স্টাফ রিপোর্টার:
যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইয়েদা নাসরিন জাহানের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাতসহ এন্তার অভিযোগ উঠেছে। এ সংক্রান্তে উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীরা বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, কৃষি কর্মকর্তা অফিস চলাকালীন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকে বাসায় বসে অফিসের স্টাফদের মনিটরিং করার জন্য নিয়মনীতি উপেক্ষা করে তার রুম ব্যতীত সকল রুমে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করেছেন, যা কর্মকর্তা/কর্মচারীদের ব্যক্তি স্বাধীনতা ও অফিসের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ করেছে।
বিভিন্ন প্রকল্পের মাঠ দিবসে নিজের মনগড়া নির্দেশিত ৬০ জন কৃষককে নিয়ে মাঠ দিবস বাস্তবায়ন করান। পরবর্তীতে জোরপূর্বক ১২৫—১৫০ জনের তালিকায় ক্ষমতার অপব্যবহার ও চাপ প্রয়োগ করে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদেরকে দিয়ে সনাক্তকারী হিসাবে স্বাক্ষর এবং বরাদ্দের টাকা ভুয়া বিল ভাউচার করে আত্মসাত করেন।
বিভিন্ন প্রকল্পের উপকরণ বরাদ্দ মোতাবেক জৈব ও রাসায়নিক সার, বীজ, কীটনাশক, পরিবহন, রোগিং, ফলজ—বনজ গাছ কৃষকের প্রাপ্তি যথাযথ না দিয়ে অনিয়ম দুর্নীতি করে টাকা আত্মসাত করে অফিস রেজিস্টারে সঠিক বরাদ্দ মোতাবেক কৃষকদেরকে দিয়ে স্বাক্ষর করে নেন। এছাড়া খালি রেজিস্টরে স্বাক্ষর করানোর পর বরাদ্দকৃত উপকরণের পরিমাণ লিপিবদ্ধ এবং উপসহকারী কৃষি অফিসার দিয়ে জোরপূর্বক সনাক্তকারীর স্বাক্ষর করানো হয় বলেও অভিযোগ।
প্রণোদনা/পুনর্বাসন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে লেবারের টাকা বরাদ্দ থাকা সত্বেও অফিস স্টাফ, কৃষকদেরকে দিয়ে কাজ করানো, অফিসের বিভিন্ন উপকরণ জোরপূর্বক অফিস স্টাফদের বেতনের টাকা দিয়ে কিনে তা আবার ভুয়া বিল ভাউচার করে অর্থ আত্মসাত করেন বলেও ওই অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
অভিযোগ মতে, বিভিন্ন প্রকল্পের কৃষক প্রশিক্ষণে খাবার ও নাস্তা কম মূল্যের ও নিম্নমানের খাবার দিয়ে প্রশিক্ষণ বাস্তবায়ন, ভুয়া ভ্রমণ ভাতা দাখিল করে, ফিল্ড ভিজিট না করেই অবৈধভাবে ভ্রমণ ভাতা উত্তোলন, সরকারি গাড়ি ডিপার্টমেন্টাল অনুমতি ছাড়া ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার, নিজ উপজেলার বাইরে ঢাকা, অভয়নগরসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ব্যবহার করেন।
সকাল ৯ টার পরিবর্তে তিনি অফিসে আসেন বেলা ১১ টার পর। ফিল্ড ভিজিটের নামে দুপুর ১ টার পরপরই বাসায় চলে যান এবং অফিসে আসেন বিকাল ৫ টার দিকে।
এছাড়াও অভিযোগপত্রে তার বিরুদ্ধে মাতৃত্বকালীন ছুটির অপব্যবহার, কৃষক ও অফিসের অধীনস্তদের সাথে দুর্ব্যবহার, হয়রানী, অনিয়মের প্রতিবাদকারীদের বদলী, অপমান অপদস্ত করা, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ বিভিন্ন অনিয়মের ফিরিস্তি তুলে ধরেছেন অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীরা। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে এসবের তদন্ত পূর্বক তার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তুলেছেন অভিযোগকারীরা।
এ বিষয়ে সরেজমিন বাঘারপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইয়েদা নাসরিন জাহানের কাছে জানতে চাইলে তিনি উক্ত অভিযোগটি অস্বীকার করে এড়িয়ে যান।