সাজ্জাদ তুহিন, নড়াইল প্রতিনিধি:
নড়াইল সদর উপজেলার ১১নং বাঁশগ্রাম ইউনিয়নের দারিয়াপুর এতিমখানর উত্তরপাড়ার মৃত নবির হোসেনের ছেলে কামরুলের বাড়ির সামনের ইটের রাস্তার পরে থাকা সরকারি গাছ কেটে বিক্রি করার অভিযোগ পাওয়া গিয়াছে একই গ্রামের আবুবকর সরদার এর ছেলে হামিন সরদার (৪০) এর বিরুদ্ধে।
১৪ মে (রবিবার) সকালে গোপন সংবাদের সূত্রে সরেজমিনে ১১নং বাঁশগ্রাম ইউনিয়নের দারিয়াপুর উত্তরপাড়া অভিমুখের কামরুলের বাড়ির সামনে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার অংশে জুড়ে থাকা প্রায় ৫০ হাজার টাকার মুল্যের একটি রেন্টি গাছ চেয়ারম্যান রফিকুল ফকিরের নেত্রীত্বে একই গ্রামের আবুবকর সরদারের ছেলে হামিন সরদার সহ এলাকার চিহ্নিত কতিপয় কিছু লোক গাছ কেটে নিচ্ছে।
এবং বিসয়টা তাৎক্ষণিক নড়াইল সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সেলিম আহাম্মেদ কে অবহিত করলে তিনি আমাদের জানান, সরকারি জায়গা থেকে গাছ কাটার কোন অনুমতি কাউকেই দেয়া হয় নি। চেয়ারম্যান রফিকুল ফকির ও তার ক্যাডার বাহিনীর প্রধান হামিন গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছেন জেনে তিনি তাতক্ষনিকভাবে অই জায়গায় সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা নায়েব তিলক ও অফিস সরকারি আকবর কে পাঠিয়ে গাছ কাটা বন্ধ করেন।
এট আগে হামিন সরদারের কাছে গাছ কাটার বিসয়ে জানতে চাইলে প্রথমে জানিনা বল্লেও পরে তিনি বলেন, এটা আমাদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রফিকুল ফকির আমাকে কাটতে বলেছে। তিনি আরও বলেন চেয়ারম্যান রফিকুল ফকির আমাকে জানিয়েছে তিনি নাকি সরকারি নিয়ম অনুযায়ী জেলা বনবিভাগ অফিস কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ এর সাথে কথা বলে কাগজপত্রের অনুমতি নিয়ে এসেছেন। তবে হামিনের কাছে কাগজপত্র দেখতে চাইলে তিনি কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি।
গাছ কাটার বিসয়ে বনবিভাগের কর্মকর্তা আব্দুর রশিদের কাছে মুঠো ফোনে জানানো হলে তিনি দ্রুত গাছ কাটার ঘটনা স্থলে আসেন এবং অভিযোগের সত্যতা পান। এবং তিনি সাংবাদিক দের বলেন, আমি গাছ কাটার বিসয়ে কিছুই জানিনা। সরকারি গাছ কাটার বিসয়ে কতৃপক্ষের কোন অনুমতি রফিকুল চেয়ারম্যান বা তার ক্যাডার বাহিনীর প্রধান হামিনও কারো অনুমতির কাগজপত্র আমাদের দেখাতে পারেনি। তাই চেয়ারম্যান রফিকুল ফকির ও তার ক্যাডার হামিনকে গাছ কাটা বন্ধ করতে বলেছি।
এবিসয়ে স্থানীয় বাসিন্দা কামরুল হোসেন বলেন, আমার ঘরের উপরে গাছের একটি ডাল থাকায় ঝুকির কথা ভেবে রফিকুল চেয়ারম্যান কে বলেছি। তিনি কোন সরকারি অনুমতি নিয়েছেন কি না জানিনা। পরে গাছ কাটা লেবারদের কাছে জনতে চাইলে তারা বলেন, আমরা এবিসয়ে কিছু জানিনা, আমাদের হামিন সরদার গাছ কাটতে জোন হিসাবে ভাড়া নিয়েছে।
চেয়ারম্যান রফিকুল ফকিরের কাছে গাছ কাঁটার বিসয়ে জানতে চাইলে তিনিও একটি মনগড়া বক্তব্যে দিয়ে সাংবাদিক দের বলেন, এটা তৎকালীন কেআর এর অধিনে সমিতির মাধ্যমে গাছের পরিচর্যা থেকে শুরু করে বেচা-কেনা পর্যন্ত সমিতির কমিটির সদস্যরা করে থাকে।যার লভ্যাংশ তিনটি ভাগে ভাগ পড়া হয়। সরকারি কোন গাছ কতৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কেটে বিক্রি করা যায় কি-না জানতে চাইলে তিনি প্রথমে কাগজপত্রের অনুমতি নেওয়া আছে বল্লেও পরে কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেননি।
কেয়ার প্রকল্পের সমিতির কিছু সদস্য দের কাছে গাছ কাটার বিসয়ে জানতে চাইল তারা বলেন, আমরা সমিতি সদস্য থাকলেও এবিসয়ে চেয়ারম্যান রফিকুল ফকির আমাদের কিছু বলেন নি। সমিতির সদস্যরা আরও বলেন, এই রফিকুল ফকির চেয়ারম্যানের দায়িত্বভার গ্রহন করার পর থেকে তার কিছু নিজস্ব গুন্ডা বাহিনী দিয়ে বিভিন্ন সময়ে এর আগেও কয়েক লক্ষ টাকার গাছ বিক্রি করেছেন। যার কোন বিচার হয়নি।
আর এ কারনেই তিনি বার-বার এলাকার বিভিন্ন রাস্তার পাশের সরকারি গাছ কেটে চুরি করে বিক্রি করে ফেলছেন। স্থানীয় এলাকাবাসির দাবি চেয়ারম্যান রফিকুল ফকির ও তার নিজস্ব গুন্ডা বাহিনীর বিরুদ্ধে আইনানুক ব্যবস্থা গ্রহণ করে সরকারি সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ ও তার সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করণ।