শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাবার পর থেকে বাড়ি এবং এলাকা ছাড়তে শুরু করেছেন সদ্য ভেঙে দেয়া দ্বাদশ সংসদের যশোরের ৬ এমপি ও দলীয় নেতাকর্মীরা।
আজ বুধবার দিনভোর (৭ আগস্ট) বিভিন্ন সূত্রে খোঁজ খবর নিয়ে এ সব তথ্য জানা গেছে। এছাড়া গত সোমবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার পরপরই অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়িঘর, অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ ঘটিয়ে তাদের পুঞ্জিভূত ক্ষোভের বহি:প্রকাশ ঘটাচ্ছেন। সকাল থেকে বিভিন্ন সূত্রে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যশোর-১ (শার্শা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিনের কোনো খোঁজ মিলছে না। বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করে তার খোঁজ পাওয়া যায়নি।তবে তার ঘনিষ্ট একজন জানান, তিনি ঘটনার দিন যশোরে ছিলেন। পর দিন সুযোগ বুঝে যশোর ছেড়েছেন। তবে বর্তমানে তিনি কোথায় সআছেন তার কোন খবর কেউ দিতে পারছে না।
যশোর থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় তার ব্যবহৃত কালো রঙের প্যারোডো গাড়িটি বিমানবন্দর এলাকার কলোনীপাড়ার খাল পাড়ে ফেলে রেখে চলে যান। তবে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের খবরে তার কাজীপাড়ার বাসায় বিক্ষুব্ধ জনতা হামলা করে ইটপাটকেল মারে।
যশোর-৪ (বাঘারপাড়া ও অভয়নগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এনামুক হক বাবুল এলাকা ছেড়ে ভিন্ন গোপন কোন স্থানে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। তার নিকটজনেরা জানান, বাবুল এই প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তার বিরুদ্ধে জনরোষ কিছুটা হলেও কম। তবে যেহেতু দেশে একটা পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সংসদ বিলুপ্ত করা হয়েছে তাই তিনি নিজের ও পরিবারের জানমালের নিরাপত্তা রক্ষায় একটু গোপনে আছেন।
যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আজিজুল ইসলাম ঢাকায় গা ঢাকা দিয়েছেন। তিনি বর্তমানে কোথায় আছেন তা তার নিকটতম কেউ জানেন না। একাধিক সূত্রের মাধ্যমে তার স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারাও তার খোঁজ জানেন না বলে জানান।
এদিকে যশোরের বহুল আলোচিত রাজনৈতিক নেতা যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি শাহীন চাকলাদার ৫ আগস্ট সন্ধ্যা পর্যন্ত যশোরে অবস্থান করছিলেন। এরপর তার হোটেল ও বাসাবাড়ি ও দলীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্ধ জনতা ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ শুরু করলে তিনি যশোর ছেড়ে পালিয়ে যান।
জেলা আওয়ামীলীগের সভঅপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, কোতয়ালী আওয়ামীলীগের সভাপতি মোহিত কুমার নাথ, সাধারণ সম্পাদক শাহারুল ইসলাম, জেলা আওয়ামীলীগের নেতা সাবেক পৌর মেয়র জহিরুল চাকলাদার রেন্টু, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরী,শহর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহামুদ হাসান বিপু, পৌর কমিশনার হাজী সুমন, হিটার নয়ন, ডিম রিপন, স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা আসাদুজ্জামান মিঠু, সাধারণ সম্পাদক নিয়ামত উল্লাহসহ যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলালীগ, যুব মহিলা লীগ, শহর ছাত্রলীগসহ উল্লেখযোগ্য কোন নেতাই নেই শহরে। এমনকি তারা কেউ নিজ নিজ বাসাবাড়িওে নেই।
দলীয় অফিস খা খা করছে। বিক্সুব্ধ জনতার রোষানলে পড়ার ভয়ে দলের মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের বিপদের মুখে ফেলে এভাবে দলের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সব নেতাদের গা ঢাকা দেওয়াকে কর্মী সমর্থকরা বলছেন বেঈমানী। এতোদিন যে সব নেতার নির্দেশে কর্মী সমর্থকরা অকাম কুকাম করেছেন এখন তাদেরকে বিপদের মুখে ফেলে সে সব নেতাদের পালিয়ে যাওয়াকে কাপুরুষকতা বলছেন মাঠের কর্মী সমর্থকরা।