বীর মুক্তিযোদ্ধা মুকুল চন্দ্র মন্ডলের ১৬-তম মৃত্যু বার্ষিকী পালন

লেখক: Champa Biswas
প্রকাশ: 1 year ago

অমিতাভ মল্লিক,প্রধান ক্রাইম রিপোর্টার :

যশোর জেলার মনিরামপুর উপজেলার ৫-নং হরিদাসকাটি ইউনিয়ন নৌকা প্রতীকের ভোট ব্যাংক হিসেবে পরিচিত। মনিরামপুর উপজেলার ১৭টা ইউনিয়নের ভিতরে সব থেকে নৌকার ভোট বেশি এই হরিদাসকাটি ইউনিয়নে। মনিরামপুর জাতীয় নির্বাচন ও উপজেলা নির্বাচনে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এই ইউনিয়নবাসীর নৌকার ভোটের উপর। সবাই চেয়ে থাকে এ ইউনিয়নে কত পার্সেন্ট ভোট পেয়েছে নৌকা মার্কা? হরিদাসকাটি ইউনিয়নের সাবেক সফল চেয়ারম্যান ছিলেন বীর মুক্তিযুদ্ধা মুকুল চন্দ্র মন্ডল একটানা ১৫ বছর সুনামের সহিত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে জনগণের মনে ভালোবাসার স্থান করে নিতে পেরেছিলেন কিন্তু কিছু কুচক্রী মহলের ষড়যন্ত্রের কারণে নির্মমভাবে ছেড়ে চলে যেতে হয় তাকে ২০০৭ সালের ০৮/০৯ এই দিনে।তৎকালীন যশোর-৫ আসনের এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট খান টিপু সুলতান জনগণের ভালোবাসার দাবিতে হরিদাসকটি ইউনিয়নের কেন্দ্রবিন্দু হাজির হাট বাজার সংলগ্ন কালী মন্দিরের সামনে তাকে সমাধিস্থিত করেন যা আজও ১৬ বছর পরেও মুকুল চত্তর নামে পরিচিত হয়ে কালের সাক্ষী হিসেবে অবস্থান করছে। প্রত্যেকটি বছর সেপ্টেম্বর মাসের ০৮ তারিখে ইউনিয়নের জনগণ মৃত্যুবার্ষিকী পালন করেন। গত ০৮/০৯/২৩ রোজ শুক্রবার সকাল ৭:৪৫মি: হরিদাসকাটি ইউনিয়নবাসীর আয়োজনে মুকুল চত্বরে সাবেক সফল চেয়ারম্যান মুকুল চন্দ্র মন্ডল এর সমাধিতে ফুলের মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ সময় এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মুকুল চন্দ্র মন্ডলের আত্মার শান্তি স্মরণে। উপস্থিত ছিলেন, সাবেক সেনা সদস্য মোঃ আক্তার হোসেন, মনিরামপুর উপজেলা হিন্দু যুব মহাজোটের সদস্য সচিব অমিতাভ মল্লিক, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মানিক চন্দ্র, তরুণ আওয়ামী লীগ নেতা দীপঙ্কর বক্সীসহ অনেক শুভানুধ্যায়ী।হরিদাসকাটি ইউনিয়নবাসীর আয়োজনে বিকাল ৪ টায় সাবেক সফল চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মুকুল চন্দ্র মন্ডলের স্বরণে, আলোচনা অনুষ্ঠান ও স্বরণসভার আয়োজন করা হয় দীপঙ্কর বক্সী ও প্রদীপ হালদারের সঞ্চালনায় এবং মুকুল চন্দ্র মন্ডলের ভাইপো অমিতাভ মল্লিক ও সাবেক সেনা সদস্য আক্তার হোসেন এর পরিকল্পনায়।স্মরণসভা ও আলোচনা অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন মুকুল চন্দ্র মন্ডল এর রাজনৈতিক সহ-যোদ্ধা এবং ৫-নং হরিদাসকাটি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নিরঞ্জন প্রসাদ বিশ্বাস। আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সফল চেয়ারম্যান মুকুল চন্দ্র মন্ডল কে ভালোবেসে,শ্রদ্ধা করে মনিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমা খানম, মনিরামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব হাসেম আলী, মনিরামপুর উপজেলার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক আলহাজ্ব আব্দুল মজিদ, ৫নং হরিদাসকারী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নিরঞ্জন প্রসাদ বিশ্বাস, সহকারী জজ সুব্রত মল্লিক, ৮নং পাঁচকাটিয়া ওয়ার্ডের মেম্বার আদিত্য মল্লিক, সহ অনেক আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অনেক নেতৃবৃন্দ। নাজমা খানম বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মুকুল চন্দ্র মন্ডলের জনপ্রিয়তায় ঈশ্বান্নীত হয়ে একটি কুচক্রী মহল তাদের প্রভাব অন্যায় ভাবে ইউনিয়নে বিস্তার করতে সুপরিকল্পিতভাবে জেলের ভেতর নির্মমভাবে মুকুল চন্দ্র মন্ডল কে হত্যা করে। ঠিক একইভাবে বর্তমান প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য আমার জনপ্রিয়তায় ঈশ্বান্নীত হয়ে আমাকে গলার কাটা মনে করে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। আমি মনিরামপুর উপজেলা চেয়ারম্যান হয়েও জনগণের জন্য তেমন কিছুই করে যেতে পারেনি। আমার পরিষদের বরাদ্দ যা হয় তা উনি ক্ষমতার জোরে কেটে নিয়ে অন্য জায়গায় দেন। ৫নং হরিদাসকাটি ইউনিয়নের নৌকার প্রতীক মনোনীত প্রার্থীকে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে পরাজিত করে তার মন মতো প্রার্থীকে বিজয়ী করে চেয়ারম্যান করেছেন। আপনারা যখনই আমাকে স্মরণ করেন আপনাদের সুখে-দুখে বিপদে আপনাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছি এবং দাঁড়াবো। করোনাকালীন সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আমার স্বামীর অর্থায়নে দ্বারে দ্বারে খাদ্য পৌঁছে দিয়েছি। প্রতিমন্ত্রী নিজের ক্ষমতার জোরে পূজা কমিটিকে তার ইচ্ছামত পকেট কমিটি করেছে এবং হিন্দু সম্প্রদায়কে দুইভাগে ভাগ করে দিয়েছে। নিরঞ্জন প্রসাদ বিশ্বাস বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক সফল চেয়ারম্যান মুকুল চন্দ্র মন্ডল ছিলেন সিংহপুরুষ। অন্যায়ের সাথে কখনো আপোষ করেননি। সেজন্য হরিদাসকাটি ইউনিয়নের কিছু অসৎ মানুষ তাকে নির্মমভাবে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেয় গভীর ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে। আক্তার হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে তার আদর্শে বাংলাদেশকে স্মার্ট ও সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে জনগণের সেবায় নিজেকে সর্বদা নিয়োজিত রাখবো। আপনাদের সুখে দুখে আমাকে সর্বদা পাশে পাবেন। স্বাধীনতার বিরোধী শক্তিকে আর মাথা চাড়া দিতে দেবো না। হরিদাসকারী ইউনিয়নে নৌকাকে বিজয়ী করবো ইনশাল্লাহ। অমিতাভ মল্লিক বলেন, আমার জেঠু মনি বীর মুক্তিযোদ্ধা মুকুল চন্দ্র মন্ডল জনগণের সেবা করতে যেয়ে কখনো নিজের সংসারের দিকে ফিরে তাকিয়ে দেখেননি। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে বাংলাদেশ ও বাঙালি যেমন এতিম হয়ে গিয়েছে ঠিক তেমনি, মুকুল চন্দ্র মন্ডল কে হত্যার পর এই হরিদাসকাটি ইউনিয়ন ও এতিম হয়ে গিয়েছে। মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে অপশক্তি হায়নার দল। ইউনিয়নবাসী জেগে উঠেছে কোন অপশক্তি হায়না কে বরগীর বেশে এসে এই ইউনিয়নের মাটিতে আর দাঁত বসাতে দেবে না, ওই কালো বিষাক্ত দাঁত। জনগণকে সাথে নিয়ে আমরা ওই বিষ দাঁত ভেঙে ফেলবো যদি নতুন করে কেউ আর দাঁত বসাতে আসে । আবার নতুন সূর্য উদিত হবে এই হরিদাসকাটি ইউনিয়নের আকাশে। সভায় বক্তারা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলেন বাঙালি জাতির মুক্তির স্বপ্নদ্রষ্টা, তিনিই বাঙালি জাতিকে এনে দিয়েছেন স্বাধীনতা ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। আজ বঙ্গবন্ধু আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু তার স্বপ্ন, আদর্শ ও নির্দেশনা আজও আমাদের সঠিক পথ দেখায়। আর তার দেখানো পথ ধরেই তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী।

error: Content is protected !!