হুমায়ুন কবির ,কালীগঞ্জ,ঝিনাইদহ :
৮ হাজার টাকা ধরিয়ে দিয়ে ৫০ হাজার টাকা লেখা কাগজে রাজস্ব ডাকটিকিটের
উপর স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়া রাহাত হোসেন ও চাঁদনী খাতুন নামের দুই প্রতিবন্ধী
শিক্ষার্থীদের সরকার কৃর্তিক বরাদ্দকৃত টাকা আত্মসাতের ঘটনায় টাকা ফেরতের আশ্বাস দিলেন রায়গ্রাম ইউনিয়নের
চেয়ারম্যান আলী হোসেন অপু। ঝিনাইদহরে কালীগঞ্জ ভাতঘরা দয়াপুর মাধ্যমিক
বিদ্যালয় মাঠে বৃহস্পতিবার দুপুর সালিশ করেন প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা পরিষদের সভাপতি।
সালিশে প্রধান অতিথি হিসেবে অত্র ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলী হোসেন অপুসহ স্থানীয় গণ্যমান্য
ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। প্রধান শিক্ষক সকলের সামনে ৫ লাখ টাকার হিসাব প্রদান করেন। দুই প্রতিবন্ধী পরিবারকে পুনরায় ৫ হাজার টাকা করে
মোট ১০ হাজার টাকা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন চেয়ারম্যান আলী হোসেন অপু।এই টাকা কবে ঐ পরিবার পাবেন তা নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি। মূলত এই আয়োজন ছিল প্রধান শিক্ষকের এক প্রকার আইওয়াশ ।
“প্রতিবন্ধীর আত্মসাৎকৃত টাকা ফেরতের দাবি পরিবারের , শিরনামের সংবাদ প্রকাশের
পর তোপের মুখে পড়ে প্রধান শিক্ষক আফরোজাহান শেলী। সালিশি বৈঠকে উপস্থিত
ছিলেন, রায়গ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী হোসেন অপু, ভাতঘরা দয়াপুর
মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফরোজাহান শেলী, বিদ্যালয়ের পরিচালনা
কমিটির সভাপতি জিল্লুর রহমান আজাদ, অত্র বিদ্যালয়ের শিক্ষক/শিক্ষীকাগণ, এস আই সেকেন্দার আবু জাফর, দুই
প্রতিবন্ধী পরিবারের অভিভাবকগণ সহ এলাকার গণ্যমান্যরা উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, চেয়ারম্যান ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম থেকে তার অনুগত ৪০-৫০ জন লোক সাথে নিয়ে মোটরবাইক শোডাউন দিয়ে অংশ নেন।
প্রতিবন্ধী রাহাত হোসেনের বাবা ফারুক হোসেন সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন,
আমাদের দুই পরিবারের ৫ হাজার করে ১০ টাকা ফেরত দিতে চাওয়াই এটা প্রমাণ হলো ফান্ডের টাকা ব্যয়ে প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম ছিল। যা হয়েছে তাতেই আমরা সন্তোষ্ট।
চেয়ারম্যান ও এলাকাবাসী থেকে যে বিচার করেছেন তাতে আমি খুশি। এরকম অনিয়ম জেনো প্রধান শিক্ষক আর না করেন।
এ ব্যাপারে ভাতঘরা দয়াপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফরোজাহান শেলীর
মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
রায়গ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী হোসেন অপু জানান, তিন গ্রামের
মাইকিং করে অভিভাবকদের ডেকে প্রধান শিক্ষককে প্রতিবন্ধীদের টাকার হিসাব
চাওয়া হয়। এসময় প্রধান শিক্ষক বিভিন্ন খাতে ব্যয় হয়েছে বলে জানান। তিনি
বলেন , আমি নিজে দুই প্রতিবন্ধী পরিবারকে ৫ হাজার করে ১০ হাজার টাকা ফেরত
দেওয়ার কথা বলেছি । এবং ভবিষতে আর যেন এমন দুর্নীতি না হয় এলাকাবাসীর সমনে প্রধান
শিক্ষককে হুসিয়ারী করা হয়।
প্রসঙ্গত,অসহায় দুই প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর জন্য পারফরম্যান্স বেইজ গ্রাউন্ডস ফর
সেকেন্ডারি ইনস্টিটিউশন (পিবিজিএসআই) স্কিমের আওতাই বরাদ্দকৃত ৫০হাজার টাকা আসে। বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক আফরোজাহান শেলী সপ্তম শ্রেণীর
প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী চাঁদনী খাতুন ও নবম শ্রেণীর প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী রাহাত
হোসেনকে ৪ হাজার করে মোট ৮ হাজার টাকা দেন। একই সাথে স্কুলের প্যাডে
তাদের নামের পাশে ২৫ হাজার টাকা লিখে রাজস্ব ডাকটিকিটের উপর স্বাক্ষর করিয়ে
নেন। সরকারী বরাদ্ধকৃত অসহায় প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর জন্য পাঠানো টাকা না
পাওয়ায় ফুসে উঠেছে এলাকাবাসী।