মণিরামপুর উপজেলা প্রতিনিধিঃ
সারা দেশে ৩৬১টি থানার কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা বলা হলেও এখন পর্যন্ত কর্মবিরতিতে রয়েছেন পুলিশের অধস্তন সদস্যরা। ১১ দফা দাবি না মানা পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার কথা বলছেন তারা।শুক্রবার (৯ আগস্ট) রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে আইজিপি, র্যাবের মহাপরিচালক ও ডিএমপি কমিশনার উপস্থিত হয়েও অধস্তন পুলিশ সদস্যদের ক্ষোভ কমাতে পারেননি।
বাংলাদেশ পুলিশ ১১ দফা দাবিতে কর্মবিরতি ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে শুরু হয় দেশ ব্যাপী দিনরাত চুরি ডাকাতি,হত্যা,লুটপাট, বসত বাড়ি ও ব্যাবসায়ী প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ।পুলিশের কর্মবিরতিতে বিপকে পড়েছে সাধারণ মানুষ।পুলিশের হস্তক্ষেপ না থাকায় নেই সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা গ্রামে পাহারা দিলেও কোনো ভাবে বন্ধ হচ্ছে না চুরি ডাকাতি লুটপাট। সারাদেশের ন্যায় পুলিশের কর্মবিরতি থাকায় গত পাঁচ দিনে মণিরামপুরে শতাধিক গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে। ৪ শতাধিক, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়ি ভাংচুর অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।ভুক্তভোগীরা থানায় ফোন দিয়ে অভিযোগ করে।এ বিষয়ে মণিরামপুর থানার পুলিশ সদস্যরা জানায়
পুলিশের জীবন নাশের হুমকি,পুলিশ কে অমানবিক নিষ্ঠুর,নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।আন্দোলন কারী বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের দাবির সাথে আমরা একমত ছিলাম।ইতি মধ্যে সারা দেশ ব্যাপী ৪০ জন পুলিশ সদস্য, ২ জন র্যাব সদস্য শাহাদাত বরন করেছেন।
১০ই আগস্ট মণিরামপুরের সর্ব দলীয় নেতা কর্মী,ব্যবসায়ী,সুশীল-সমাজ ও উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে,পুলিশ কে দায়িত্বে ফিরতে আহবান জানানো হয়।
এসময় মণিরামপুর থানার এস আই সোহান ও এসআই সঞ্জয় কুমারের বক্তব্যে সাধারণ মানুষ হতবাক হয়েযায়। এসআই সঞ্জয় কুমার শাহবাগে ঘটে যাওয়া মুসলিম দাড়ি আওলা পুলিশ কনস্টবল কে নির্মম হত্যাকন্ডের বর্ণনা। যা ইতিমধ্যে আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখেছি,এই হত্যা কোনো সাধারণ হত্যা নয় এই হত্যা পৃথিবী কে কাঁদিয়েছে।আমি রাতে ঘুমাতে পারি না,ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমাতে হয়।আমরা পুলিশে যোগদান করার পর থেকে আমারা পরিবার কে সময় দিতে পারিনা,পরিবারের কেউ মারা গেলে শেষ সময়ে যেয়ে হাজির হয়ে দাফন সম্পুর্ণ হতেই চলে আসতে হয়।বৃদ্ধ মা বাবা যখন ফোন দিয়ে বলে বাবা তোকে খুব দেখতে ইচ্ছে হচ্ছে, একটু বাড়ি আয়।তখন আমাদের হৃদয়ে কি হয় সেটা আমরা জানি।ফোনের মাধ্যমে বিভিন্ন ভাবে মা বাবাকে বুঝিয়ে সুজিয়ে, একের পর এক দিনদিতে হয়।
আজ না কাল আসবো,এই সপ্তাহে না সামনের সপ্তাহে, এই মাসে না পরের মাসে।এভাবে চলতে থাকে।সন্তান কে দিতে পারিনা একটু সময়,সন্তান কি খাচ্ছে কি করছে,সব খবর নিতে হয় ফোনের মাধ্যমে,পুলিশের জীবন।এছাড়াও আমাদের ডিউটির কোনো নির্ধারিত টাইম নাই।বেশীর ভাগই ১৬ থেকে ১৮ ঘন্টা ডিউটি করতে হয়।আপনারা চাইলে আমরা ডিউটিতে জয়েন্ট করবো ১ মিনিটের ভেতর,আমাদের ১১ দফা দাবি এই দাবি পুলিশ স্বাধীনের দাবি।আপনরা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের মতো আওয়াজ তুলুন,বলুন পুলিশ আমাদের প্রয়োজন,আমরা ১ মিনিটেই কর্মে যোগদিবো।
।এমন বক্তব্য দেওয়ায় থানা চত্বর নিস্তব্ধ হয়ে যায়।এবিষয়ে মণিরামপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক,এড.শহীদ মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন,
আবু মোছা,মণিরামপুর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের নেতা ফজলুর রহমান,অলিয়ার রহমান,ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মণিরামপুর উপজেলা শাখার সভাপতি,ইবাদুল ইসলাম (মনু)
জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নেতা মুফতি হুসাইন আহম্মেদ,
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মনিরুজ্জামান,
বাজার কমিটির সভাপতি তুলশী বসু,সাধারণ সম্পাদক মিঠু সহ ব্যবসায়ী ও সুশীল সমাজ জানায় পুলিশ ছাড়া দেশের মানুষ নিরাপদ নয়।পুলিশ ছাড়া দেশ কখনো চলবে না।পুলিশ কে কর্মে ফিরতে আহবান জানান তারা।
উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন মণিরামপুর কেশবপুর দায়িত্বপ্রাপ্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজর সাদমান।
৫ ই আগস্টের পর থেকে মণিরামপুরে সন্ত্রাসী বাহিনীর অপরাধ
এদিকে পুলিশের কর্মবিরতি পর থেকে মণিরামপুর জুড়ে শুরু হয় লুটপাট, চুরি ডাকাতি,ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ভাংচুর,আওয়ামী লীগ অনুসারী নেতাদের বসত বাড়ি ভাংচুর লুটপাট, অঙ্গি সংযোগ।
এছাড়াও মণিরামপুর মণিরামপুর দুর্গা পুর গ্রামের এতিম মানুষিক প্রতিবন্ধী বাপ্পি হত্যা,জালাল পুর পলাশ ঘোষের বাড়ি লুটপাট, ও ছেলে অপহরণ।জাতীয় দৈনিক মানবাধিকার পত্রিকার সাংবাদিক শিমুল মন্ডলের বাড়ি ভাংচুর,দুর্বডাঙ্গা ইউনিয়নের দৈনিক নোয়াপাড়া পত্রিকার প্রতিনিধি সাংবাদিক আতাউর রহমান,খানপুর ইউনিয়নের বাবর আলী মেম্বারের বাড়ি লুটপাট অঙ্গি সংযোগ করে মারপিট করে চার হাতপা ভেঙে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা।
এছাড়া বিভিন্ন গ্রাম থেকে গরু চুরি,ভ্যান চুরি বেড়েই চলেছে।একটি সঙ্ঘবদ্ধ সন্ত্রাসীরা পুলিশের কর্মবিরতির পর থেকে নিরভয়ে করছেন চুরি ডাকাতি।বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য দারা দেওয়া হচ্ছে গ্রাম পাহারা।তবও কোনো ভাবে ঠেকানো যাচ্ছে না চুরি ডাকাতি,লুটপাট ও অঙ্গি সংযোগ। এবিষয়ে মণিরামপুর উপজেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মোঃ মনিরুজ্জামান গণমাধ্যম কে জানায়,আমরা প্রথমে কোটা বাতিল দাবী, পরে আমাদের সমন্বয়ক ভাই হত্যার কারনে ১ দফা দাবি দিলে দেশ থেকে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকার পালিয়ে যায়।আমারা আন্দোলন করেছি গণতন্ত্র পুর্ব উদ্ধারের আন্দোলন। বর্তমান মণিরামপুর উপজেলা ব্যাপী যে সন্ত্রাসী বাহিনী লুটপাট করছে আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার আহবান জানায়।
এছাড়া নিজ দলীয় নেতা কর্মী কে লুটপাট, মারপিট, অঙ্গি সংযোগ থেকে ফেরাতে না পেরে বিএনপির রাজনৈতিক পদ থেকে পদত্যাগ করেছে,আসাদুজ্জামান মিন্টু, সন্তোষস্বর, রবিউল ইসলাম। কিন্তু ৫ ই আগস্ট এর পর থেকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মণিরামপুর প্রতিটি বাজারে সাধারণ মানুষ কে সাহস যুগিয়েছে।
বিশেষ করে সনাতনী ধর্মালম্বীদের যেসব ঘরবাড়ি ভাংচুর করেছে সন্ত্রাসী বাহিনী,সেই সকল বাড়িতে যেয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন তারা।তাদের মন্দির গুলা উপর যেনো সহিংসতা করতে পারে তার জন্য জামায়াতে ইসলামীর সদস্যদের পাহারা দেওয়া হয়েছে।