মোঃ বুলবুল হোসেনঃ
সুমন বিদেশে এসেছে প্রায় এক সপ্তাহ হল। সুমনের মনটা পড়ে আছে বাড়িতে । এর মধ্যে সুমনের বন্ধু রফিক এসে বলল আমরা যতজন বিদেশে এসেছি সবাই আগামীকাল সকালে চলে যাবো। সুমন ভেবেছিল সবাই মিলে হয়তো আর দুই এক দিন থাকবো তারপর বাড়ির দিকে রওনা দিবো । রফিকের মুখে এমন কথা শুনে সুমন খুশি হয়ে যায়। সুমনের ভালো লাগতেছিল না রফিক বলল, বাড়ির জন্য যা কেনাকাটা করছ সব গুছিয়ে নি ।সকালে কি রেখে যাবি হয়তো মনে থাকবে না। রফিকের কথামতো সুমন সব গুছিয়ে নিল রাতে খাবার শেষে সবার সাথে আড্ডা দিয়ে অনেক রাত হয়ে গেল। এরপর রবি এসে বলল কি ব্যাপার তোরা এখনো গল্প করতেছিস ঘুমাতে হবে না । সকালে এত জার্নি কিভাবে করবি রবির কথা মতো সবাই গল্প করা বাদ দিয়ে ঘুমিয়ে পড়ল। ভোরের দিকে কে যেন দরজায় খট খট শব্দ করছে। উঠে দেখি রবি ডাকতেছে দরজা খুলতেই রবি বলল, কি ব্যাপার তোমরা এখনো ঘুমাচ্ছ ।একটু পরেই তো বাস ছেড়ে দিবে তখন যাবে কিভাবে।ও আরেক কথা পাশের রুমে জামান সাহেব ঘুম থেকে উঠতেছে না। এত ডাকাডাকি পরও কিছু হচ্ছে না, সুমন বললাম না তেমন কিছু হয়তো হয় নাই । বয়স হয়েছে ঘুম থেকে উঠতে দেরি হচ্ছে। সমস্যা নেই তখন রবি বলল, না তাকে তো আমি অনেকদিন যাবৎ চিনি এরকম ঘুম কোনদিনই আসে নাই। রবি অনেকক্ষণ যাবত ডাকতেছে কিন্তু সে কোন সাড়া দিচ্ছে না তুমি একটু দেখবে বিষয়টা। এদিকে হোটেলের সবাইকে ডেকে একত্রে করে ডাকতেছে কারো কথায় রুম খুলতেছে না। সকলে মিলে বুদ্ধি করল যে হোটেলের যারা আছে। এদের বলতে হবে এদের ঘুম থেকে তুলে বলা হলো। আমাদের পাশের রুমে জামান সাহেব ভাইয়া উঠতেছে না। একাই এক রুমে রয়েছে জামান সাহেব হোটেলের লোকজন বলল, আমাদের কাছে কোন চাবি নেই হোটেলের মালিক চাবি নিয়ে চলে গেছে।তাই আপনার অপেক্ষা করেন দেখেন ঘুম থেকে ওঠে কিনা না,তা না হলে হোটেল মালিক ডেকে রুমটা খোলা যাবে । এরই মধ্যে রফিক বলে উঠলো আরে না শুধু হোটেলের মালিককে ডাকলে হবে না। আমাদের পুলিশকে জানাতে হবে। হঠাৎ যদি কিছু হয়ে যায় তাহলে আমরা সবাই বিপদে পড়ে যাব । তাই পুলিশ আসার পরে আমরা দরজা খোলব রবি বলল, এর কথায় যুক্তি আছে। হয়তো আমাদের তাই করতে হবে। না হয়তো আমরা ফেঁসে যাবো সবাই। আলোচনা করতেছে জামান সাহেব বলে ডাকাডাকি করতেছে। কিন্তু সাড়া দিচ্ছে না সবাই টেনশনে পড়ে গেল কি করা যায়, কি করলে ভালো হবে। হঠাৎ যদি কোন কিছু হয়ে যায় তাদের ফ্যামিলি কে কি বলবো আমরা। তার ফ্যামিলিকে সান্ত্বনা দেওয়ার মতো ভাষা থাকবে না । এরই মধ্যে রবি বলল, তোমরা সাহস রাখো হয়তো কিছু হবে না জামান সাহেব । নদী বলল, এটা কোন ব্যাপার না আমার স্বামী ও এরকম হয়েছিল। শোনেন তাহলে একদিন অফিস থেকে ফিরে আমি দরজায় ডাকতে শুরু করলাম। কিন্তু আমার স্বামীর কোন সারা শব্দ পেলাম না। মনে পড়ল দরজার ভেঙে তারপর হয় দেখি। পাশের লোক বলল কিছুক্ষণ অপেক্ষা করো দেখো শুনতে পারে কিনা। নদী বলল দরজা ভেঙে গেলে দরজা আবার নতুন করে লাগাতে পারবো। কিন্তু স্বামী তো আর ফিরে পাবেনা । তাই কোন চিন্তা না করে দরজাটা ভেঙে ফেলি।ভিতরে গিয়ে আমার স্বামীর মুখে পানি ছিটিয়ে দিতেই স্বামী বলল, কেন আমার মুখে পানি দিচ্ছে আমার কি হয়েছে । আমি আমার স্বামীকে জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি করতে থাকি। আমি অনেক ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম নদী বলল,সেই অভিজ্ঞতা থেকে বলছি হয়তো কিছুক্ষণ পরে উঠে যাবে। আপনারা কোন টেনশন করবেন না সব ঠিক হয়ে যাবে। আলোচনার চলছে নিচের থেকে লতিফ এসে বলল, তোমরা কেন এত চিন্তা করতেছ। কি হয়েছে কারো কি শরীর খারাপ । তখন সুমন বলল আরে না ভাই আপনিতো পেট ভরে খেয়ে আসলেন। এদিকে তো এক কান্ড ঘটে গেছে কি কান্ড জামান সাহেব তার রুম খুলতেছে না। রবি ভাই চিল্লাচিল্লি করে সবাইকে একত্রিত করেছে। কিন্তু জামান সাহেব কোন সাড়াশব্দ করতেছে না । কি বলছো তোমরা জামান সাহেব তো নিচে আমার সাথে রুটি খেল হোটেলে বসে । সবাই তো মাথায় হাত বল, কি কখন গিয়েছে। সে তো অনেক আগেই বেরিয়ে গেছে সকালে নামাজ পড়ে।