নিউজ ডেক্সঃ
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো পাঁচজনের শরীরে রিওভাইরাস শনাক্ত করেছে ইনস্টিটিউট অব এপিডেমিওলোজি, ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ (আইইডিসিআর)। তবে কারও ক্ষেত্রে তেমন কোনো জটিলতা দেখা যায়নি। ভাইরাসটি নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন বলেন, খেজুরের কাঁচা রস খেয়ে প্রতিবছর নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হন অনেকে। তেমনই লক্ষণ দেখে সম্প্রতি ৪৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করেছে আইইডিসিআর। এদের মধ্যে নিপাহ ভাইরাস না মিললেও পাঁচ জনের শরীরে পাওয়া গেছে রিওভাইরাস।
তিনি আরও জানান, দেশে অনেক এনকেফালাইটিস রোগী পাওয়া গেছে, তবে এর সঠিক কারণ এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। এই গবেষণা এসব রোগীর চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এটি একটি বড় অগ্রগতি, কারণ এনকেফালাইটিসের মতো গুরুতর রোগের কারণ খুঁজে বের করা চিকিৎসা ব্যবস্থায় নতুন দিক উন্মোচন করতে পারে।
রিওভাইরাস মূলত হাঁচি ও কাশির মাধ্যমে ছড়ায় এবং আক্রান্ত হলে শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা, জ্বর, মাথাব্যথা, বমি ও ডায়রিয়া হতে পারে। কখনও কখনও এটি মারাত্মক রূপ নিতে পারে, যেমন নিউমোনিয়া বা এমনকি এনকেফালাইটিস, যা মস্তিষ্কের প্রদাহ হতে পারে। সাধারণত শিশু ও বয়স্করা এই ভাইরাসে বেশি আক্রান্ত হন। বিশেষজ্ঞরা সতর্কতা জারি করেছেন যে, শীতকাল এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের জন্য আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা রিওভাইরাস থেকে সুরক্ষার জন্য শীত মৌসুমে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন। এই সময়ে বিশেষভাবে শিশু ও বয়স্কদের প্রতি যত্নশীল হওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। শীতকালে সঠিক হাইজিন এবং স্বাস্থ্যবিধি পালন রোগের বিস্তার রোধে সহায়ক হতে পারে।
প্রসঙ্গত, রিওভাইরাস বিশ্বে প্রথম ১৯৫০ সালে শনাক্ত হয় এবং শীতকালেই এর প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি ঘটে। তাই সতর্কতা এবং সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে ভাইরাসটির প্রভাব কমানো সম্ভব হতে পারে।
রিওভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শীতকালে বাড়ে, তাই বিশেষজ্ঞরা শীত মৌসুমে আরও বেশি সতর্ক থাকতে পরামর্শ দিয়েছেন। এই ভাইরাসের প্রতি সতর্কতা অবলম্বন এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার মাধ্যমে এর বিস্তার প্রতিরোধ করা সম্ভব। পাশাপাশি, চিকিৎসা গবেষণার মাধ্যমে ভবিষ্যতে রিওভাইরাস সম্পর্কিত আরও তথ্য পাওয়া যাবে, যা চিকিৎসা ব্যবস্থায় আরও উন্নতি আনবে।
বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন দেশে রিওভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে, তবে বাংলাদেশে এই ভাইরাসের নতুন শনাক্ত হওয়া উদ্বেগের কারণ নয়। তবে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং সাবধানতা অবলম্বন করলে এর ঝুঁকি কমানো সম্ভব।