রুবেল হোসেন, ডেক্স প্রতিবদেক:
যশোরসহ সন্নিহিত অঞ্চল বহু উত্থান-পতনের মধ্যে দিয়ে বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন শাসক ও শাসিত অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত থেকেছে।
১৯৭১ সালে বিশ্ব ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রাজনীতিবিদ ও মানবতাবাদী নেতা বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংঙ্গালীরা সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন করে। স্বাধীনতা যুদ্ধে ত্রিশ লক্ষ্য নিরপরাধী মানুষকে পাকিস্তানী হায়েনারা নৃশংসভাবে হত্যা করে ইতিহাসের সর্ব বৃহৎ ও ভয়াবহ গণহত্যার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যা মাইলাই হত্যাকান্ডের চেয়েও ভয়ঙ্কর ছিল। সেই সংঙ্গে তাদের নারী নির্যাতনের পৈশাচিকতাও অতীতের সকল নারকীয়তাকে হার মানায়।
বাংলাদেশের ইতিহাস ইংরেজ বিতাড়ন, পাকিস্তানী উচ্ছেদ, নীল বিদ্রোহ, তে-ভাগা আন্দোলন, কৃষক সংগ্রাম, ভাষা আন্দোলন এবং স্বাধীনতা যুদ্ধসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে অগ্রণী যশোরের সংগ্রামী মানুষ ন্যায়ের স্বপক্ষে অধিকার আদায়ের বিপ্লবে তাদের বলিষ্ট উচ্চারণ রেখেছে বার বার। স্বভাবতই সংস্কৃতির পীঠস্থান এই যশোরের রয়েছে গৌরবময় অতীত যা ভবিষ্যত বংশধরদের কাছে প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
আবহমানকাল ধরেই যশোরের জনগণ বীর ও স্বাধীনচেতা। দেশ ও জাতির যে-কোন দুর্যোগময় মুহূর্তে যশোরের মানুষ জীবন বিপন্ন করে ঝাপিয়ে পড়েছে চেতনার উদ্বুদ্ধতায়। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে যশোর বাসীর অবদান অবিস্মরণীয়। বাংলাদেশের স্বাধীন পতাকা প্রথম উত্তোলন করা হয় যশোর থেকেই। বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করলে আজকের যশোর তারই একটি সুপ্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী জেলা হিসেবে স্বীকৃতি পায় এবং তার প্রকৃত অস্তিত্ব লাভ করে।
জেলার ভৌগোলিক অবস্থান
বৃহত্তর যশোর জেলা ৮৮°৪০’ হতে ৮৯°৫০’ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ এবং ২২°৪৭’ হতে ২৩°৪৭’ উত্তর অক্ষাংশের মধ্যে অবস্থিত। যশোর একটি মৃতপ্রায় ব-দ্বীপ, পদ্মা ও হুগলী নদীর মধ্যবর্তী সুবৃহৎ ব-দ্বীপটির একটি অংশ হচ্ছে যশোর। অল্পকথায় গঙ্গা ও ব্রক্ষ্মপুত্রের মধ্য ভাগে ব-আকৃতির জায়গাকে উত্তর-দক্ষিণ বরাবর সমান তিনভাগে ভাগ করলে মধ্য ভাগের পশ্চিম-উত্তর ও দক্ষিণপূর্ব অংশ ছাড়া অবশিষ্ট অংশ যশোর। উত্তরে ঝিনাইদহ জেলা ও মাগুরা জেলা, দক্ষিণ পূর্বে সাতক্ষীরা জেলা, দক্ষিণে খুলনা জেলা, পূর্বে নড়াইল জেলা এবং পশ্চিমে ভারত।
জেলার নদ-নদী
• ভৈরব নদ
• ভৈরব ব্রীজ
• কপোতাক্ষ নদ
• বেতনা নদী
• চিত্রা নদী
• হরিহর নদ
জেলার উপজেলাসমূহ
জেলায় ৮টি উপজেলা রয়েছে।
• যশোর সদর উপজেলা
• অভয়নগর উপজেলা
• কেশবপুর উপজেলা
• চৌগাছা উপজেলা
• ঝিকরগাছা উপজেলা
• বাঘারপাড়া উপজেলা
• মনিরামপুর উপজেলা
• শার্শা উপজেলা
যশোর জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ
• চাঁচড়া জমিদার বাড়ি
• যশোর ইনস্টিটিউট
• যশোর ইনস্টিটিউট পাবলিক লাইব্রেরী
• ফুলের হাট গদখালি
• সাগরদাড়ী, বাংলা পদ্যর জনক মাইকেল মধুসূদন দত্ত-এর বাড়ি
• তাপস কুটির (কাস্টমস অফিস)
• বেনাপোল স্থল বন্দর
• যশোর বিমানবন্দর
• যশোর সেনানিবাস
• শ্রীধরপুর জমিদার বাড়ি
• বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখের সমাধি
• মনিহার সিনেমা হল
• কালেক্টরেট পার্ক
• লালদীঘির পাড়
• বিনোদিয়া পার্ক
• যশোর বোট ক্লাব
• ভরত রাজার দেউল (ভরত ভায়না)
• জেস গার্ডেন পার্ক
• যশোর আইটি পার্ক
• মীর্জা নগর নবাব বাড়ি
যশোর জেলার বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ
• সনাতন গোস্বামী (১৪৮০-১৫৫৮)
• মেহেরুল্লাহ মুন্সী (বৃটিশদের অপশাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার বীর)
• রূপ গোস্বামী (১৪৮৯-১৫৫৮)
• মাইকেল মধুসূদন দত্ত (২৫ জানুয়ারি ১৮২৪ – ২৯ জুন ১৮৭৩) – ঊনবিংশ শতাব্দীর বিশিষ্ট বাঙালি কবি ও নাট্যকার;
• কিরণচন্দ্র মুখোপাধ্যায় (১৮৯৩-১২ ডিসেম্বর ১৯৫৪) – ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব এবং অগ্নিযুগের বিপ্লবী;
• ফররুখ আহমদ (১০ জুন ১৯১৮ – ১৯ অক্টোবর ১৯৭৪) – মুসলিম রেনেসাঁর কবি;
• সরোজ দত্ত – ভারতীয় বাঙালি বামপন্থী রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবী
• গোলাম মোস্তফা (১৮৯৭-১৯৬৪) – মুসলিম রেঁনেসার কবি;
• আবুল হোসেন (১৫ আগস্ট ১৯২২ – ২৯ জুন ২০১৪) – কবি; • এস এম সুলতান (১০ আগস্ট ১৯২৩ – ১০ অক্টোবর ১৯৯৪) – প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী;
• ড. মোহাম্মদ লুৎফর রহমান (১৮৯৭-১৯৩৬) – প্রখ্যাত সাহিত্যিক ও মানবতাবাদী;
• বাঘা যতীন – ভারতের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব এবং অগ্নিযুগের শহীদ বিপ্লবী;
• ইলা মিত্র (১৮ অক্টোবর ১৯২৫ – ১৩ অক্টোবর ২০০২) – বিপ্লবী এবং সংগ্রামী কৃষক নেতা;
• কমরেড অমল সেন (১৯ জুলাই ১৯১৩ – ১৭ জানুয়ারি ২০০৩) – তেভাগা আন্দোলনের অন্যতম সক্রিয় নেতা;
• রাধাগোবিন্দ চন্দ্র (১৬ই জুলাই ১৮৭৮ – ৩রা এপ্রিল ১৯৭৫) – জ্যোতির্বিজ্ঞানী
• রাজা প্রতাপাদিত্য
• কোহিনূর আক্তার সুচন্দা – অভিনেত্রী
• ফরিদা আক্তার ববিতা – অভিনেত্রী
• গুলশান আরা চম্পা – অভিনেত্রী
• শাবনূর- অভিনেত্রী
• দীনেশচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – শিশুসাহিত্যিক ও সম্পাদক
• অবনীভূষণ চট্টোপাধ্যায় – গণিতজ্ঞ ও লেখক
• হাসিবুর রেজা কল্লোল – চলচ্চিত্র পরিচালক