মণিরামপুর প্রতিনিধি:
যশোরের মণিরামপুরে মোঃ সাজিদ হোসেন (৩৭) নামে এক যুবককে অপহরণ পূর্বক ৫ লাখ টাকা চাঁদার দাবীতে রাতভর শারীরিক নির্যাতন। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বর থেকে তথ্য পেয়ে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৩ টার দিকে পুলিশ অপহৃত সাজিদকে উদ্ধার করেছে। সাজিদ ঢাকার কেরানিগঞ্জের এলাকার কাজী মাহমুদুল হাসানের ছেলে। এ ঘটনায় সাজিদ বাদী হয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানের পিএস আশিকুর রহমান আশিকসহ অজ্ঞাত আরও ২/৩ জনকে আসামী করে মনিরামপুর থানায় একটি মামলা করেছেন। পুলিশ প্রধান অভিযুক্ত আশিকুর রহমান আশিককে গ্রেফতার করেছে।
বাদীর বিবরণ ও মামলার সূত্রে জানা যায়, স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেমার্স অর্থ প্রাইভেট লিঃ-এর পরিচালক ও আউটসোর্সিং ব্যবসায়ী কাজল বিশ্বাসের অফিস স্টাফ মোঃ সাজিদ হোসেন ব্যবসায়ীর কাজের জন্য মঙ্গলবার মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসে। সেখানে পৌছানোর কিছুক্ষন পর অজ্ঞাত একটি মোবাইল নম্বার থেকে তার অবস্থান জানতে চাই। সাজিদ তার অবস্থান জানানোর সাথে সাথে মণিরামপুর উপজেলা চেয়ারম্যানের ব্যাক্তিগত পিএস মোঃ আশিকুর রহমান আশিকসহ দুটি মোটরসাইকেলে ৪ জন অস্ত্র ঠেকিয়ে তাকে অপহরণ করে অজ্ঞাত বিভিন্ন স্থানে আটকিয়ে রেখে শারীরিক ভাবে নির্যাতন এবং ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে আশিকসহ তার সঙ্গী সাজিদকে হত্যার হুমকি দিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানমের পৌরশহরের ভগবান পাড়ার বাসায় আশিকের থাকার ঘরে আটকিয়ে রাখে। অপহৃত সাজিদ সুযোগ বুঝে ৯৯৯ নম্বরে কল দিয়ে পুলিশের সহযোগিতা চাইলে-মণিরামপুর থানা পুলিশের একটি টিম সাড়াশি অভিযান চালিয়ে বুধবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে আশিকের ঘর থেকে তাকে উদ্ধার করে। এ সময়ে অপহরণকারী আশিককে ইয়াবা সেবনরত অবস্থায় পুলিশ আটক করলেও অন্যান্যরা পালিয়ে যায়। তবে আশিককে উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানম সকালে থানায় পৌছে দিবে বলে নিজ জিম্বায় রেখে দেই। আশিক উপজেলার চালুয়াহাটি ইউনিয়নের ত্রিপুরাপুর গ্রামের মিজানুর রহমান খানের পুত্র। অবশ্য সকালে উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানম তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন।
মামলার বাদী সাজিদ হোসেন বলেন, পুলিশ উদ্ধার করার দু’ঘন্টা পূর্বে উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানম ও তার ছেলে আমার কাছে এসে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন করেছিলেন।
ঢাকার ব্যবসায়ী কাজল বিশ্বাস বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনশক্তি সরবরাহ করা আমার কাজ। মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আউট সোর্সিং-এ আমার ১১ জন লোক নিয়োগ দেওয়া আছে। সাজিদ আমার অফিসের কর্মচারী। মনিরামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়োগ ১১ জনের বেতন সংক্রান্ত কাজে সাজিদ গতকাল সোমবার বিকেলে মনিরামপুর হাসপাতালে যান। সেখান থেকে তাকে অপহরণ করা হয়।
উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানম জানান, আশিককে আমি সহযোগী হিসেবে বেতন দিয়ে রেখেছি। কয়েকদিন ধরে সে আমার বাড়ির পাশে ঘর ভাড়া করে থাকে। মঙ্গলবার রাতে পুলিশ ওদের দুই জনকে ধরে আমার কাছে নিয়ে আসে। আমি সবকিছু শুনে তখন আশিককে হেফাজতে রেখে দিই এবং সকালেই পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছি। কাউকে আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবির বিষয়ে আমি কিছু জানি না।
মণিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মনিরুজ্জামান জানান, ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে আমরা সাজিদকে উদ্ধার করেছি। এ ঘটনায় সাজিদ হাসান বাদি হয়ে আশিকসহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।