিজেদের আনন্দের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন গীতা রানী (৩০), আদরি (৪৫), জামেনা বেগম (৩৫), ছোট্ট শিশু হাসান(০৭), নাঈম, মাহমুদ আরো অনেকে।