Thursday, January 23, 2025

পরীক্ষার আগেই প্রায় ৪৫০ জনকে প্রশ্নপত্র দিয়ে সহযোগিতা করেছেন  প্রিয়নাথ রায়

Date:

Share post:

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি:

প্রশ্নপত্র ফাঁসের নাটের গুরু সৈয়দ আবেদ আলী জীবনের দোসর ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ১১ নং মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের হিন্দু পাড়া গ্রামের প্রিয়নাথ রায়। চাকরি দেয়ার শর্তে একেকজনের সঙ্গে তিনি চুক্তি করতেন ১৮ থেকে ২০ লাখ টাকায়। পরীক্ষার আগেই প্রায় ৪৫০ জনকে প্রশ্নপত্র দিয়ে চাকরি পাইয়ে দিতে সহযোগিতা করেছেন প্রিয়নাথ।

নিজের এলাকায় তেমন সম্পদ না থাকলেও দিনাজপুর ও ঢাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তার আছে বাড়ি-গাড়িসহ অঢেল সম্পত্তির। প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের হোতা আবেদ আলী ধরা পড়েছেন। ধরা পড়েছে কয়েক দোসর। তাদের অন্যতম একজন প্রিয়নাথ রায়। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আবেদ আলী বলেছেন, প্রিয়নাথ রায় চাকরিপ্রার্থীদের তার কাছে পৌঁছে দিতেন।
চুক্তি হতো ১৮ থেকে ২০ লাখ টাকায়, অগ্রিম নেয়া হতো ২ থেকে ৫ লাখ টাকা। হতো সেই বিপুল অর্থের ভাগবাটোয়ারা। আর এসব করতেন প্রিয়নাথ রায়।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ১১ নং – মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের হিন্দু পাড়া গ্রামের রাইতু রায় ও রাজবালা দম্পতির সন্তান প্রিয়নাথ রায়। চার ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় তিনি। অভাবের সংসারে বেড়ে ওঠা প্রিয়নাথ এসএসসি পরীক্ষার সময় হারান বাবাকে। এইচএসসির পরে বন বিভাগে চাকরি নেন তিনি। ডিগ্রি পাস করে সেনাবাহিনীর অডিটর পদে যোগ দেন।

এরপর তিনি জড়িয়ে পড়েন চাকুরি প্রশ্নফাঁস চক্রের সঙ্গে। চাকরি দেয়ার নাম করে অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলেন প্রিয়নাথ। জড়িয়েছেন মামলায়ও। মামলার পর থেকে তাকে গ্রামে আসতে দেখেননি পড়শিরা। স্থানীয় বাসিন্দা জয়দেব বলেন, তারা সবাই বাইরে থাকে। এখানে ওর মা ছাড়া কেউ থাকে না। শুধু শুনেছি চাকরি দেয়ার নামে সে টাকা নিতো। পুলিশও এসেছে অনেকবার। কিন্তু সে অনেকদিন ধরে বাড়িতে আসেনি। এখন দেখছি এমন কর্মকাণ্ড। গ্রামের বাড়িতে একা থাকেন তার মা। দুই সন্তান ও স্ত্রী থাকেন দিনাজপুরের বাড়িতে। অপকর্মে ছেলের জড়িয়ে পড়ায় তার মা দায়ী করছেন পুত্রবধূকে। তবে দোষী হলেও ছেলের মুক্তি চান তিনি। প্রিয়নাথের মা রাজবালা বলেন, আমার ছেলেকে ফাঁসানো হয়েছে। তার বউয়ের পরামর্শে সে চলে। আমি আমার ছেলের মুক্তি চাই।

ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ বি এম ফিরোজ ওয়াহিদ বলেন, চাকুরি দেয়ার নাম করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে বিভিন্ন জেলায় রয়েছে প্রিয়নাথের নামে একাধিক মামলা। কিন্তু কয়েক বছর ধরে সে বাড়িতে আসে না। সম্প্রতি গত ৮ জুলাই সোমবার সরকারি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে পিএসসির ২ জন উপ-পরিচালক, ১ জন সহকারী পরিচালক সহ ১৭ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন সিআইডি পুলিশ। তাদের অন্যতম প্রিয়নাথ রায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

সম্পর্কিত নিবন্ধ

রৌমারীর জিঞ্জিরাম নদীতে ৫ কিলোমিটার জুড়ে কুচুরিপানা নৌ’ চলাচল বন্ধ

রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার জিঞ্জিরাম নদীতে কচুরিপানায় ভরে যাওয়ায় নৌকা চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।  চর বোয়ালমারী জিঞ্জিরাম নদীর...

কালীগঞ্জে হিরো উমেন স্কলারশীপ প্রদান

কালীগঞ্জ,ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে গরীব ও মেধাবী নারী শিক্ষার্থীদের  মাঝে হিরো উমেন স্কলারশীপ প্রদান করা হয়েছে। বিকশিত বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন...

পাইকগাছা পৌরসভার উন্নয়নে মাউকের ৮ দফা দাবি

পাইকগাছা প্রতিনিধি: পাইকগাছা পৌরসভার কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন নিশ্চিত করতে মানবাধিকার উন্নয়ন কেন্দ্রের (মাউক) পক্ষ থেকে ৮ দফা দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান...

আধুনিক প্রযুক্তিতে আখের সাথে সাথী ফসল শীর্ষক মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত

কালীগঞ্জ ঝিনাইদহ: কালীগঞ্জ মোবারকগঞ্জ চিনিকলের অধিনে দীর্ঘমেয়াদী ফসল আখ চাষকে লাভবান করতে ও চিনির উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে আধুনিক প্রযুক্তিতে আখের...