স্টাফ রিপোর্টার:
ভোটের আগে ফাঁস করে, ভোটের পরে ফাঁস করে না ।এমন কথা জনমনে শোনা গেল ও বাস্তব চিত্র লক্ষ্য করা গেছে খুলনা ১০ নং ওয়ার্ডে। সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধানে খুলনার প্রতিটি ওয়ার্ডে, বিভিন্ন এনজিওর সহযোগিতায় বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে ময়লা সংগ্রহ করে ,তার নির্দিষ্ট স্থানে ফেলানো হয়। তবে ১০ নম্বর ওয়ার্ডে এর সাবেক কাউন্সিলর সালাত হোসেন কাউট নিজ উদ্যোগে কিছু ময়লার গাড়ি দিয়ে ময়লা সংগ্রহ করে ওয়ার্ডের সেবা করছিলেন। কিন্তু এতদিন ভালো থাকলেও গত ১২ই জুন নির্বাচনে কাজী তালাত হোসেন কাউট হেরে যাওয়ার পর ময়লার নেওয়া বন্ধ করে দিলে, শুরু হয় দুর্ভোগ। অপরদিকে নবনির্বাচিত কাউন্সিলর মোঃ শরিফুল ইসলাম প্রিন্স এখনও দায়িত্বভার গ্রহণ করেননি। এদিকে প্রতিদিন ময়লা জমা হয় দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ নগরবাসী। ১০ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা রুবিনা ইসলাম বলেন, আগে প্রত্যেকটা বাড়িতে বাড়িতে কাউন্সিলরের লোকজন এসে ময়লা নিয়ে যেত । কিন্তু তিনি হারার পরে ময়লা নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। আর এতে করে আমাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ময়লা বাইরেও ফেলাতে পারছি না, বাড়িতেও রাখতে পারছি না।
শরিফা নামের এক গৃহিণী বলেন, ভোটের আগে ফস করে, ভোটের পরে ফস করে না, তারই বাস্তব প্রমাণ পেলাম আমরা। কাজী তালাত হোসেন কাউট হেরে গিয়েছেন। তিনি কি আর কখনো নির্বাচনে দাঁড়াবেন না। তাহলে কেন আমাদের জনগণকে এরকম কষ্ট দিচ্ছেন কেন তিনি। এতদিনে তিনি এত টাকা খরচ করতে পেরেছেন আর পাঁচটা দিন কি পারতেন না।ময়লা সংগ্রহকারী এক ভ্যান গাড়ি চালক বলেন, আমরা কাউন্সিলর চাকরি করতাম, তিনি যেহেতু হেরে গেছেন ,এজন্য আমাদেরকে ময়লা নিতেও নিষেধ করেছেন । কারণ আমাদের বেতন কে দিবে। এ বিষয়ে কাউন্সিলর কাজী তালাত হোসেন কাউট বলেন, আমার নিজ খরচে প্রতিমাসে লাখ টাকা ব্যয় করে আমি ময়লা সংগ্রহ করতাম । যেহেতু আমি হেরে গিয়েছি এখন এ সকল ময়লার দায়ভার তো আমি নিব না। তাছাড়া যারা ঐ সকল গাড়ি চালাতো তাহারা ব্যাটারি ট্যাটারী খুলে নিয়ে গিয়েছে। এখন আমি হেরে গিয়েছি। আমার কোন দায়িত্ব নেই।আর আমার মানসিক অবস্থায় ভালো নেই। এখন যারা জয়লাভ করছে তাদের দায়িত্ব।
এ বিষয়ে নবনির্বাচিত কাউন্সিলর শরিফুল ইসলাম প্রিন্স বলেন, জয় পরাজয় আমাদের হবেই এটা স্বাভাবিক । এজন্য ওয়ার্ড বাসিকে কষ্ট দেওয়া যাবে না । ভোটের আগে আর পরে নেই । আমি জনগণের সবসময়ই সেবায় নিয়োজিত থাকবো। আমার ওয়ার্ডবাসীর দুঃখ দুর্দশার কথা চিন্তা করে ইতিমধ্যেই আমি ৫টি গাড়ি নিজ খরচে ক্রয় করেছি। আমি এখনো দায়িত্বভার গ্রহণ করিনি। তার পর ও খুব শীঘ্রই এ সকল গাড়িগুলো ১০ নম্বর ওয়ার্ডের প্রত্যেকটা বাড়ি থেকে ময়লা সংগ্রহ করবে। আসলে ময়লার এ সকল গাড়ির সচরাচর পাওয়া যায় না । আর বানাতে গেলেও অনেক সময়ের ব্যাপার। তারপরও অন্তত দ্বিগুণ টাকা দিয়ে আমি এ সকল গাড়ি ক্রয় করেছি এলাকাবাসীর জন্য । আশা করি খুব শীঘ্রই জনগণের এ দুর্ভোগ মুক্ত হবে। খুলনা সিটি কর্পোরেশনের কনজারভেন্সী বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল আজিজ বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি এবং খুব শীঘ্রই এর সমাধান করা হবে। যে সকল ওয়ার্ডের কাউন্সিলাররা হেরে গিয়েছেন সেই সকল ওয়ার্ডের প্রতি আমরা বিশেষ নজরদারি করছি।