প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ২৩, ২০২৪, ৫:২১ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ অক্টোবর ২, ২০২৩, ১:১১ অপরাহ্ণ
যশোরের অভয়নগরে গ্রাম্য ডাক্তার-আমজাদ বিশ্বাস’র বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সরকারী ঔষধ বিক্রির অভিযোগ
মোঃ ওয়াজেদ আলী স্টাফ রিপোর্টার:
যশোর অভয়নগর উপজেলার শ্রীধরপুর ইউনিয়নের দিঘীরপাড় গ্রামের রাঙ্গারহাট বাজারে গ্রাম্য চিকিৎসক আমজাদ বিশ্বাস দীর্ঘদিন যাবৎ প্রকাশ্যে রোগী সাধারণের জন্য সরকারের বরাদ্দ বিনামূল্যে বিতরণকৃত ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কিছু অসাধু সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীরা এসব সরকারি ওষুধ বাইরে খোলা বাজারে বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছেন বিপুল অর্থ। ভুক্তভোগী রোগী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, উপজেলার দিঘীরপাড় গ্রামের এক ব্যাক্তি তার শিশু সন্তান শারীরিক অসুস্থ হলে গত সোমবার তিনি একই গ্রামের গ্রাম্য চিকিৎসক আমজাদ বিশ্বাসের কাছে চিকিৎসা নিতে যান। ঐ চিকিৎসক তাকে সরকারি ঔষধ দেন। ওষুধ খাওয়ার দুই দিন পার হলেও না কমায় তিনি বুধবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসা করান। পথিমধ্যে তাঁর দেখা হয় পরিচিত বন্ধুর সঙ্গে, দেখা হলে অসুস্থতার কথা বলেন। এসময় তিনি গ্রাম্য চিকিৎসকের কাছে ওষুধ খেয়েও সারছেনা জানালে কি ওষুধ দিয়েছে জানতে চান। এসময় তিনি আমজাদ বিশ্বাস দেওয়া ওষুধগুলো দেখান। তিনি দেখেন ওই চিকিৎসক রোগীর কাছে যে ওষুধ বিক্রি করেছে তা সবই গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সরকারি সম্পত্তি। অগ্রযাত্রা পত্রিকার সাংবাদিকে কাছে এমন অভিযোগ আসলে ভুক্তভোগীর কাছে সকল বক্তব্য শুনে অনুসন্ধান শুরু করে অগ্রযাত্রা টিম। অনুসন্ধানে দেখা যায় গ্রাম্য চিকিৎসক যে ঔষধ দিয়েছে সেটা সরকারি ঔষধ যার গায়ে স্পষ্ট লেখা আছে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সম্পত্তি ক্রয় বিক্রয় আইনত দন্ডনীয়-যার মালিক জনগণ। গ্রাম্য চিকিৎসক আমজাদ বিশ্বাসের দেওয়া ওষুধ টি ছি AMOXICILLIN DRY SYRUP-100 ml বাচ্চাদের জ্বর কাশি,সহ হালকা কাটা ব্যাথা নিরময় এন্টিবায়োটিক, যাহা সরকারি হাসপাতাল ও কমিউনিটি ক্লিনিকে থেকে রোগীদের কে প্রদান করা হয়। এগুলো দেখার পর আর বুঝতে বাকি রইল না। অগ্রযাত্রা" গোপন ও প্রকাশ্য অনুসন্ধানে নামে। সোর্স নিয়োগের পাশাপাশি অসাধু চিকিৎসক আমজাদ বিশ্বাস এর চেম্বারে এক পর্যায়ে ছদ্মবেশ ধারণ করে ক্রেতা হয়ে ডাক্তারের কাছে পৌঁছায় অগ্রযাত্রা টিম,,রোগের বর্ণনা করা মাত্রই তিনি বের করে দেন তার আলমারির নিচে কার্টুনে থাকা.সরকারি ঔষধ। এখানেই শেষ নয়,, রোগী সেজে অগ্রযাত্রা অনুসন্ধানী টিম হাজির হয় তার চেম্বারে, ঐ সময় অগ্রযাত্রার ক্যামেরা লক্ষ করে তিনি তড়িঘড়ি করে জরুরি রোগী দেখতে যাওয়ার কথা বলে চেম্বার দ্রুত বন্ধ করে দেয়। ঐ সময় সরকারি ঔষধ বিক্রি করার বিষয় টি জানতে চাইলে তিনি অগ্রযাত্রার ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি নয় বলে চলে যায়। তখন বিষয় টি আরো পরিস্কার---এর পেছনে রহস্য উন্মোচন করার চেষ্টা করে অগ্রযাত্রার অনুসন্ধানী টিম..স্থানীয় কয়েজন ব্যাক্তি জানিয়েছেন হাসপাতালের ওষুধগুলোতে ‘সরকারি সম্পদ ক্রয়-বিক্রয় আইনত দন্ডনীয় অপরাধ’ লেখা থাকলেও ওই গ্রাম্য চিকিৎসকের মতো উপজেলার অসংখ্য গ্রাম্য চিকিৎসকের দোকানে সরকারি ওষুধ বিক্রির চিত্র দেখা মেলে। এ কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত থাকতে পারে বলে ধারণা তাদের যারা এসকল সরকারি সম্পত্তি অর্থের বিনিময়ে বাইরে বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছেন বিপুল অর্থ। আর বঞ্চিত হচ্ছে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী সাধারণ। যাদের বিনামূল্যে এসব ওষুধ পাওয়ার কথা। এদিকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সম্পদ খোলাবাজারে বিক্রির ঘটনা দুঃখজনক জানিয়ে উপজেলার সচেতনতা মহল বলছেন এর জন্য দায়ী সরকারি হাসপাতাল ও কমিনিউটি ক্লিনিক গুলোর কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা- কর্মচারী। গত আগস্টে সরকারি সম্পত্তি, জনগণের সম্পদ ওষুধ চুরি করে বিক্রি করলে ১০ বছরের জেল ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা এবং উভয় দন্ডের বিধান রেখে ঔষধ আইন -২০২২ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। অথচ কতিপয় অসাধু চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারীর এমন কর্মকান্ড সরকারের সুনাম নষ্ট করছে। এমন কর্মকান্ড যারা চালিয়ে আসছেন তাদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তি হওয়া দরকার বলে সচেতন মহলের অভিমত। এ ঘটনায় অভিযুক্ত গ্রাম্য চিকিৎসক আমজাদ বিশ্বাস এর সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি বলেন, আমি তার এগুলো করিন । মাঝে মাঝে সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যাওয়া রোগীরা হাসপাতাল থেকে ঔষধ আনে সেগুলো আমাকে দেয়। আর তাকে যে ওষুধ দিয়েছি সেগুলো আমি এমনি দিয়েছি। ঘটনার তীর এবার পরলো ডাক্তারের ওপর-এক প্রশ্নের জবাবে তিনি অগ্রযাত্রা কে বলেন তার চেম্বারে মাঝে মধ্যে নড়াইল থেকে একজন ডাক্তার আসেন তিনি তাকে সরকারি ঔষধ দিয়ে যায়। কে ঐ ডাক্তার---?? তার নাম ঠিকানা জানতে চাইলে তাৎক্ষণিক তিনি ফোন কেটে দেন। পরে একাধিক চেষ্টা করলেও মোবাইল ধরেনি।
এ বিষয়ে জানতে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডাঃ অহিদুজ্জামান খানের সঙ্গে কথা বললে তিনি অগ্রযাত্রা কে জানান, যিনি ওষুধ বিক্রি করেছেন তার কাছ থেকে জানতে হবে ঔষধগুলো কোথা থেকে পেয়েছে। কারণ সরকারি ওষুধ বিভিন্ন জায়গা থেকে চুরি হয়। আপনি একজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা হিসেবে সরকারের সম্পত্তি খোলা বাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে, এ বিষয়টি কেমনভাবে দেখছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি অগ্রযাত্রা কে বলেন, সরকারি সম্পত্তি বাইরে পাওয়া গেছে, আপনারা ধরেছেন এজন্যে ধন্যবাদ। তবে ওই পল্লী চিকিৎসক এর বিরুদ্ধে অভিযোগ আমাদের হাতে এসেছে আমরা তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে যথাযথ ব্যাবস্থা নিবো। এবিষয়ে পল্লী চিকিৎসক সমিতির যশোর জেলা সভাপতি,কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক, গ্রাম্য ডাঃ এম,এ গফুর অগ্রযাত্রা কে বলেন বিষয়টি জঘন্য অপরাধ। এবিষয়ে গাম ডাক্তার কল্যাণ সমিতি কোন আপোষ করবে না। প্রমান পেলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যাবস্থা নেওয়া হবে। জেলা সিভিল সার্জন বিপ্লব কান্তি অগ্রযাত্রা কে জানান সরকারি ঔষধ বাহিরে বিক্রির কোন সুযোগ নাই বিষয় টি তদন্ত করে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
কপিরাইট © নিউজ বিডি জার্নালিষ্ট ২৪- ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। সম্পাদক : মোঃ রাকিব হোসেন, বার্তা সম্পাদক: চম্পা বিশ্বাস, প্রকাশক: মুহাঃ মোশাররফ হোসেন,প্রধান উপদেষ্টা: মো: বেল্লাল হাওলাদার, সহযোগী সম্পাদক: মোঃ আল ইমরান, , 01550040372 E-mail: newsbdjournalist24@gmail.com