নিজস্ব প্রতিবেদক:
যশোরে মণিরামপুরে ঝাঁপা গ্রামের বিল্লাল হোসেনের মাছের ঘেরে বিদ্যুৎ স্পৃষ্টে ১০ দিনের ব্যবধানে ২ পাহারাদারের মৃত্যু।
ঘের মালিক জরিমানা স্বরূপ জরিমানা সাড়ে ১৫ লাখ টাকা।
নিহত পরিবার ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, উপজেলার ঝাঁপা গ্রামের মৃত ফটিক সরদারের ছেলে আব্দুর রহমান বিল্লালের মাছের ঘেরে গত ৮ মাস ধরে একই গ্রামের মৃত মনিরুদ্দীর ছেলে সৈয়দ গাজী পাহারাদারের কাজ করে আসছে।
১০ ডিসেম্বর সকাল ৭ টার দিকে পাহারাদার সৈয়দ গাজী ঘেরের সেচ পাম্প চালাতে গেলে বিদ্যুৎ স্পষ্টে মারা যায়।
ওই ঘেরের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় একই গ্রামের মুকুল হোসেন লাশটি পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার দিলে গ্রামের লোকজন ছুটে এসে লাশটি উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে যায়।
এর পর মামলা না করার শর্তে দেন দরবার শুরু হয়। এক পর্যায় গ্রামের শত শত মানুযের উপস্থিতিতে মিমাংসার স্বার্থে ঝাঁপা বাজারের একটি গণশালিসী বৈঠক বসে। উভয় পক্ষের দাবীদাওয়ার এক পর্যায় নিহতের দুই কন্যাকে ১০ লাখ টাকা এবং নিহতের স্ত্রীকে ১ লাখ টাকাসহ মোট ১১ লাখ টাকায় (চেকের মাধ্যমে) রফা হয়।
একই সালিশ গত ১০ দিন পূর্বে জরিমানার স্বরুপ মৃত্যু আজিজের পরিবারকে সাড়ে ৪ লাখ টাকার চেকও প্রদান করা হয়েছে। সমুদ্বয় টাকা আগামী ২৩ ডিসেম্বরে ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে এনে জনসম্মুখে নিহত দুই পরিবারের হাতে হস্তান্তর করবেন ঝাঁপা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও শালিসী বৈঠকের প্রধান আলাউদ্দীন আহমেদ।
এ বিষয়ে নিহত এলাকার এলাকাবাসী বলেন, ঘের মালিকের অবহেলার কারনে আজ আমাদের এলাকার ২ ভায়ের মৃত্যি হলো। একই ভাবে গত ১০ দিন পূর্বে আজিজ নামে এক ব্যক্তি মারা গিয়েছিল। তার পর ঘের মালিক বিদ্যুতের লাইন ঠিক করেনি। যার কারনে এই মৃত্যুর পিছনে সেই দায়ী। যার ফল স্বরুপ শালিসী বৈঠকের মাধ্যমে তাকে ১১ লাখ টাকা জরিমানা করেছে শালিসীবর্গ।
ঘের মালিকের ভাই বন্ধু আরমী রিটার্ট পার্সোন আব্দুল আলীম বলেন, আমার ভাই বহু বছর ধরে ঘেরের চাষ করে আসছে। এ ধরনের ঘটনা ইতি পুর্বে কোন দিন ঘটেনি। ঘেরের কর্মচারীরা অসাবধানতা বসত কাজ করতে যেয়ে মৃত্যুর ঘটনাটা ঘটেছে। দুজন পাহারাদারিই গরীব হওয়ায় আমরা তাদের পরিবারকে ওই টাকা দিয়েছি। এটা কোন জরিমানা নয়।
সালিশী বৈঠকের প্রধান সাবেক চেয়ারম্যান আলাউদ্দীনের সাথে ফোনে বহুবার কথা বলে সাক্ষাত করার জন্য প্রতিনিধির অফিসে এসে দেখা করবে বলার সত্তেও সে দেখা করেনি।
এ বিষয়ে এ বিষয়ে ঝাপা ক্যাম্পের ইনচার্জ লুৎফর রহমান বলেন আমি শুনেছি এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি ২ জনেই বিদ্যুতের শর্ট শার্কিটে মারা গিছে পরবর্তীতে পল্লী বিদ্যুতের লোক এসে লাইনের সংযোগ বিছিন্ন করেছে মিমাংসার বিষয়ে আমি কিছু জানিনা।
এদিকে একই ঘেরে গত ১০ দিন পূর্বে অর্থ্যাৎ ১ ডিসেম্বর বিকেলে পাহাদার আব্দুল আজিজ কাজ করা কালে বিদ্যুৎ স্পষ্টে মারা যায়। সে দিনও নিহত পরিবারের সাথে সাড়ে ৪ লাখ টাকায় রফাদফা করে নিয়ে হত্যা মামলা থেকে রেহায় পায় ঘের মালিক বলে গ্রামবাসীর দাবী।
তবে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে, যে ঘের মালিক আব্দুর রহমানরা ধর্ণাঢ্য ও প্রভাবশালী পরিবার হওয়ায় তারা একের পর এক হত্যার মত জঘন্যতম ঘটনা ঘটিয়ে আসলে টাকার জোরে পার পেয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি দেখার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছে স্থানীয়রা।