জি,এম বাবু //ডেস্ক রিপোর্ট ঃ
এখন ভোরের ঘাসের ডগায় জমে থাকা শিশির বিন্দুই বলে দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। তাইতো যশোরের মনিরামপুর উপজেলার বৃহত্তর বানিজ্যিক শহর রাজগঞ্জ বাজারসহ পশ্চিমাঞ্চলের ৬টি ইউনিয়নের লেপ তোশক ব্যবসার সাথে জড়িত কারিগররা লেপ তোশক ও নতুন নতুন বালিশ তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
এবার শীতের আগমনী বার্তার সাথে পাল্লা দিয়ে শীত নিবারণের উপকরণ লেপ তোশকের দোকানে ভিড় করছে এ অঞ্চলের সাধারন মানুষ। কারণ পশ্চিমাঞ্চলের এ ৬ ইউনিয়নে শীত জেকে বসার আগেই শীত নিবারণের চেষ্টা বেশ আগে ভাগেই শুরু করে দিয়েছে তারা। ব্যবসায়ীরা জানায়, শীতের আগমনীর সাথে বৃহত্তর মনিরামপুর উপজেলার বানিজ্যিক শহর রাজগঞ্জ বাজারের বিভিন্ন লেপ তোশকের কারিগর ও ব্যবসায়ীদের মাঝে কর্মচাঞ্চল্যতা ফিরে এসেছে।
তারা এখন লেপ তোশক তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বানিজ্যিক শহর রাজগঞ্জ বাজারসহ পশ্চিমাঞ্চলের ৬টি ইউনিয়নের বিভিন্ন ছোট—বড় হাট—বাজারগুলোতে জাজিম, বালিশ, লেপ, তোশক তৈরী ও বিক্রির কাজে শতাধিক কারিগর এবং ব্যবসায়ী নিয়োজিত রয়েছেন। পাশাপাশি কাপড়ের মানভেদে লেপ তোশকের দাম নির্ধারণ করা হচ্ছে। ৪—৫ হাত লেপের দাম এবার নির্ধারণ করা হয়েছে ১২শ থেকে ১৮শ টাকা পর্যন্ত। সেই সাথে তোশক প্রতি দাম নেয়া হচ্ছে ১৫শ টাকা থেকে ১৯ টাকা পর্যন্ত। তবে অনেকেই বলছে এবার তুলার দাম বেশি হওয়ায় লেপ তোশকের দামও বেড়েছে।
সরজমিনে উপজেলার পশ্চিমাঞ্চলের ৬টি ইউনিয়নের রোহিতা বাজার, বাসুদেবপুর বাজার, মুড়োগাছা বাজার, খেদাপাড়া বাজার, হেলাঞ্চি বাজার, হরিহরনগর বাজার, এনায়েতপুর বাজার, ডুমুরখালি বাজার, রাজগঞ্জ বাজার, ঝাঁপা বাজার, কোমলপুর বাজার, ষোলখাদা বাজার, মল্লিকপুর বাজার, চালুয়াহাটির নেংগুড়াহাট বাজার, শয়লা বাজার, পারখাজুরা বাজার, কাঁঠালতলা বাজার, মশ্মিমনগর বাজার, বেলতলা বাজারসহ বিভিন্ন হাট—বাজার ঘুরে দেখা যায়,
কালার তুলা প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫থেকে ৪০টাকা কেজি। মিশালী তুলা ২০টাকা কেজি, আকাশি তুলা ৪০টাকা কেজি, ফোম তুলা ১৫০টাকা কেজি, রঙ্গীন তুলা ৪০টাকা কেজি, সিম্পল তুলা ৮০ থেকে ১০০টাকা কেজি, শিমুল তুলা ৬০০টাকা থেকে ৭৫০টাকা কেজি ও সাদা তুলা ৭০ থেকে ৮০টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে। চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে শীতের তীব্রতা যদি বাড়ে সেক্ষেত্রে লেপ তোশক তৈরী ও বিক্রি আরও বাড়বে বলে প্রত্যাশা এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের।
বানিজ্যিক শহর রাজগঞ্জ বাজারের রাজ বেডিং হাউজেজর মালিক রাসেল আহম্মেদ তপু জানান, সময় মতো লেপ তোশক ডেলিভারি দেয়ার জন্য তারা এখন খুবই ব্যস্ত। সারা বছরের মধ্যে চলতি শীত মৌসুমেই তারা লেপ তোশক, জাজিম ও বালিশের অর্ডার বেশি পান। এবার ও অনেক অর্ডার হয়েছে। ফলে এ সময় তাদের কাজ একটু বেশি করতে হয়। এক মৌসুমের আয়ে ঘরভাড়া, কর্মচারির বেতন, বিদ্যুৎবিল দিয়েই তাদের পুরো বছর চলতে হয়।
অপর দিকে শীত মৌসুমের শুরুতেই এ অঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামের গৃহবধুরা কাঁথা সেলাই শুরু কেও দিয়েছেন। অনেক পরিবার রয়েছেন যারা শীত মৌসুমে কাঁথা সেলাইয়ের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। এব্যাপারে কথা হয় ঝাঁপা ইউনিয়নের হানুয়ার গ্রামের গৃহবধু বিলকিস বেগমের সাথে তিনি জানান, শহরের অনেক মধ্যবিত্ত পরিবার শীত মৌসুম আসার আগেই তাদের কাছে কাঁথা সেলাই করে দেওয়ার জন্য কাপড় ও সুতা সরবরাহ করেন। তবে নকশা ভেদে এক একটি কাঁথা সেলাই করতে মজুরি বাবদ নেয়া হয় ১হাজার থেকে ১২শ টাকা পর্যন্ত।