আবু শাহান সেলিম মিয়া, রংপুর:
গত পাঁচ দিন অতিবাহিত হলেও ভূল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করে রোগীর পরিবারের উপর হামলার চেষ্টা । এ বিষয়ে রোগীর স্বজনেরা আতঙ্কে ভুগছে। ন্যায় বিচার পাওয়া তো দূরের কথা রোগীর স্বজনদের ওপর যে চলমান হামলা মামলা দিয়ে পরিবারকে ধংস করার পায়তারা চালাচ্ছে। রংপুরে প্রাইম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল নিয়ে শত শত মানুষের ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর ঘটনায় আজও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় দিনের পর দিন এই হাসপাতালে প্রাণহানিকর ঘটনা ঘটেই চলেছে।
এরপর রংপুরে স্বনামধন্য বেসরকারী প্রাইম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে রংপুর সিটি কর্পোরেশন এলাকার ১২নং ওয়ার্ড এর
রাধাকৃষ্ণপুর গ্রামের রংপুর সাব রেজিস্ট্রি অফিসের
অবসরপ্রাপ্ত প্রধান সহকারী আব্দুল হাই (৭০) গত শনিবার আনুমানিক সন্ধ্যা ৭ টার সময় প্রাইম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে বুকে ব্যথা জনিত কারণে ভর্তি করানো হয়। কর্মরত চিকিৎসক মেডিসিন বিভাগে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে চিকিৎসা প্রদান করেন। গোপন সূত্রে জানা যায়, রাত ১১টা পর্যন্ত এই মেডিসিন বিভাগে সামান্য চিকিৎসা দিয়ে সময় ক্ষেপন করেন। এমতাবস্থায় পরিবারের লোকজন কর্তব্যরত চিকিৎসককে জিজ্ঞাসা করলে হার্টের রোগ থাকার পরও মেডিসিন বিভাগে রেখে রোগীর স্বজনদের কাছে মোটা অংকের টাকার দেনদরবার করার চেষ্টা করেন।
অবশেষে গত রবিবার সকাল ৯ ঘটিকার সময় ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করেন।
মৃত্যুর পূর্বে রোগী আব্দুল হাইকে একটি ইনজেকশন পুশ করা হলে দুই- তিন মিনিটের মধ্যে রোগী মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
বিষয়ে রংপুর প্রাইম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে একাধিক গণমাধ্যম কর্মীরা বিচরণ করলেও কিছু দালাল সাংবাদিকের কারণে
কোন পত্র-পত্রিকায় টিভি চ্যানেলেও সংবাদ প্রকাশ করতে বিরত থাকেন।
এ ঘটনায় মৃত আব্দুল হাই এর ছেলে বাবলা হোসেন
গণমাধ্যমকে বলেন, আমার বাবার ভুল চিকিৎসার কারণে মৃত্যুবরণ হয়েছে। তিনি ন্যায় বিচার দাবি জানিয়েছেন। হাসপাতালে একাধিক ভুক্তভোগী ব্যক্তির সাথে কথা হলে তারা বলেন রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের বিকল্প হিসেবে ৮টি জেলার মানুষ বেসরকারি প্রাইম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে থাকেন।
সেক্ষেত্রে সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন অজুহাতে লক্ষ লক্ষ টাকা চিকিৎসার নামে হাতিয়ে নিয়ে থাকেন। এখানে সময় মতো চিকিৎসক নেই শুধু ইন্টার্নি ডাক্তারদ্বারা রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। প্রাইম হাসপাতালে একাধিক কর্মচারীর সাথে কথা হলে তারা বলেন এই মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এখন টি-কে গ্রুপ এর মালিক পক্ষ পরিচালনা করে আসছেন। এক সময় রংপুরের কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার ডা: আক্কাস এই হাসপাতাল এর মালিক পক্ষ ছিলেন। এখন টি-কে গ্রুপ এর মালিক পক্ষ নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন।
খোদ একজন ভুক্তভোগী রংপুর সিটি
কর্পোরেশন এর ১৩নং ওয়ার্ড নিসবেতগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা বাকের এর ছেলে সচেতন নাগরিক আদিল নিউজ বিডি জার্নালিস্ট২৪ কে বলেন, প্রাইম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল যেন মৃত্যুর কারখানা হিসেবে পরিণত করেছেন এবং তিনি আরও জানান বাংলাদেশের জালিম আওয়ামী লীগ সরকারের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এর ঘনিষ্ঠ সহচরেরা এই হাসপাতালকে বর্তমানে নিয়ন্ত্রণ করে চলছে।
এখানে কোন হত্যাকান্ড ঘটলে কোন বিচারই হয় না। বিচারের নামে প্রাইম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এর আশেপাশে ব্রিটিশ এর চিহ্নিত লাঠিয়াল বাহিনী ও সন্ত্রাসীবাহিনী গড়ে তুলেছেন এবং প্রাইম হাসপাতাল এর কর্তৃপক্ষ। আবেগ কণ্ঠে তা বলেছেন। এ বিষয়ে রংপুর জেলা প্রশাসক রবিউল ইসলাম ফয়সালকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন সিভিল সার্জন এর কাছে অভিযোগ দাখিল করার জন্য জানিয়েছে।
গতকাল রংপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। রংপুর সিটি কর্পোরেশন ১২নং ওয়ার্ড এর সাবেক কাউন্সিলর রবিউল আবেদীন রতন ও সুশীল সমাজের ব্যাক্তিদের যৌথ বিবৃতিতে জানান, বাংলাদেশ অন্তবর্তী সরকার এর প্রধান উপদেষ্টার কাছে এই প্রাইম হাসপাতাল এর
বিরুদ্ধে তদন্তমূলক রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জোর দাবী জানিয়েছেন।
একই সাথে হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন যে প্রাইম হাসপাতাল এর দুর্নীতিবাজ চিকিৎসক-কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে- ব্যবস্থা গ্রহণ না হলে এলাকাবাসী দুর্বার
আন্দোলন গড়ে তুলবেন।