স্টাফ রিপোর্টারঃ
নড়াইলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়েছে। অদ্য ১৭ আগস্ট বিকালে নড়াইল জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার মহোদয়ের সভাপতিত্বে পুলিশ লাইনস্ ড্রিলশেডে আলোচনা সভা ও প্রামাণ্যচিত্র "চিরঞ্জীব বঙ্গবন্ধু" প্রদর্শন করা হয়।পুলিশ সুপার জনাব মোসাঃ সাদিরা খাতুন বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীনতার মহান স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একজন মহাকাব্যের মহাকবি। কৈশোরে তার দুরন্তপনা সকলকে মুগ্ধ করেছিল। তিনি তার জীবনের সোনালী সময় কারাগারে কাটিয়েছেন। তিনি আমাদের একটি মানচিত্র, স্বাধীন দেশ, সুসংগঠিত সংবিধান উপহার দিয়েছেন। ক্ষণজন্মা এই মহাপুরুষের প্রতিটি কাজই বিশ্বের জন্য অনুকরণীয় ও অনুসরণীয়। বঙ্গবন্ধুর আহবানে দেশ রক্ষায় যারা মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল, তারা এ দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান, তারাই স্বাধীনতার ধারক ও বাহক। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের অগ্রজদের অবদানে আজ আমরা গর্বিত। তারা বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে দেশমাতৃকাকে ভালোবেসে তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। বাংলাদেশ পুলিশ সদস্যরা দেশাত্মবোধ থেকে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম বুলেট ছুঁড়েছে। পুলিশ প্রথম যে বুলেট ছুঁড়েছে সেই বুলেটের শব্দ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু মৃত্যুঞ্জয়ী, চিরঞ্জীব। ঘাতকের একটি বুলেট তাকে নিঃশেষ করে দিতে পারে না। তার কায়িক মৃত্যু হলেও তিনি আরো উজ্জ্বল হয়ে আমাদের হৃদয়ে অমর হয়ে রয়েছেন ও থাকবেন। তিনি বাংলাদেশের মানুষকে অত্যন্ত ভালোবাসতেন। বিশ্বনন্দিত এই নেতা দেশের মানুষকে অর্থনৈতিক ও সামাজিক মুক্তি দেওয়ার জন্য এক দেশ থেকে অন্য দেশে ঘুরে বেড়িয়েছেন। বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম মানে স্বাধিকার আন্দোলনের সোনালি ইতিহাস। স্বাধীনতার চেতনায় আমাদের উজ্জীবিত হওয়া প্রয়োজন। এখনো যারা দেশকে অশান্ত করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এক সময় বাংলাদেশ বিশ্বে নেতৃত্ব দিবে। ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়ন, ডিজিটাল ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য আইনশৃঙ্খলার স্থিতিশীলতা বজায় রেখে চলেছে বাংলাদেশ পুলিশ। এ সময় পুলিশ সুপার মহোদয় বঙ্গবন্ধুর স্মরণে তার 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী' বই অত্র জেলায় বাস্তব প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপার জনাব দেবব্রত সরকারকে উপহারস্বরূপ প্রদান করেন।
উক্ত আলোচনা সভায় বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব অপর্না রানী বিশ্বাস বলেন, নারী হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে আজ যে সম্মান পাচ্ছি তার জন্য তিনি বর্তমান সরকারের প্রতি চির কৃতজ্ঞ। সভায় বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব এস বি এম সাইফুর রহমান হিলু বলেন, ১৯৭১ সালে ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর বজ্রকন্ঠ ভাষণের সময় তিনি ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে উপস্থিত ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ঐ ভাষণ শুনে তিনি উজ্জ্বীবিত হয়ে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব শরীফ হুমায়ন কবির বলেন, বঙ্গবন্ধু একজন অবিসংবাদিত ও আপোষহীন নেতা ছিলেন। তিনি সমগ্র জীবন নিঃস্বার্থভাবে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করেছেন।
এ সময় ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ, জাতীয় চার নেতা এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট শাহাদত বরণকারী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারবর্গের বিদেহী আত্মার শান্তি ও মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় জনাব তারেক আল মেহেদী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(ক্রাইম এন্ড অপস্), জনাব দেবব্রত সরকার, সহকারী পুলিশ সুপার(প্রবেশনার) এবং বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।