পাটগ্রাম(লালমনিরহাট)প্রতিনিধিঃ
লালমনিরহাটের পাটগ্রামের জগতবেড় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মাহফুজার রহমান মিলনের ইন্ধনে ওই ইউনিয়নের ৫ জন সদস্যকে বেধড়ক মারপিটের অভিযোগ উঠেছে।
গত ২৯ ডিসেম্বর দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। এতে মারপিটের শিকার ইউপি সদস্যরা দুই দফা সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি দাবি করেছেন।
জানা গেছে, গত ২৯ ডিসেম্বর ইউনিয়নের সদস্যদের (মেম্বার) সাথে ইউপি সচিব মইনুল ইসলাম মুকুল শীতার্তদের মধ্যে কম্বল বিতরণের আলোচনা করতে ছিলেন।
এ সময় ওই ইউনিয়নের বিএনপির সভাপতি মাহফুজার রহমান মিলন ও যুবদল আহবায়ক সাফিউল ইসলাম দলীয় ৪০/৫০ জন লোক নিয়ে পরিষদের কার্যালয়ে ঢুকেন। একপর্যায়ে মিলন ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য তোজাম্মেল হোসেনকে চড়, থাপ্পর মেরে গাড়ি ভাংচুর করেন। এরপরই তাদের সাথে আসা লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) ওয়াহেদ আলী, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবুবক্কর সিদ্দিক মানিক, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শহিদুল ইসলাম শহিদুল্লাহ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আসাদুজ্জামান মানিক ইসলামকে বেধড়ক মারপিট করতে থাকেন। স্থানীয়দের সহায়তায় ইউপি সদস্যরা কোনোমতে পালিয়ে রক্ষা পান।
মারপিটের ঘটনা উল্লেখ করে গত ২৯ ডিসেম্বর ওই ইউনিয়নের মুন্সিরহাট বাজারে রাত সাড়ে ১০ টায় সংবাদ সম্মেলন করেন ইউপি সদস্য আসাদুজ্জামান মানিক ইসলাম। দ্বিতীয় দফায় ৩১ ডিসেম্বর বিকেল ৫ টায় একই স্থানে মারপিটের শিকার ইউপি সদস্যদেরকে নিয়ে আবারো সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। এদিন ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির দাবি করে স্থানীয় বেশকিছু সংখ্যক জনসাধারণ মানববন্ধন করেন।
মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আসাদুজ্জামান মানিক ইসলাম। তিনি দাবি করেন- গত ৫ আগস্টের পর গোটা জগতবেড় ইউনিয়নে ওই ইউনিয়নের বিএনপির সভাপতি ও যুবদলের আহবায়ক ত্রাশ সৃষ্টি করেছেন। তাদের নের্তৃত্বে ব্যাপক চাঁদাবাজি করা হচ্ছে। রাজনৈতিক প্রভাব দেখিয়ে একের পর এক সাধারণ মানুষদেরকে মারপিট, লুটপাট ও জুলুম অব্যাহত রয়েছে।
এ অবস্থায় এই ইউনিয়নের জনসাধারণের মধ্যে ভীতিকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে এবং দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে এ ইউনিয়নের বাসিন্দাদের থেকে টিসিবির কার্ড নিয়ে নেওয়া হয়েছে। টিবিবির পণ্য হরিলুট করা হচ্ছে।
তারা ইউনিয়ন পরিষদে মেম্বারদেরকে যেতে দেয় না। মেম্বারদেরকে প্রায়ই ভয়ভীতি এবং মামলার হুমকি দেওয়া হয়। তাদের কথার বাইরে গেলে উশৃংখল যুবকদেরকে দিয়ে অপদস্থ করা হয়।
বর্তমানে মেম্বাররা পরিবারের সন্তান ও বৃদ্ধ বাবা-মাকে নিয়ে জীবন শঙ্কায় রয়েছেন। আবারো যেকোনো সময় মারপিট, হামলা, মামলার শিকার হতে পারেন।
পরিবার ও জীবনের নিরাপত্তা এবং মারপিটের ঘটনার উল্লেখ করে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সদস্য ব্যারিস্টার হাসান রাজীব প্রধান ও উপজেলা বিএনপিকে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে সকল মারপিটের শিকার মেম্বাররা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের নিকট জীবনের নিরাপত্তা কামনা করেছেন।