স্টাফ রিপোর্টার,রংপুর:
রংপুরের মিঠাপুকুরে ১৪ দিনের নবজাতক সন্তানকে নিয়ে লাঞ্চনা ধিক্কার তিরস্কারসহ নানা অবহেলা ও শংকায় দিন কাটাচ্ছেন এক কুমারী মাতা। জুটছে না তার ভাগ্যে ঠিকমত খাবার। পাচ্ছেন না জীবন কাটানোর মতো অতি প্রয়োজনীয় সাধারণ জিনিসপত্র। বর্তমানে অনাহারে অর্ধাহারে নবজাতক শিশুকে নিয়ে কোনো রকমে কাটছে তার দিন। মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫দিনের সরকারি ব্যবস্থার প্রসুতিকালীন সেবা-চিকিৎসার পর লাজ-লজ্জার মাথা খেয়ে দিন মজুর বাবার কুড়ে ঘরেই ফিরে গেছেন। ভুক্তভোগীর অভিভাবক সূত্রে জানা যায়, রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বৈরাতী ডিগ্রি মহাবিদ্যালয়ের এইচএসসি ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী। কলেজে লেখাপড়ার ফাঁকে মনের অজান্তে কলেজের পার্শ্ববর্তী পুটিমারী গ্রামের মোতালেব মিয়ার ছেলে অনার্স পড়ুয়া সৈকত আলীর প্রেমে পড়েন। পরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার মিলিত হন দুজনের। এরই মধ্যে গর্ভবতী হয়ে পরেন ওই শিক্ষার্থী। বিষয়টি সৈকতকে জানালে, তারা টালবাহনা শুরু করে দেয়। বিয়ের দাবিতে ধরনা দিতে দিতেই গত ২০ সেপ্টেম্বর মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তার কোলজুড়ে আসে নিষ্পাপ ফুটফুটে এক ছেলে সন্তান। সন্তানের নাম রাখা হয়েছে নয়ন বাবু। ভুক্তভোগী অভিযোগ করে বলেন, অবুঝ মনের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন প্রেমিকরুপী সৈকত। তাকে বিয়ের প্রলোভনে জোরপুর্বক ধর্ষণ করেছেন। তিনি বারবার ছুটে গেছেন সৈকত ও তার পরিবারের কাছে। সৈকতের পরিবারের লোকজনও তার সঙ্গে প্রতারণা করে চালাকির আশ্রয় নিয়েছেন। তারা তাকে বুঝিয়েছিলেন গর্ভে সন্তান থাকা অবস্থায় বিবাহ জায়েজ নয়। সন্তান প্রসব হওয়ার পর তাকে বউ করে ঘরে নিবেন, কিন্তু এখন তারা এ সন্তানকে অস্বীকার করছেন। এদিকে এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ইতোমধ্যে প্রভাবশালী সৈকতের পরিবার সৈকতকে বিবাহ দিয়ে আত্মগোপন করে রেখেছেন। তারা সৈকতকে বিদেশে পাঠানোর পায়তারাও চালাচ্ছেন বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে অভিযুক্ত সৈকতের বাবা মোতালেব মিয়ার বলেন, এখন করার কিছু নাই। আমার ছেলেকে অন্য মেয়েকে দিয়ে বিয়ে দিয়েছি। অন্য কোনো উপায়ে সমাধান করা গেলে ভালো। সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেন, এলাকার মানুষের বিচার করি আমরা। আমাদের বিচার কে করবে? ওই মেয়ে মামলা করলে, আমরা মামলা মোকাবিলা করব। বালারহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হাসনাত রতন বলেন, মেয়েটির সঙ্গে যে ঘটনা ঘটেছে, তা সত্যিই দুঃখজনক। মেয়ের দাবি এবং অভিযোগ সত্য হলে দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার। আমি আপনার মাধ্যমে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজার রহমান বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। আজকে মামলা রেকর্ড হবে। এরমধ্যে কয়েকবার অভিযুক্তকে ধরার জন্য অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে কোনো ছাড় পাওয়ার সুযোগ নেই।