রতন শর্মা, দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি সাবেক সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল বলেছেন, নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর জীবন মান উন্নয়নে কাঙ্খিত সাফল্য এখনও অর্জিত হয়নি। তাদের জীবনমানের উন্নয়নের জন্য অনেক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান প্রচেস্টা চালালেও দেখা গেছে, ব্যক্তিদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি।
রোববার (৩০ জুন ২০২৪) ঐতিহাসিক সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবস উপলক্ষ্যে কাহারোল উপজেলার কান্তনগর মোড়ে অবস্থিত তেভাগা চত্বরে সিদু-কানুর ভাস্কর্যে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন শেষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মনোরঞ্জন শীল গোপাল আরও বলেন, ইতিহাস থেকে জানা যায়, আজ থেকে ১৬৮ বছর আগে ১৮৫৫ সালের ৩০ জুন সাঁওতাল সম্প্রদায়ের চার ভাই সিদু-কানুহু-চান্দ ও ভাইরবের নেতৃত্বে আদিবাসীরা ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ ঘোষনা করেছিল। ওই যুদ্ধের উদ্দেশ্য ছিল ব্রিটিশ সৈন্য ও তাদের দোসর অসৎ ব্যবসায়ী, মুনাফাখোর ও মহাজনদের অত্যাচার, নিপীড়ন ও নির্যাতনের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করা এবং একটি স্বাধীন সার্বভৌম সাঁওতাল রাজ্য প্রতিষ্ঠা করা।
তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে আদিবাসীরা অগ্রনী ভুমিকা পালন করেছেন। স্বাধীনতা সংগ্রামে আদিবাসীরা কোন নগদপ্রাপ্তির কাছে নিজেদের বিকিয়ে দেননি। আদিবাসীদের হৃদয়ের সংগ্রামী বীরত্বের চেতনা ধারণ করেছে সিঁধু-কানুর বিপ্লবী সত্বা। নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর কেউ রাজাকারী করেছে এমন কোন ইতিহাস নেই। বরং প্রত্যেকেই মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে রণাঙ্গনের সাহসী ভূমিকা পালন করেছেন। পর্যাক্রমে তাদের রক্ত সকল আন্দোলনকে সমৃদ্ধ করেছিল। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন হতে শুরু করে পাকিস্থান হটাও আন্দোলন পর্যন্ত আদিবাসীরা এই সংগ্রামকে পূর্ণাঙ্গতা প্রদান করেছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর ভূমিকা জাতির কাছে অবশ্যই চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে। যুুগে যুগে আদিবাসীদের আত্মত্যাগ আমাদের প্রেরণা যোগায়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন কাহারোল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল লতিফ, ডায়াবেটিস চিকিৎসক ডিসি রায়, কাহারোল উপজেলা আদিবাসী সমাজ উন্নয়ন সমিতির সাধারণ সম্পাদক রবীন মার্ডি, সাবেক চেয়ারম্যান নাসিরুল ইসলাম, সাবেক ইউপি সদস্য মোখলেছুর রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা আমিনুল ইসলাম, ইউপি সদস্য মো. আজিজুল ইসলাম।